তানিন সুবহার ব্রেন কাজ করছে না, খুলে নেওয়া হতে পারে লাইফ সাপোর্ট
Published: 9th, June 2025 GMT
প্রায় এক সপ্তাহ হলো লাইফ সাপোর্টে আছেন অভিনেত্রী তানিন সুবহা। রোববার সন্ধ্যায় ছড়ায় তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল। তবে এখনো এই অভিনেত্রী লাইফ সাপোর্টে আছেন। কিন্তু যেকোনো সময় সুবহার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হতে পারে বলে জানিয়েছে তার পরিবার।তানিন সুবহার হৃদ্যন্ত্র কিছুটা সচল দেখালেও ব্রেন আর কাজ করছে না। রোববার বিকেলেই চিকিৎসকেরা তাকে ক্লিনিক্যালি ডেড ঘোষণা করেছেন। এদিকে তার স্বামীর অনুমতির অপেক্ষায় আছেন সবাই।
সোমবার সকালে তানিন সুবহার ছোট ভাই গণমাধ্যমকে বলেন ‘‘ চিকিৎসকেরা বলেছেন, তাদের আর কিছুই করার নেই। আল্লাহ না চাইলে তাকে এখান থেকে আর ফেরানো যাবে না। রোবার বিকেল থেকেই আপুর ব্রেন কাজ করছে না, মেশিনের মাধ্যমে শুধু হার্ট সচল আছে। ডাক্তাররা লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলার কথা বলেছেন, তবে আম্মু এখনও অনুমতি দেননি। দুলাভাইয়ের সিদ্ধান্তের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। আমার বোনের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’’
তানিন সুবাহর স্বামী একজন বৈমানিক। তিনি অনুমতি দিলেই লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন এই অভিনেত্রীর ছোট ভাই।
উল্লেখ্য, ২ জুন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তানিন সুবহা। এরপর আফতাবনগর বাসার কাছের একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন তিনি। কিন্তু সন্ধ্যায় আবার অসুস্থ বোধ করেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে বনশ্রীর একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এরপর মধ্যরাতে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই লাইফ সাপোর্টে আছেন অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
সুশান্তের মৃত্যু যেভাবে পাল্টে দিয়েছে রিয়ার জীবন
ঈদ স্মৃতি
গরুর সঙ্গে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরতাম
জানা যায়, হঠাৎ তানিন সুবহা বুকে ব্যথা অনুভব করছিলেন আর ঘেমে যাচ্ছিলেন। প্রথমে ভেবেছিলেন অ্যাসিডিটির ব্যথা। অ্যাসিডিটির ওষুধ খান। এরপর বমি করলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
উল্লেখ্য, বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে শোবিজে নাম লেখান তানিন সুবহা। এরপর অভিনয় করেন নাটক-সিনেমায়। ‘মাটির পরী’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় তার অভিষেক হয়, এরপর নাম লেখান বেশ কিছু সিনেমায়। বর্তমানে এই নায়িকার বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তির মিছিলে রয়েছে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদো গোল করলেন, পর্তুগাল জিতল উয়েফা নেশন্স লিগ
এমন না যে নিজেকে প্রমাণ করার আরো কিছু আছে তার। তবুও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অঝোরে কাঁদেন। উল্লাসে কাঁদেন। অর্জনে কাঁদেন। সেই সুখের কান্নায় আরেকবার ভিজলো জার্মানির আলিয়াঞ্জ এরিনার সবুজের গালিচা।
যেখানে স্পেনকে হারিয়ে পর্তুগাল জিতে নেয় উয়েফা নেশন্স লিগ কাপ। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ এ অমীমাসিংত থাকে। অতিরিক্ত আরো ৩০ মিনিটেও চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করা যায়নি। টাইব্রেকারেই হয় ফয়সালা। যেখানে ৫-৩ গোলে স্পেনকে হারিয়ে পর্তুগাল নিশ্চিত করে শিরোপা। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার পর্তুগাল জিতল উয়েফা নেশন্স লিগ। ২০১৯ সালে পেয়েছিল প্রথমবার।
চল্লিশ পেরোনো রোনালদো এই ম্যাচেও গোল করেছেন। হয়তো ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা চলছিল। স্পেন ২-১ এ এগিয়ে। গোল শোধে মরিয়া পর্তুগাল একের পর এক আক্রমণে যাচ্ছে কিন্তু ফিনিশিংয়ের ঘাটতির কারণে গোল পাওয়া হচ্ছিল না।
৬৫ মিনিটে রোনালদো দলকে সমতায় ফেরান। মেনডেসের ক্রস থেকে ডি বক্সের ভেতরে বল পান রোনালদো। স্পেনের রক্ষণের খেলোয়াড়ের বাধায় বল ঠিকঠাক জায়গা মতো পাননি রোনালদো। কিন্তু তার নিখুঁত শট খুঁজে নেয় স্পেনের জাল। স্কোরলাইন ২-২। এরপর নির্ধারিত সময়ের খেলা অমীমাংসিত থাকে। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও গোলের দেখা পায়নি কেউ।
ফাইনাল ম্যাচ টাইব্রেকারে গিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়। পর্তুগাল সবগুলো শটে গোলের দেখা যায়। স্পেনের প্রথম তিনটি শটও ছিল গোল। চতুর্থ শট নিয়েছিলেন অধিনায়ক মোরাতা। কিন্তু গোলরক্ষক কস্তা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বল আটকে দেন। পরের শটে নেভেস গোল করে পর্তুগালকে জেতান শিরোপা।
ম্যাচের ৮৮ মিনিটে চোট পেয়ে উঠে যান রোনালদো। পেনাল্টির পুরোটা সময় তার চোখে মুখে ছিল চিন্তার ভাঁজ। স্পেন গোল করলেই মুখটা বিষন্ন হয়ে আসে। নিজের দলের খেলোয়াড়রা গোল করলে তার মুখে হাসি ফোটায়। মিশ্র এই অনুভূতির মাঝেই কস্তা মোরাতার শট আটকে দিলে চোখের কোণে জল চলে আসে রোনালদোর।
এরপর নেভেসের শট লক্ষ্যভেদ হলে নিজেকে আর আটকে রাখতে পারেননি সিআরসেভেন। মাটিতে বসে কান্নায় সবুজ গালিচা ভিজিয়ে দেন। উঠে দাঁড়িয়েও আনন্দাশ্রু ঝরতে থাকে। মাঠের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যখন শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন তখন আনন্দের জোয়ারে ভেসে যায় সব। ব্যক্তিগত অর্জনে টইটুম্বুর রোনালদো দেশের জার্সিতে ২০১৬ ইউরো, ২০১৯ নেশন্স লিগ জিতেছিলেন। ছয় বছর পর আবার জিতলেন নেশন্স লিগ।
কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল…তিন নক আউট ম্যাচেই রোনালদো গোল করেছেন। ২২০তম ম্যাচে এটি রোনালদোর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১৩৮তম গোল। যা তার পেশাদার ক্যারিয়ারের ৯৩৮তম গোল।
ফাইনাল ম্যাচে স্পেন দুইবার এগিয়ে যায়। প্রথমে ২২ মিনিটে। জুবিমেন্ডি অতি সহজেই গোল পেয়ে দলকে এগিয়ে নেন। লিড অবশ্য বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি স্পেন। বক্সের বাইরে থেকে নেটোর বাড়ানোর পাস নিয়ে এগিয়ে নেন মেনডেস। ক্ষীপ্রতায় এগিয়ে যান ভেতরে। এরপর বামপায়ের জোরালো শটে বল পাঠান জালে। ১-১ এ খেলা সমতা।
কিন্তু বিরতিতে যাওয়ার আগে আবার গোল হজম করে পর্তুগাল। পেড্রির বাড়ানো বল ইয়ারজাবাল শট নিয়ে স্পেনকে এগিয়ে দেন। কিন্তু ওই এগিয়ে যাওয়াতে তেমন লাভ হয়নি। রোনালদোর গোলে পর্তুগাল ম্যাচে সমতা ফেরায়। এরপর টাইব্রেকারে পর্তুগাল উড়ায় বিজয়ের পতাকা। পাঁচবারের ব্যালন ডি অরের সাফল্যের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হলো। দেখার বিষয়, চল্লিশ পেরিয়ে যাওয়া রোনালদো কোথায় গিয়ে থামেন।
ঢাকা/ইয়াসিন