যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিনা মূল্যে তিন মাসের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কোর্সের তৃতীয় ব্যাচের জন্য দেশের ৪৮টি জেলার কর্মপ্রত্যাশী যুব নারী–পুরুষের অনলাইনে আবেদন দাখিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে ভর্তি হতে কোনো ফি লাগবে না। দিনে ২০০ টাকা করে ভাতা মিলবে। প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করছে ই-লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং লিমিটেড প্রতিষ্ঠান।

প্রশিক্ষণের বিস্তারিত

প্রশিক্ষণের মেয়াদ তিন মাস। ১ জুলাই শুরু হয়ে শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বর। সপ্তাহে ৬ দিন ক্লাস হবে। প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা করে ক্লাস করতে হবে। মোট ৭৫টি ক্লাসের জন্য সময় লাগবে ৬০০ ঘণ্টা। কোর্সটি সম্পূর্ণ অফলাইন বা সরাসরি ক্লাসের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।

আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে আয়ের সুযোগ১৪ মার্চ ২০২৫যোগ্যতা যা লাগবে

আবেদনকারীকে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। অনলাইনে লিংকে আবেদন করা যাবে।

যেসব সুবিধা মিলবে

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য কোনো ফি দিতে হবে না। প্রশিক্ষণার্থীরা প্রতিদিন ২০০ টাকা যাতায়াত ভাতা পাবেন। সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার ও বিকেলের নাশতা দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণ প্রশিক্ষণার্থীদের সনদপত্র দেওয়া হবে।

যেসব জেলা থেকে আবেদন

জেলাগুলো হলো ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর। ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জামালপুর, নেত্রকোনা। চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ। খুলনা বিভাগের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া। রংপুর বিভাগের রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়। বরিশাল বিভাগের বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা। সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার।

আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণে ৪৮ জেলার প্রার্থীদের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা, এসএমএসে বিস্তারিত জানবেন আবেদনকারীরা২৫ ডিসেম্বর ২০২৪প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য

সফলভাবে আবেদন দাখিলের পর অনলাইনে পরীক্ষার প্রবেশপত্র বা অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। পরীক্ষার সময় সব পরীক্ষার্থীদের আবেদনের সময় পাওয়া অ্যাডমিট কার্ড বা প্রবেশপত্র সঙ্গে আনতে হবে। নির্ধারিত তারিখ ও সময়ের পর আবেদনের লিংক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং আবেদন করার কোনো সুযোগ থাকবে না। প্রশিক্ষণার্থীদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রশিক্ষণার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে।

ভর্তির বিস্তারিত তথ্য

অনলাইনে আবেদনের শেষ তারিখ ১২ জুন রাত ১১টা ৫৯ মিনিট। লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৭ জুন। লিখিত পরীক্ষার স্থান ও সময় এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৯ জুন। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা ২৩ জুন প্রকাশ করা হবে।

বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে

আরও পড়ুনএবার ৪৮ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেবে সরকার, দৈনিক ২০০ টাকা ভাতার সঙ্গে নানা সুযোগ১২ ডিসেম্বর ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার

২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।

মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।

ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।

স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত‌্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।

শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’

তার জন‌্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম‌্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”

"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন‌্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।

প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ