সাঁতার কেটে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ পার হতে গিয়ে দীপেন চাকমা নামের এক স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়েছে। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ি ঘাট এলাকায় সাঁতার কেটে হ্রদ পার হতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। এরপর ডুবুরি দল তার সন্ধানে হ্রদে অভিযান চালালেও তাকে উদ্ধার করা যায়নি। নিখোঁজ দীপেন রাঙামাটির রাজদ্বীপ গ্রামের মহেশ্বর চাকমার ছেলে ও রাঙামাটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ১০ দশম শ্রেণির ছাত্র।

দীপেনের স্বজন ও সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকালে দুই বন্ধুর সঙ্গে রাজবন বিহারে যায় দীপেন চাকমা। পরে বেলা ১১টার দিকে বনবিহার ঘাট থেকে রাজবাড়ি ঘাটে সাঁতার কেটে পার হওয়ার চেষ্টা করে তারা। এ সময় তার দুই বন্ধু পার হতে পারলেও দীপেন চাকমা তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন প্রথমে জাল ফেলে উদ্ধারের চেষ্টা করে। পরে বেলা তিনটার দিকে নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় একটি ডুবুরি দল নিখোঁজ স্কুলছাত্রকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। তিনটি ডুবুরি দল দুই ঘণ্টার চেষ্টায়ও দীপেনের সন্ধান পায়নি। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে উদ্ধার অভিযান চলছিল।

নিখোঁজ দীপেনের বাবা মহেশ্বর চাকমা বলেন, ‘আমার ছেলে সকালে রাজবন বিহারে যায়। সেখান থেকে সাঁতার কেটে বাড়ির কাছে ঘাটে আসতে চেয়েছিল সে। তবে হ্রদে ডুবে নিখোঁজ হয় সে।’ দীপেন চাকমা মহেশ্বর চাকমার একমাত্র ছেলে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো.

আবদুল মান্নান আনছারী বলেন, ‘নিখোঁজ স্কুলছাত্রকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আমাদের সঙ্গে নৌবাহিনী ও স্থানীয় ডুবুরিরা উদ্ধার অভিযানে আছেন।’

আজ বিকেল তিনটা থেকে স্কুলছাত্র দীপেন চাকমাকে উদ্ধারে তিনটি ডুবুরি দল অভিযান শুরু করলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তার সন্ধান মেলেনি। আজ বিকেলে রাঙামাটির রাজবাড়ি ঘাটে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ প ন চ কম প র হত

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, ধীর গতি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত মহাসড়কটিতে এই অবস্থা দেখা গেছে। ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কেও ধীর গতিতে চলছে যানবাহন। মহাসড়ক দুটিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ।

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করতে রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর থেকে বাড়ি ফিরছেন কর্মজীবীরা। ফলে মহাসড়কগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। রাতে বেশ কয়েকটি স্থানে যানবাহন বিকল হয়ে মহাসড়কের দুইদিকে যানজটের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ, যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দুটিতে যানবাহনের চাপ থাকায় থেমে থেমে যানজট তৈরি হয়েছে। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্টরা। দীর্ঘ ভোগান্তি এড়াতে অনেকেই পায়ে হেঁটে এগিয়ে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের গাড়ি ধরতে চাইছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা ধীরে ধীরে চলাচল করছে যানবাহন।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল শিল্পাঞ্চলগুলোর পোশাক কারখানায় ছুটি হওয়ায় লাখো মানুষ একই সঙ্গে নিজেদের গন্তব্যে যাত্রা করেন। এ ছাড়া মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। এতে রাতভর মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট তৈরি হয়। ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষদের দীর্ঘসময় যানবাহনে বসে থাকতে হচ্ছে। গরম ও যানজটে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েন শিশু, নারী ও বয়োজ্যেষ্ঠরা।

আজ সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বোর্ডবাজার থেকে সালনা ৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজট তৈরি হয়েছে। এসব এলাকায় থেমে থেমে চলছে গাড়ি। এর মধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক যানবাহন না পেয়ে পেয়ে অনেকেই বিভিন্ন যানবাহনের খোলা ছাদ, ট্রাক ও পিকআপে করেই গন্তব্যে উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। সুযোগ বুঝে অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

রাজশাহী যাওয়ার উদ্দেশে চন্দ্রা থেকে আলম এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের একই বাসে উঠেন আকবর আলী। যানজটে আটকে তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কষ্ট করছি। কখন যানজট শেষ হয় কে জানে? রাস্তায় কোনো পুলিশও দেখছি না।’

রাজধানীর মহাখালী থেকে ৫ ঘণ্টা আগে রওনা হয়ে আস সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরে চন্দ্রা এলাকায় আটকে ছিলেন জেঁকে পরিবহনের বাসচালক ময়নাল হোসেন। তিনি বলেন, চন্দ্রার আগে এসে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। অনেক বয়স্ক ও শিশু যাত্রী আছে, তাঁরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের (ওসি) সওগাতুল আলম। তিনি জানান, সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি যানবাহনের গতি সচল রাখতে হাইওয়ে পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট আছেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্যাসেঞ্জার তোলায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ে। যানবাহনের চাপ ও রাতে কয়েকটি স্থানে পরিবহন বিকল হওয়ায় এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ