যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষায় ইন্টার্নশিপের সুযোগ কেমন
Published: 30th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য। শিক্ষার মান, ইংরেজিভাষী দেশ, ফান্ডিং সুবিধা ও জীবনযাত্রার মান এর অন্যতম কারণ। তাই প্রতিবছর দেশটিতে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশটিতে যাঁরা পড়াশোনা করতে চান, বা যাঁরা পড়তে যাচ্ছেন তাঁদের অনেকেরই প্রশ্ন থাকে ‘দেশটিতে ইন্টার্নশিপের সুযোগ আসলে কেমন’, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করার সময় কি ইন্টার্নশিপ প্রয়োজন’, প্রয়োজন হলে কীভাবে খুঁজে পাব? পড়াশোনার ফাঁকে ইন্টার্নশিপ নিজেদের শিক্ষাগত এবং পেশাদার যাত্রার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ইন্টার্নশিপ কেবল শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তাই প্রদান করে না বরং শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা অর্জন এবং পেশাদার সংযোগ তৈরিতেও সহায়তা করে। কিছু কিছু প্রোগ্রামে, ইন্টার্নশিপ পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে বাধ্যতামূলক, যা শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত সুযোগগুলো কীভাবে খুঁজতে হয়, তা বুঝতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়ার ডেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০০ বৃত্তি, নগদ ডলারের সঙ্গে বিমানভাড়াসহ নানা সুবিধা২২ মে ২০২৪ইন্টার্নশিপ কেন গুরুত্বপূর্ণ—যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপগুলোর একাধিক উদ্দেশ্য থাকে। কিছু একাডেমিক প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন নিশ্চিতে বাধ্যতামূলক হিসেবেও প্রয়োজন হয় ইন্টার্নশিপের। ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামগুলো নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ তৈরি করে, যা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং অভিজ্ঞ পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে নানান শেখার সুযোগ তৈরি হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, ইন্টার্নশিপ পূর্ণ সময়ের চাকরির দিকে যাওয়ার পথ তৈরি করে।
প্রথম আলো ফাইল ছবি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন