সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছরিবাড়ির কাস্টোডিয়ানসহ কর্মচারীদের বিরুদ্ধে এক দর্শনার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে কাছারিবাড়ির অডিটোরিয়াম ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় কাছারিবাড়ির পরিচালক সিরাজুল ইসলামকে মারধর করা হয়েছে। 

জানা যায়, গত ৮ জুন বিকেলে স্ত্রী ও ভাতিজাকে নিয়ে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে ঘুরতে যান পৌর সদরের রূপপুর গ্রামের প্রবাসী মো.

শাহনেওয়াজ। এ সময় প্রবেশমূল্য নিয়ে টিকিট দিলেও মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের জন্য টোকেন দেয়নি কর্তৃপক্ষ। কাছারিবাড়ি দর্শন শেষে বের হওয়ার সময় শাহনেওয়াজের কাছে মোটরসাইকেলের টিকিট দেখতে চান প্রধান ফটকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী। টিকিট দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় শাহনেওয়াজের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয় ওই কর্মচারীর। পরে কাস্টোডিয়ানসহ কাছারিবাড়ির অন্য কর্মচারীরা শাহনেওয়াজকে অফিসের একটি কক্ষে নিয়ে মারধর করেন। খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতারা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। 
রাতেই শাহনেওয়াজ বাদী হয়ে শাহজাদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। ঘটনার দু’দিন পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা কাছারিবাড়ি অডিটোরিয়ামে ভাঙচুর করে। শাহজাদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মুশফিকুর রহমান। 

শাহনেওয়াজের ভাই হান্নান ও সুমন অভিযোগ করে বলেন, প্রবাসী শাহনেওয়াজ ছুটিতে দেশে এসে স্ত্রীকে নিয়ে কাছারিবাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিল। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এই কাস্টোডিয়ান দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দর্শনার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করে আসছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো দর্শনার্থী তাদের হাতে নির্যাতিত হন। 

শাহজাদপুর কাছারিবাড়ির কাস্টোডিয়ান হাবিবুর রহমান গত ৮ জুনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করলেও ভাঙচুরের ঘটনা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি মো. আছলাম আলী জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
  • অবকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ববিতে মানববন্ধন
  • সিজু নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
  • মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুরে মিছিল-সমাবেশ
  • নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে সম্মান কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন
  • ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন, স্মারকলিপি
  • ১ কোটি শিশু শিক্ষার্থীর অধিকার নিশ্চিতের দাবিতে  মানববন্ধন, স্মারকলিপি
  • রাজশাহীতে চাঁদাবাজির মামলার বাদীকেই গ্রেপ্তারের দাবি বিএনপির
  • গাইবান্ধায় কলেজছাত্র সিজু হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন