বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) সাম্প্রতিক রদবদলের মধ্য দিয়ে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)-এর মনোনয়নে তিনি বোর্ড পরিচালকের পদ পান এবং পরে পরিচালকদের ভোটে নির্বাচিত হন বিসিবির সর্বোচ্চ পদে। তবে এই পরিবর্তন ঘিরে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে—সরকারি হস্তক্ষেপে কি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বিসিবির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে? আর কেন সরানো হলো ফারুক আহমেদকে?

এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ডে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং বিপিএলে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার দায়ে ফারুক আহমেদকে অপসারণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত আইসিসির গাইডলাইন মেনেই নেওয়া হয়েছে, তাই নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা নেই।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিসিবির ১০ সদস্যের বোর্ডের মধ্যে ৮ পরিচালক ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেন, যাতে ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানানো হয়। ওই চিঠিতে তাকে ‘স্বেচ্ছাচারী’ ও ‘আধিপত্যবাদী’ বলে উল্লেখ করে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়। এর পরপরই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফারুকের এনএসসি মনোনীত পরিচালক পদ বাতিল করে।

বিপিএল নিয়ে আর্থিক অনিয়ম, ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক ঘিরে স্বচ্ছতার অভাবসহ নানা অব্যবস্থাপনা ফারুকের অপসারণের মূল কারণ বলে জানিয়েছে এনএসসি। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, অপসারণের আগে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেন ফারুক আহমেদ। সেখানেই তাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে তিনি তাতে রাজি হননি। ফারুক বলেন, ‘আমাকে কোনো ব্যর্থতার কারণ জানানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছে ‘উপরমহল আমাকে চায় না।’ এতে কোনো ক্রিকেটীয় যুক্তি নেই।’

প্রসঙ্গত, ফারুক আহমেদও এনএসসির মনোনয়নে বিসিবির সভাপতি হয়েছিলেন। এবার একই প্রক্রিয়ায় তাকে অপসারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, আমিনুল ইসলামকে এনএসসি থেকে বিসিবির কাউন্সিলর করা হয়, এরপর দ্রুত তাকে পরিচালক ও পরে সভাপতি পদে নির্বাচিত করা হয়। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এনএসসি যে কাউন্সিলরকে চাই, তাকেই পরিচালক হিসেবে মনোনীত করতে পারে।

যদিও আইসিসি ক্রীড়া বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপকে কড়া ভাষায় নিষেধ করে থাকে। অতীতে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ভারতের কিছু ক্রীড়া সংস্থা এমন হস্তক্ষেপে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিল। তবে ক্রীড়া উপদেষ্টার ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তেমন ঝুঁকি নেই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ র ক আহম দ ফ র ক আহম দ উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিসিবি পরিচালক হলেন রুবাবা দৌলা

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পরিষদের পরিচালক হয়েছেন করপোরেট ব্যক্তিত্ব ও নারী ক্রীড়া সংগঠক রুবাবা দৌলা। তাঁকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) কাউন্সিলর মনোনীত করে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রুবাবা দৌলার অন্তর্ভুক্তিতে ২৫ সদস্যের বিসিবি পরিচালনা পর্ষদ পূর্ণতা পেয়েছে।

দেশীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থায় এনএসসি মনোনীত কাউন্সিলর থাকেন দুজন। গত ৬ অক্টোবর বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের পর এনএসসি যে দুজনকে মনোনয়ন দেয়, তাদের একজন ইসফাক আহসানকে নিয়ে সেদিনই বিতর্ক দেখা দেয়। আজ এনএসসির চিঠিতে ইসফাক আহসান ‘পদত্যাগ করেছেন’ বলে উল্লেখ করা হয়।

ব্যবসায়ী ইসফাকের আওয়ামী লীগের পদে থাকা এবং ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে প্রার্থিতার বিষয়টি আলোচনায় এলে এনএসসি তাঁর জায়গায় রুবাবাকে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে তিনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেখানে কিছু আনুষ্ঠানিকতা থাকায় রুবাবা তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব নেননি।

রুবাবা বর্তমানে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ওরাকলের বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টরের দায়িত্বে আছেন। এর আগে তিনি টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন ও এয়ারটেলের শীর্ষ পর্যায়ে কাজ করেছেন।

রুবাবা দৌলা দীর্ঘদিন ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং একই সময়ে বাংলাদেশ স্পেশাল অলিম্পিকসের বোর্ড সদস্য হিসেবেও যুক্ত ছিলেন।

গ্রামীণফোনে ১৯৯৮ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা ও প্রধান বিপণন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ছিলেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত মুখ। সেই সময় গ্রামীণফোন ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর (২০০৩-২০১১), আর ২০০৭ সালে বিসিবির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মিরপুরে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি স্থাপনেও ভূমিকা ছিল রুবাবার।

আজ বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের একটি সভা রয়েছে। রুবাবা দৌলা সভায় যোগ দিতে পারেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে তিনি ছাড়া মনোনীত অন্য কাউন্সিল ইয়াসির মোহাম্মদ ফয়সাল আশিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিসিবি পরিচালক হলেন রুবাবা দৌলা