তিন দফা দাবি না মানলে ২৩ জুন থেকে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি প্রাথমিকের শিক্ষকদের
Published: 31st, May 2025 GMT
আগামী ২২ জুন মহাসমাবেশে তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে ২৩ জুন থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী। আজ শনিবার দুপুরে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত ন্যায্য অধিকার আদায়সহ তিন দফা দাবিতে খুলনা বিভাগীয় শিক্ষক সমিতি এই সমাবেশের আয়োজন করে।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবির মধ্যে আছে, জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষকদের বিগত সরকারের সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন করে টাইম স্কেল–সংক্রান্ত অবৈধ চিঠি প্রত্যাহার, ৫০ শতাংশ অর্থাৎ কার্যকর চাকরির সময়সীমার ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতা দেওয়া ও বাদ পড়া প্রধান শিক্ষকদের গেজেট প্রকাশ।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিগত সরকারের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ২০২০ সালের ১২ আগস্ট যে টাইম স্কেল–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, তা ছিল অবৈধ ও বিভ্রান্তিকর। এই চিঠি প্রত্যাহার করে যথাযথ জ্যেষ্ঠতা দেওয়া ও বঞ্চিত প্রধান শিক্ষকের শিক্ষক গেজেট প্রকাশ করাই এই আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য।
আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এ–সংক্রান্ত মামলা করে রায় আমাদের পক্ষে পেয়েছি। কিন্তু বিগত সরকারের পক্ষ থেকে আপিল করা হয়। আপিল চলমান। বারবার আবেদন করে স্মারকলিপি দিয়ে দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও সমস্যাগুলোর সমাধান পাচ্ছি না। তাই বাধ্য হয়েই আমরা ২২ জুন ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছি। সারা দেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষক অংশগ্রহণ করবেন। শিক্ষকদের সম্মান ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত না হলে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নও সম্ভব নয়। আপনারা ঢাকায় যাওয়ার সময় প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন। আমাদের দাবি না মানলে সমাবেশের পরদিন ২৩ জুন থেকে আমরণ অনশনে যাবেন শিক্ষকেরা।’
সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, কোষাধ্যক্ষ আজমল হোসেন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আশরাফ আলী, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক হামিদুল ইসলাম ও যশোর জেলা কমিটির সমন্বয়ক বি এম কিয়াম উদ্দীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ন ল ইসল ম শ ক ষকদ র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।
তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।
আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।
অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।
আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’
আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগেযতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।