বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল সাগর, কক্সবাজারে বিপাকে পর্যটন ব্যবসায়ীরা
Published: 30th, May 2025 GMT
বৈরী আবহাওয়ার পরও বৃহস্পতিবার সকালে সৈকতের লাবনী পয়েন্টের বালিয়াড়িতে ঘোড়া নিয়ে এসেছেন রেজাউল করিম ও আল আমিন। দুই জনের চোখে মুখেই হতাশা। রেজাউল করিম বলেন, প্রতিদিন সকাল ৮টায় সৈকতে ঘোড়া নিয়ে আসি। সারাদিন ঘোড়ার পিঠে পর্যটকদের উঠিয়ে ছবি তোলা কিংবা চড়ায়। তার বিনিময়ে দৈনিক এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এসেছি, কিছু পর্যটকও আছে। কিন্তু কেউ ঘোড়াতে চড়েনি বৈরী আবহাওয়ার কারণে। কোনো আয় রোজগারও হয়নি। কীভাবে খালি হাতে ঘরে যাব বুঝতে পারছি না।
ঘোড়াওয়ালাদের পাশেই অবস্থান করছে বিচবাইক চালক নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, এক টাকাও আয় হয়নি আজকে। যেহেতু সাগরের জোয়ার বৃদ্ধি পেয়েছে তাই বিচ বাইক চালানো যাচ্ছে না। এখনও শূন্য হাতে বসে আছি।
সাগরের পাড়ের সুগন্ধা পয়েন্টের উত্তর দিকে একটু হাঁটতেই দেখা হয় ঝাল মুড়ি বিক্রেতা মো.
সবার মতো একই অবস্থা জেড স্কি, ফটোগ্রাফার, চটপটি, কিংবা শামুক-ঝিনুক বিক্রেতাদের। লাবনী পয়েন্টের ফটোগ্রাফার মো. গফুর বলেন, অন্যান্য দিন দুপুর পর্যন্ত সৈকতে পর্যটকদের ছবি তুলে এক হাজার টাকা আয় হতো। সেখানে আজকে ছবি তোলা শুরুই করতে পারিনি। আমার মতো এই পয়েন্টে অন্তত ২৫ জন ফটোগ্রাফারের একই অবস্থা।
সাগরের পানি থেকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে জেড স্কি। এই জেড স্কি চালক আবু রায়হান বলেন, সাগরে বিশাল বিশাল ঢেউ। যার কারণে জেড স্কি উপকূলে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যবসা এক প্রকার বন্ধ। কিটকট ব্যবসায়ী কায়েস বলেন, লাবনী থেকে সুগন্ধা ও শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত কয়েকশ কিটকট (চেয়ার-ছাতা) বালুচর থেকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। এখন ব্যবসা বন্ধ করে নিরাপদে বসে আছি।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় বন্ধ রয়েছে শামুক-ঝিনুকের দোকানগুলো। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঝড়ো বৃষ্টির সঙ্গে প্রচণ্ড বাতাস বয়ে যাচ্ছে। যার কারণে দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে।
জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল। বয়ে যাচ্ছে ঝড় বৃষ্টি ও প্রচণ্ড বাতাস। নেই কাঙ্ক্ষিত পর্যটক। যার কারণে একপ্রকার বন্ধ সৈকত পাড়ের ব্যবসা। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
পাশাপাশি টানা বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। লোকজন কাজে বের হতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েন। অন্যদিকে সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সতর্ক করে লাল পতাকা উঁচিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসনের বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন জানান, উত্তাল সাগরে গোসল থেকে বিরত থাকতে মাইকিং করে পর্যটকদের সতর্ক করা হচ্ছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী দুই দিন আবহাওয়া পরিস্থিতি এমন থাকতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
সৈকতে নারী পর্যটকদের গোসলের ভিডিও ধারণ, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের কারাদণ্ড
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসলরত নারী পর্যটকদের ভিডিও ধারণ করার দায়ে রুবেল (৩০) নামে এক কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসিন সাদীক। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রুবেল বরগুনা সদর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি মুদি দোকানের ব্যবসার পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করেন।
সৈকতের ফটোগ্রাফার আরিফ মিয়া বলেন, ‘‘রুবেল নারীদের গোসলের ভিডিও করছিলেন। প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। বিষয়টি দেখত পেয়ে তাকে আটক করি।’’
অপর ফটোগ্রাফার রাসেল বলেন, “রুবেলের মোবাইল চেক করে দেখি, অনেক ভিডিও। সঙ্গে সঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশকে খবর দেই। পরে তাদের কাছে সোপর্দ করি।’’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসিন সাদেক বলেন, “অনুমতি ছাড়া নারী পর্যটকদের ভিডিও ধারণের দায়ে রুবেলকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’’
ঢাকা/ইমরান/রাজীব