Prothomalo:
2025-06-07@19:27:31 GMT

৪০ বছর ধরে গরু কাটেন কহিদুল

Published: 7th, June 2025 GMT

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মহিষের দোকান আছে কহিদুল ইসলামের (৫৫)। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে রাজধানী ঢাকায় আসেন গরু কাটতে। জীবিকার তাগিদে মাত্র ১৫ বছর বয়সে গরু কাটাকে পেশা হিসেবে নেওয়া কহিদুল ৪০ বছর ধরে এ কাজ করছেন।

আজ শনিবার ঈদুল আজহার দিন রাজধানীর ওয়ারীতে কহিদুলের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। জানালেন, ২০ বছর ধরে ওয়ারীতে কোরবানির গরু প্রস্তুত করতে তিনি ঝিনাইদহ থেকে আসেন।

প্রতি কোরবানি ঈদের দিন পাঁচ থেকে ছয়টি করে গরু কেটে প্রস্তুত করেন কহিদুল। এরারও বিকেল চারটা পর্যন্ত ছয়টি গরু প্রস্তুতের কথা ছিল তাঁর। গরু কাটার কাজে একজন সহকারী নিয়ে আসেন কহিদুল। তাঁকে এক দিনের জন্য তিন হাজার টাকা দিতে হয়।

স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার কহিদুলের। ছেলে একটি কলেজে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ঢাকায় গরু প্রস্তুতের জন্য আসার সময় ছেলেকেও নিয়ে আসেন। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন ছেলে।

এক লাখ টাকার একটি গরু প্রস্তুত করে দিয়ে কহিদুল পান ১০ হাজার টাকা। প্রতিবছর কোরবানির ঈদের তিন দিন আগে এসে ওয়ারীর বাসিন্দা মাসুদ আলমের বাসায় থাকেন। তাঁর গরু প্রস্তুতের পাশাপাশি বাকি গরুগুলো প্রস্তুতের বিষয়ে আগে থেকে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নেন।

গরু কাটার পেশায় আসার স্মৃতিচারণা করে কহিদুল বলেন, ‘যে ওস্তাদের কাছে শিখেছি, পাঁচ টাকা হাজিরা (মজুরি) দিত পুরো দিনের জন্য। এর পর থেকে কাজ শেখা শুরু করছি।’

এত বছর ধরে বাড়ির বাইরে ঈদ করা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা কিছু বলেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কহিদুল বলেন, ‘এটা আমাদের কর্ম, বুঝলেন? কর্ম করতে আসতেই হবে।’ তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা বলে, বাসায় ঈদটি করো। এহন এই কর্ম শিখছি; কর্মেই আসতেই হয়।’

অনেকে গরু প্রস্তুত করতে গিয়ে নানা সময় আহত হন। কখনো আহত হয়েছিলেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কহিদুল বলেন, আজকেও হাত কেটে গেছে। মাঝেমধ্যে প্রায় সময় হাতের আঙুল কেটে যায়। তবে বড় কোনো দুর্ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি।

ঈদের পরদিনও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কোরবানি হয়ে থাকে। তবে সে জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত বাড়ি ফিরতে চান কহিদুল। জানালেন, আজকে সারা দিন কাজ শেষে আগামীকাল রোববার সকালেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ত র ক রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

বেনাপোলে ককটেল হামলায় বিএনপি নেতা নিহত

যশোরের বেনাপোলে ডুবপাড়া গ্রামে দুর্বৃত্তদের ককটেল হামলায় আব্দুল হাই নামে এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই গ্রামের আমির আলীর ছেলে এবং বিএনপির ডুবপাড়া ওয়ার্ড কমিটির কার্যকরী সদস্য। আজ শনিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানায়, ঘটনার আগে আজ সকালে ঈদগাহ মাঠে আওয়ামী লীগের লোকজন নামাজ পড়তে যাওয়ায় আবু সাঈদ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ওপর হামলা করে। এ সময় আব্দুল হাই বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে তোমাদের কোনো ঝামেলা থাকলে সেটা পরে মিটিয়ে নিও। এখন ওদের ঈদের নামাজ পড়তে দাও। এই ঘটনা নিয়ে দ্বন্দ্ব।

গ্রামের বাসিন্দারা জানান, পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায়ের জন্য আওয়ামী লীগ সমর্থকরা বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে অনুমতি নিয়ে ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগাহে যান। আওয়ামী লীগ সমর্থকরা কেন ঈদের নামাজ পড়তে এসেছে; এ নিয়ে প্রথমে আওয়ামী লীগের সাথে বিএনপি এবং পরে বিএনপির দুই গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ ঘটনা জের ধরেই সাঈদ বহিরাগত লোকজন নিয়ে আব্দুল হাইয়ের ওপর কটকেট হামলা চালায়।

বেনাপোলের বাহাদুরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ডুবপাড়া গ্রামের সাইদের নেতৃত্বে দুটি মোটরসাইকেলে ৪ জন সন্ত্রাসী ডুবপাড়া গ্রামের জামতলা নামক স্থানে মিলনের চা দোকানের পাশে আব্দুল হাইকে লক্ষ্য করে পরপর চারটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুল হাইকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হাসান জহির বলেন, সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় বিএনপি নেতা আব্দুল হাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এটা দুঃখজনক। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারপূর্বক শাস্তি চাই।

বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, ওই গ্রামে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। অভিযান অব্যাহত আছে। রাতেই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে আগামীকাল রোববার সকালে পাঠানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ