ডেঙ্গুর প্রকোপ এবং করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং মশক নিধনে জনবল সংকট মোকাবিলায় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। বুধবার (১১ জুন) এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া।

সভায় জানানো হয়, মশক নিধনের দায়িত্বে থাকা জনবলের ঘাটতি পূরণে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং আগত দিনগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নিতে মাঠপর্যায়ে তৎপরতা আরো বাড়ানো হবে।

আরো পড়ুন:

বরগুনায় ডেঙ্গুতে বৃদ্ধের মৃত্যু

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু শনাক্ত ২৮৮, বরিশালে ২৬১ জন

সভায় প্রশাসক বলেন, “ডেঙ্গু এখন ঢাকার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য ইস্যু। তাই এটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা সমন্বিত পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

সভায় এডিস মশার বিস্তার রোধকে ডিএসসিসির সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ অ্যাজেন্ডা হিসেবে নির্ধারণ করে আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মশককর্মীদের সকাল ও বিকেলের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগের তদারকি এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জনসচেতনতা ও আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে।

এছাড়া মশক নিধন কার্যক্রমকে অধিকতর ফলপ্রসূ করতে বাড়ির ভেতর, ছাদ, আঙিনা ও জমে থাকা পানির উৎস চিহ্নিত করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিটি অঞ্চলে নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে এসব টিম কাজ করবে।

সভায় ডেঙ্গু ও করোনাভাইরাস বিষয়ে ডিএসসিসির সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.

ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়। এছাড়া, চলতি মাসের মধ্যেই নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে একটি সেমিনার আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হালনাগাদ তথ্য প্রকাশের সিদ্ধান্তও সভায় গৃহীত হয়, যাতে নাগরিকরা সচেতন থাকতে পারেন এবং নিজ উদ্যোগে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, করপোরেশন সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

ডিএসসিসি কর্মকর্তারা জানান, বর্ষা মৌসুমের আগে থেকেই এই প্রস্তুতি কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে, যাতে নাগরিক দুর্ভোগ কমিয়ে আনা যায় এবং ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এসস স ড এসস স র কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম

ঝালকাঠির রাজপুর উপজেলার প্রধান ডাকঘরের ভবনটি ১৯৯০ সালে নির্মিত হলেও এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। ভবনের ছাদের অবস্থা এতটাই খারপা যে, প্লাস্টার খসে পড়ছে এবং বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকছে। ছাদের বিমের রডও বেরিয়ে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করতে হচ্ছে ডাকঘরটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। 

ডাকঘরের পোস্টমাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, “ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে, ছাদ থেকে পানি পড়ছে, দ্বিতীয় তলার অবস্থা আরো ভয়াবহ। ভবনটিকে গণপূর্ত বিভাগ ‘ব্যবহারের অনুপোযোগী’ ঘোষণা করলেও এখনও ঝুঁকি নিয়েই কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।” 

পোস্ট অফিস সূত্র জানায়, ভবনটির চারপাশে কোনো প্রাচীর না থাকায় এটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। ভবনের ভেতরে ও বাইরে শেওলা পড়েছে। পুরো ভবনটি বর্ষাকালে ভুতুড়ে পরিবেশ ধারণ করে। কম্পিউটার, স্ক্যানার, ফ্র্যাঙ্কিং মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পানিতে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পোস্ট অফিসটিতে বর্তমানে মাত্র চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে একজন পোস্টম্যান প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত থাকায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পর্যাপ্ত আসবাবপত্র না থাকায় এবং জনবল সংকটের কারণে সেবার মানে অবনতি ঘটেছে।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধসের শঙ্কা

বিপৎসীমার ওপরে পটুয়াখালীর নদ-নদীর পানি, ৬ গ্রাম প্লাবিত

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাকঘরের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে তারা অনেকেই ভেতরে প্রবেশ করতে ভয় পান। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এটি ধ্বংসপ্রায় ভবনে পরিণত হয়েছে। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পোস্ট বক্সটিও। রাজাপুরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় প্রধান ডাকঘরটির এমন অবস্থা মেনে নিতে পারছেন না তারা। জরুরি ভিত্তিতে ভবনটির সংস্কার ও জনবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঝালকাঠির পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবুল ফয়েজ বলেন, “উপজেলার প্রধান ডাকঘরের দুরবস্থার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জনবল সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য আমরা আবেদন করেছি।” 

বরিশাল অঞ্চলের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মন্জুরুল আলম বলেন, “শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া এ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। ভবনের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শিগগিরি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জলাবদ্ধতা নিরসনে ফতুল্লায় জামায়াতের উদ্যোগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান
  • ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম