সরকারি চাকরিতে নিয়োগে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক চায় ইসি
Published: 3rd, June 2025 GMT
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাধ্যতামূলক করার অনুরোধ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি জনপ্রশাসন সংশ্লিষ্ট আইনি কাঠামোর মধ্যেও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষে মত দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ।
মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) এস এম হুমায়ুন কবীর এ তথ্য জানান।
এর আগে সোমবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ ২৭টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। বৈঠকে এনআইডি বাধ্যতামূলক করার পক্ষে আটটি যুক্তি তুলে ধরা হয়। এরপর হুমায়ুন কবীর সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমরা যাঁদের এনআইডি সংশোধন করে থাকি, তাঁদের মধ্যে বিরাট একটি অংশ সরকারি চাকরিজীবী। আগে তাঁরা ভাউচারের মাধ্যমে বেতন পেতেন। কিন্তু এখন আইবাসের মাধ্যমে এনআইডির ভিত্তিতে বেতন হয়। এটা তাঁদের রুটি-রুজি, বেতন-ভাতা, সন্তানাদিদের ভরণ-পোষণ ইত্যাদির সঙ্গে জড়িত। আইবাসে বেতন হওয়ার জন্য এনআইডি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।’
হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘কোনো কোনো অফিস এনআইডি ঠিক না হলে বেতন চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে বলেছে। তখন তাঁরা আইবাসে যান, আইবাস থেকে তাঁদের জানানো হয়, তাদের কিছু করার নেই। তখন তাঁরা আমাদের কাছে আসেন। আমাদের অফিসে এলেও অনেক সময় সরাসরি সংশোধন করা যায় না। অনেক সময় নিষ্কৃতিও দেওয়া যায় না। ছয় মাস ধরে এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি।’
হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, ‘চাকরিতে যাঁরা এনআইডিকে গুরুত্ব দেননি, তাঁদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেহেতু এখনো জনপ্রশাসনের আইনি কাঠামোর মধ্যে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়নি, হয়তো এ কারণে তা উপেক্ষিত হয়েছে। আইনি কাঠামোর মধ্যে এলে আর এমন ভুল হবে না। আমরা চাই সব সংস্থা ভবিষ্যতে নিয়োগে জাতীয় পরিচয়পত্রকে বাধ্যতামূলক হিসেবে মানুক।’
হুমায়ুন কবীর বলেন, যেসব সরকারি চাকরিজীবীর বেতন ও ভাতা আটকে আছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত সংশোধন করে বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এনআইডির মহাপরিচালক বলেন, ‘সরকারি চাকরিজীবীদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের কাজ করার জন্য আমরা আলাদা আরেকটি সেল করেছি। তাঁরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আবেদন পর্যালোচনা করে যাঁদেরটা সহজে দেওয়া যায়, সেগুলো আমরা সংশোধন করে দিই। যেগুলো করা যায় না, সেগুলোর ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সঞ্চয়পত্র নাকি এফডিআর—কোথায় বিনিয়োগ করবেন
আপনার হাতে ২-৩ লাখ টাকা জমেছে। এ টাকা কী করবেন, কোথায় জমা রাখবেন, এ নিয়ে চিন্তিত হন। এত টাকা হাতে এলে প্রথমেই সঞ্চয়পত্র কেনার কথা ভাবেন অনেকে। আবার অনেকে এফডিআর (স্থায়ী আমানত) করার কথাও চিন্তা করেন।
তবে সঞ্চয়পত্র কেনা নাকি এফডিআর করা—কোনটি ভালো হবে, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন অনেক। সঞ্চয়পত্র ও এফডিআর নিয়ে একটি বিশ্লেষণ দেওয়া হলো। বিশ্লেষকেরা বলেন, বিনিয়োগের একটি অংশ সঞ্চয়পত্রে ও অপর অংশ এফডিআরে রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে ঝুঁকি কম থাকে।
সঞ্চয়পত্র
মধ্যবিত্তের জন্য সঞ্চয়পত্র বেশি জনপ্রিয়। কারণ, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে ঝামেলা নেই। এত ব্যাংক কেলেঙ্কারির মধ্যেও সঞ্চয়পত্র একটি আস্থার আর্থিক পণ্য হিসেবে সমাজে স্বীকৃত।
সুবিধা কী কী
১. সঞ্চয়পত্রে সরকারি গ্যারান্টি থাকে। তাই টাকা হারানোর ঝুঁকি নেই বললেই চলে।
২. এফডিআর থেকে তুলনামূলকভাবে সুদের হার বেশি। বর্তমানে সঞ্চয়পত্রে গড়ে সুদের হার ১২ শতাংশের আশপাশেই আছে।
৩. দীর্ঘ মেয়াদে নিশ্চিত রিটার্ন পাওয়া যায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে।
৪. সাধারণত কর মওকুফ বা কর রেয়াত সুবিধা পাওয়া। যা আপনার বছর শেষে করের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।
৫. বিপদে পড়লে সঞ্চয়পত্র ভেঙে কাজে লাগানো যায়। অনেকে ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেও সঞ্চয়পত্র কেনেন।
অসুবিধা কী কী
১. নির্দিষ্ট সীমার বেশি কেনা যায় না। যেমন—পরিবার সঞ্চয়পত্র ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়। আবার পেনশনার সঞ্চয়পত্র ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত কিনতে পারবেন।
২. মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে ভাঙালে মুনাফার পরিমাণ কমে যায়।
৩. মুনাফার টাকার উৎসে কর কেটে নেওয়া হয়।
৪. তাৎক্ষণিকভাবে নগদায়ন করার সুবিধা সীমিত।
এফডিআর
এটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখতে হয়। আপনার টাকা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রেখে মুনাফা নেওয়া যায়। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এফডিআর করা যায়।
সুবিধি কী কী
১. ব্যাংকভেদে এফডিআরের মেয়াদ বেছে নেওয়ার সুযোগ আছে। সাধারণত ৩ মাস থেকে ৫ বছর পর্যন্ত এফডিআর করা হয়।
২. এফডিআরের বিপরীতে ইচ্ছা করলে ঋণ নেওয়ার সুবিধা পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে যত টাকার এফডিআর করা হয়, সাধারণত এর ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যায়।
৩. কিছু ব্যাংক মাসিক বা তিন মাস ভিত্তিতে সুদ প্রদান করে। যা নিয়মিত আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
৪. টাকা প্রয়োজন হলে তুলনামূলকভাবে সহজে এফডিআর ভাঙানো যায়।
অসুবিধা কী কী
১. সাধারণত সুদের হার সঞ্চয়পত্রের চেয়ে কম। সুদের হার ৬ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে থাকে। কিছু ব্যাংক এর বেশি হারের সুদ দেয়।
২. ব্যাংকের স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করে এফডিআরের ভবিষ্যৎ।
৩. সময়ের আগে ভাঙালে সুদ কমে যায়।