কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠে প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় ঈদুল আজহার এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে মাঠের অনেক জায়গা কর্দমাক্ত থাকলেও আজ জামাতের সময় বৃষ্টি ছিল না, বরং রোদ উঠেছিল। ফলে মুসল্লিরা স্বস্তিতে নামাজ আদায় করেছেন।
জামাতে ইমামতি করেন বড় বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। ঈদুল ফিতরের জামাতে কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৫ লাখের বেশি মুসল্লি আসলেও এবারের ঈদের জামাতে মুসল্লির সমাগম তুলনামূলক কম।
শোলাকিয়ার সুদীর্ঘকালের ঐতিহ্য অনুসারে জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে তিনটি, ৩ মিনিট আগে দু’টি ও ১ মিনিট আগে একটি শর্টগানের গুলি ফুটিয়ে নামাজ শুরুর সংকেত দেওয়া হয়। গুলি ছোঁড়া উদ্বোধন করেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ কাজেম উদ্দীন। এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত ও পুলিশ সুপার কাজেম উদ্দীন মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
ঈদুল ফিতরের মতো এবারের ঈদেও দূরবর্তী মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য আজ সকালে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দু’টি ঈদ স্পেশাল ট্রেন আসে। জামাত শেষে মুসল্লিদের নিয়ে ট্রেন দু’টি আবার গন্তব্যে ফিরে যায়। মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় ৬ শতাধিক পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্য, র্যাব ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ঈদগাহ এলাকাকে কেন্দ্র করে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা, ৭টি ড্রোন ক্যামেরা, ৭টি ভিডিও ক্যামেরা, ৫০টি মেটাল ডিটেক্টর, ৮টি আর্চওয়ে এবং চারটি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়। এছাড়া ছিল র্যাব ও পুলিশের কন্ট্রোলরুম, মেডিক্যাল ক্যাম্প ও ফায়ার সার্ভিস ইউনিট।
নামাজ শেষে ইমাম মুফতি ছাইফুল্লাহ তার মোনাজাতে বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। বায়ান্ন, একাত্তর ও চব্বিশের নিহতদের শহীদি মর্যাদার জন্য দোয়া করেন। এছাড়া সাম্রাজ্যবাদের কবল থেকে মুসলিম বিশ্বের হেফাজতের জন্য ও বিপদগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের হেফাজতের জন্য দোয়া কামনা করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ঈদ ল আজহ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু
৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ বিশেষ যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাখা ছাত্রদলের কর্মী নাফিস ইকবাল পিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ তথ্য জানিয়ে পোস্ট দেন। একইসঙ্গে শাখা সভাপতি সাগর নাইম ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপুও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের জায়গা: ইউজিসি চেয়ারম্যান
ছাত্রদল জানিয়েছে, ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাস ছাড়বে। একটি ঢাকা রুটে এবং অপরটি ময়মনসিংহ রুটে যাবে। প্রতিটি বাসে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী এই ফ্রি সার্ভিসের আওতায় যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুগল ফর্মের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ এই সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবেন না।
শিক্ষার্থীদের জন্য এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট দিয়ে ছাত্রদলের এ পদক্ষেপকে ‘শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
শাখা সভাপতি সাগর নাইম তার পোস্টে বলেন, “প্রতি বছর বিসিএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের আলো ছড়িয়ে দেন। আমরা চাই এ সুনাম আরো দূরে ছড়িয়ে পড়ুক, আরো উজ্জ্বল হোক। এ ধারাবাহিক সাফল্যের পথে আপনাদের পাশে থাকতে, ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রদল ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।”
এ বিষয়ে শাখা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপু বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গত বিসিএসে আমাদের বড় ভাই বিসিএস প্রশাসনে প্রথম হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই গর্বের বিষয়। সেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছি।”
তিনি বলেন, “বিশেষ করে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন, যারা ক্যাম্পাস থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। আমরা চাইনি কেউ যেন যাতায়াত সমস্যার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা এ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।”
ঢাকা/আবিদ/মেহেদী