ঢাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পৃথক ঘটনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুজন মারা গেছেন। বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে বিদ্যুতের লাইনের লিকেজ থেকে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁরা মারা যান।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন আল আমিন (৩৫) ও মো. আয়নাল (৩০)। আল আমিন পেশায় দরজি ও আয়নাল রিকশাচালক।

দরজি আল আমিনকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর সহকর্মী বাবুল রেজা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আল আমিন গুলিস্তান–সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট এলাকার প্রিমিয়াম মার্কেটে দরজির কাজ করতেন। গতকাল রাত ১১টার দিকে মার্কেটের গলিতে মালেক শাহ মাজারের গেটের সামনে দোকানে চা পান করতে যাচ্ছিলেন। এ সময় বৃষ্টি হচ্ছিল ও গলিতে পানি জমে ছিল। সেখানে পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারের লিকেজ থেকে আল আমিন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক আল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

গতকাল রাতে ডেমরা বড় ভাঙ্গা এলাকায় রিকশা গ্যারেজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন রিকশাচালক আয়নাল। দিবাগত রাত দুইটার দিকে আয়নালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আয়নালের খালাতো ভাই হাবিবুর রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেন, আয়নাল বড় ভাঙ্গা এলাকায় রিকশা গ্যারেজে রিকশায় বসে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। এ সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। একপর্যায়ে গ্যারেজ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। তখন আয়নাল হঠাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ার পর তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো.

ফারুক আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, লাশ দুটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।

পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।

পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।

ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ