ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মহিষের দোকান আছে কহিদুল ইসলামের (৫৫)। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে রাজধানী ঢাকায় আসেন গরু কাটতে। জীবিকার তাগিদে মাত্র ১৫ বছর বয়সে গরু কাটাকে পেশা হিসেবে নেওয়া কহিদুল ৪০ বছর ধরে এ কাজ করছেন।
আজ শনিবার ঈদুল আজহার দিন রাজধানীর ওয়ারীতে কহিদুলের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। জানালেন, ২০ বছর ধরে ওয়ারীতে কোরবানির গরু প্রস্তুত করতে তিনি ঝিনাইদহ থেকে আসেন।
প্রতি কোরবানি ঈদের দিন পাঁচ থেকে ছয়টি করে গরু কেটে প্রস্তুত করেন কহিদুল। এরারও বিকেল চারটা পর্যন্ত ছয়টি গরু প্রস্তুতের কথা ছিল তাঁর। গরু কাটার কাজে একজন সহকারী নিয়ে আসেন কহিদুল। তাঁকে এক দিনের জন্য তিন হাজার টাকা দিতে হয়।
স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার কহিদুলের। ছেলে একটি কলেজে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ঢাকায় গরু প্রস্তুতের জন্য আসার সময় ছেলেকেও নিয়ে আসেন। এ কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন ছেলে।
এক লাখ টাকার একটি গরু প্রস্তুত করে দিয়ে কহিদুল পান ১০ হাজার টাকা। প্রতিবছর কোরবানির ঈদের তিন দিন আগে এসে ওয়ারীর বাসিন্দা মাসুদ আলমের বাসায় থাকেন। তাঁর গরু প্রস্তুতের পাশাপাশি বাকি গরুগুলো প্রস্তুতের বিষয়ে আগে থেকে কথা বলে নিশ্চিত হয়ে নেন।
গরু কাটার পেশায় আসার স্মৃতিচারণা করে কহিদুল বলেন, ‘যে ওস্তাদের কাছে শিখেছি, পাঁচ টাকা হাজিরা (মজুরি) দিত পুরো দিনের জন্য। এর পর থেকে কাজ শেখা শুরু করছি।’
এত বছর ধরে বাড়ির বাইরে ঈদ করা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা কিছু বলেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কহিদুল বলেন, ‘এটা আমাদের কর্ম, বুঝলেন? কর্ম করতে আসতেই হবে।’ তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্যরা বলে, বাসায় ঈদটি করো। এহন এই কর্ম শিখছি; কর্মেই আসতেই হয়।’
অনেকে গরু প্রস্তুত করতে গিয়ে নানা সময় আহত হন। কখনো আহত হয়েছিলেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কহিদুল বলেন, আজকেও হাত কেটে গেছে। মাঝেমধ্যে প্রায় সময় হাতের আঙুল কেটে যায়। তবে বড় কোনো দুর্ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি।
ঈদের পরদিনও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কোরবানি হয়ে থাকে। তবে সে জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত বাড়ি ফিরতে চান কহিদুল। জানালেন, আজকে সারা দিন কাজ শেষে আগামীকাল রোববার সকালেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ত র ক রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
লোহাগড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র কারাগারে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আশরাফুল আলমের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) লোহাগড়া আমলী আদালতের বিচারক রত্না সাহা এই আদেশ দেন। নড়াইল আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা চালায় আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ), যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আরো পড়ুন:
সমন্বয়ক পরিচয়ে তদবির-হুমকি: যুবককে ২ মাসের কারাদণ্ড
চট্টগ্রাম কারাগার পরিদর্শন: ছবি তোলা নিয়ে যা বললেন ধর্ম উপদেষ্টা
এ সময় ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে তারা গুলি ছুঁড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ১৩ শিক্ষার্থীকে রামদা, বাঁশের লাঠি, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়।
এ ঘটনায় ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার মুখ্য সংগঠক কাজি ইয়াজুর রহমান বাবু বাদী হয়ে ২৯৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো সাড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯ নম্বর আসামি করা হয় আশরাফুল আলমকে।
ঢাকা/শরিফুল/রাজীব