সিরাজগঞ্জের শাজদপুরে দুই গ্রামের সংঘর্ষে নজরুল ইসলাম (৪৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। এঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১০ জন।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকালে উপজেলার রূপবাটি ইউনিয়নের বাগধোনাইল গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত নজরুল ইসলাম ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
ঘটনাস্থল থেকে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দুই গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
ঢাকা/অদিত্য/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
২৫ পুরুষকে বিয়ের নামে প্রতারণা, যেভাবে পুলিশের ফাঁদে ধরা পড়েন এই নারী
অনুরাধা পাসওয়ান। যিনি ‘ডাকাত কনে’ নামে পরিচিত। ২৫ জনের সঙ্গে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রতারণার মাধ্যমে তাঁদের কাছ থেকে লাখ লাখ রুপির গয়না ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।
প্রতিবার নতুন নাম, নতুন শহর ও নতুন পরিচয় নিয়ে পুরুষদের ভুয়া বিয়ের ফাঁদে ফেলতেন এই তরুণী। তিনি একজন আদর্শ স্ত্রী ও পুত্রবধূর অভিনয় করতেন। তারপর সুযোগ বুঝে গয়না ও টাকা নিয়ে সটকে পড়তেন।
শেষমেশ সাওয়াই মাধোপুর পুলিশের কৌশলের ফাঁদে ধরা পড়েন অনুরাধা। পুলিশ তাঁর সঙ্গে একটি ভুয়া বিয়ের নাটক সাজায়। সেই সূত্রেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পাশের বাড়ির সুন্দরী গরিব কনে
অনুরাধা একা। গরিব ও অসহায়। তাঁর এক বেকার ভাই আছে। তিনি বিয়ে করতে চান, কিন্তু অর্থসংকটের কারণে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারেন না। ৩২ বছর বয়সী এই তরুণী নিজেকে এভাবে পাশের বাড়ির সুন্দরী গরিব কনে হিসেবে উপস্থাপন করেন।
কিন্তু বাস্তবে অনুরাধা একটি ভুয়া বিয়ে চক্রের প্রধান। যিনি প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের বিশ্বাস ও অর্থ হাতিয়ে নেন। এই চক্রের সদস্যরা তাঁর ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত হবু বরদের কাছে নিয়ে যান। তাঁদের কাছে অনুরাধাকে আদর্শ জীবনসঙ্গিনী হিসেবে তুলে ধরেন। ঘটক পরিচয়ে এই চক্রের একজন সদস্য প্রতিটি বিয়ের জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন।
বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা পাকাপাকি হওয়ার পর একটি সম্মতিপত্র তৈরি করা হয়। সে অনুযায়ী হবু দম্পতি মন্দিরে বা বাড়িতে রীতিনীতি মেনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। আর সেখানেই শুরু হয় নাটক।
অনুরাধা পাসওয়ান বর ও শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সামনে সহজ-সরল ও মায়াবতী কনের অভিনয় শুরু করেন। পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে তাঁদের আস্থা অর্জন করেন।
আস্থা গড়ে তোলার কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন অনুরাধা। এ সময় খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে, গয়না, নগদ অর্থ ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যান।
বিষ্ণু শর্মা এমনই একজন। যে ২৫ জন পুরুষ প্রতারিত হয়েছেন, তাঁর একজন বিষ্ণু বিয়ের জন্য ঋণ করেছিলেন।
গত ২০ এপ্রিল রাজস্থানের সাওয়াই মাধোপুর জেলার বাসিন্দা বিষ্ণু শর্মা বিয়ে করেন মধ্যপ্রদেশের অনুরাধা পাসওয়ানকে। হিন্দু রীতিনীতি মেনে বন্ধু ও পরিবারের উপস্থিতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন কথিত ঘটক পাপ্পু মীনা। বিষ্ণু তাঁকে বিয়ের জন্য দুই লাখ রুপিও দিয়েছিলেন।
কিন্তু বিয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যেই অনুরাধা পাসওয়ান বরের বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। সঙ্গে নিয়ে যান সোয়া লাখ রুপির গয়না, নগদ ৩০ হাজার রুপি এবং ৩০ হাজার রুপির একটি মুঠোফোন।
বিষ্ণু শর্মা বলেন, ‘আমি ফেরি করে পণ্য বিক্রি করে জীবিকা চালাই। ঋণ নিয়ে বিয়ে করেছি। এমনকি মুঠোফোনটাও ধার করে এনেছিলাম, সেটাও সে নিয়ে গেছে। কখনো ভাবিনি, সে আমাকে এভাবে ঠকাবে।’
অনুরাধা যেদিন পালিয়ে যান, সেই রাতের কথা স্মরণ করে শর্মা বলেন, সেই রাতে তিনি কাজ থেকে দেরিতে ফিরেছিলেন। এরপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ‘আমি সাধারণত বেশি ঘুমাই না, কিন্তু সেদিন শিশুর মতো গভীর ঘুমে ছিলাম, যেন কেউ আমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিয়েছিল,’ বলেন তিনি।
বিষ্ণু শর্মার মা এই ঘটনার পর তীব্র মানসিক আঘাত পেয়েছেন। এরপর শর্মার পরিবার থানায় একটি অভিযোগ করে।
রাজস্থান পুলিশের ‘পাল্টা চাল’
বিষ্ণু শর্মার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাওয়াই মাধোপুর পুলিশ অনুরাধা পাসওয়ানের জন্য একটি ফাঁদ তৈরি করে। পুলিশের একজন কনস্টেবলকে বর সাজানো হয়। তিনি একজন ‘কাস্টমার’ হিসেবে চক্রের দালালের কাছে যান। দালাল তাঁকে বিভিন্ন নারীর ছবি দেখান।
পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্তে দেখা যায়, সব নথি ও বিয়ের চুক্তিপত্র জাল ছিল। আমাদের দল থেকে একজন কনস্টেবলকে বর সাজিয়ে ওই নারীকে বিয়ের ফাঁদে ফেলা হয়।’
এরপর অনুরাধা পাসওয়ানকে ভোপাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।