‘পাঁচ লাখ টাকা দিলে মামলা থেকে নাম বাদ দেব’
Published: 3rd, June 2025 GMT
পাঁচ লাখ টাকা দিলে মামলার অভিযোগপত্র থেকে নাম বাদ দেওয়া হবে– প্রবাসীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাকের কাছে এভাবে টাকা চেয়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুর থানার এসআই আবু জাফর মৃধা। মোবাইল ফোনে কথপোকথনের এ অডিও রেকর্ড পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছেন ওই ব্যবস্থাপক।
জানা যায়, গত ১৫ মে চাঁচকৈড় বাজার এলাকায় ইটভাটা ব্যবসায়ী ফরিদ মোল্লার ছেলে রুবেল মোল্লাকে দুর্বৃত্তরা মারধর করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকা প্রবাসী রাসেল হোসাইনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারী। এ কারণে ১৬ মে রাসেলকে ১ নম্বর আসামি করে গুরুদাসপুর থানায় মামলা করেন ফরিদ মোল্লা। তদন্তের দায়িত্ব পান থানার এসআই আবু জাফর মৃধা। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তিনি রাসেলের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ব্যবস্থাপক গোলাম রাব্বির কাছে ঘুষ দাবি করেন। গত ২ জুন গোলাম রাব্বিকে ফোন করে ফের পাঁচ লাখ টাকা চান।
টাকা দাবির অডিও রেকর্ডে এসআইকে বলতে শোনা যায়, ‘মামলা থেকে নাম বাদ দেব। চার-পাঁচ লাখ টাকা লাগবে। ঈদের আগে এক লাখ টাকা দিতে হবে। বাকি চার লাখ পড়ে দিয়েন। ১ নম্বর আসামির নাম বাদ দিতে হলে কয়েকটা দপ্তর আছে ভাই। বোঝেন তো। এমনও হতে পারে এসপি স্যার, সার্কেল স্যার ডাকতে পারে। ওসি স্যার তো ডাকবেই। ওসি স্যারকে নলেজে দিয়েই সব করতে হবে ভাই।’
ব্যবস্থাপক গোলাম রাব্বি বলেন, মারামারির মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাসেল ভাইকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন। গত সোমবার রাতে ফোনে করে তিনি পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। ঘুষ দাবির অডিও রেকর্ড নাটোর পুলিশ সুপারের কাছে জমা দিয়েছি।
রাসেল হোসাইন বলেন, আমি দেশে নেই। অথচ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা মারধরের মামলায় আমাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলা থেকে নাম কাটাতে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হচ্ছে। পুলিশ কর্মকর্তার এমন কাণ্ডে আমি হতবাক ও আতঙ্কিত। আমি এসআই আবু জাফরের মতো দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কথা বলতে এসআই আবু জাফর মৃধার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কেন টাকা চাইব? পাঁচ লাখ টাকা দাবির অডিও রেকর্ড সমকালের কাছে আছে জানালে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় এসআইসহ নিহত ৩
যশোরে বাঁশ বোঝাই ট্রাকে বাসের ধাক্কায় পুলিশের এসআইসহ তিনজন মারা গেছেন।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে বাঘারপাড়া উপজেলার জামদিয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গুড়া বাজার সংলগ্ন ব্রিজের কাছে যশোর-নড়াইল মহাসড়কে দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
আরো পড়ুন:
বরিশালে দুই বাসের সংঘর্ষে আহত ৬
বরিশালে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যু
নিহতরা হলেন- যশোর সদর উপজেলার বড় ভেকুটিয়া গ্রামের মুজিদ হাওলাদারের ছেলে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাফর আলী, বসুন্দিয়া আহমেদ আলীর ছেলে আক্তার হোসেন, বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলা এলাকার নিশিকান্ত অঢ্যের ছেলে এসআই নিক্কন অঢ্য।
তুলারামপুর হাইওয়ে পুলিশ জানায়, নড়াইল-যশোর মহাসড়কের ভাঙুড়া বাজার এলাকায় একটি বাঁশ বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। ঢাকা থেকে যশোরগামী ‘নড়াইল এক্সপ্রেসের’ একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান বাসযাত্রী আক্তার হোসেন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আবু জাফর ও পুলিশ কর্মকর্তা নিক্কন আঢ্যকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকাবাসী। হাসপাতালে নেওয়ার পর আবু জাফরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পুলিশ কর্মকর্তা নিক্কনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে চিকিৎসক নিক্কনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, এসআই নিক্কন আঢ্য ৩৭ ব্যাচে আউটসাইড ক্যাডেট হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে লোহাগড়া থানার লাহুড়িয়া তদন্তে কেন্দ্রে যোগ দেন। এর আগে তিনি র্যাবে কর্মরত ছিলেন।
তুলারামপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী জানান, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা জাফর ও আক্তারের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তার মরদেহ নড়াইল মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা/রিটন/মাসুদ