ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস মশার বিস্তার রোধে দ্বিগুণ ওষুধ ছিটাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ‘এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে’ আয়োজিত এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্তৃপক্ষ।

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ঢাকা ওয়াসার সম্মেলনকক্ষে এ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু পর্যবেক্ষক দল গঠন (মনিটরিং টিম) এবং জনবলের ঘাটতি পূরণে উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির জনসংযোগ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এডিস মশার বিস্তার রোধকে বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্যসূচি নির্ধারণ করে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফলাফল পেতে আগামী শনিবার এ কার্যক্রম শুরু হবে। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে পরিপক্ব মশা নিধনের কাজে (এডাল্টিসাইডিং) ধোঁয়া দেওয়ার ফগার যন্ত্রে ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ; অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক ব্যবহার করা হবে।

সভায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পর্যবেক্ষক দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির ১০টি অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে এ দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা মশার ওষুধ ছিটানোর কর্মীদের সকাল ও বিকেলের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই করা, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা এবং মশকনিধনের কর্মীদের মাধ্যমে বাসাবাড়ির ভেতর, আঙিনা ও ছাদে জমা পানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজগুলো নিশ্চিত করবেন।

চলতি জুন মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণের নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণবিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিনের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর হালনাগাদ তথ্য ঢাকা দক্ষিণ সিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। মশকনিধনে জনবলের ঘাটতি পূরণে নিয়োগপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিরও সিদ্ধান্ত হয় সভায়।

ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে সংস্থাটির সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফারিয়া ফয়েজকে মনোনীত করা হয়েছে। এ কর্মকর্তার মুঠোফোন নম্বর ০১৮৪১-২১১০৯৮।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক মো.

শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিশাত পারভীনসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স দ ধ ন ত হয় য কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম

ঝালকাঠির রাজপুর উপজেলার প্রধান ডাকঘরের ভবনটি ১৯৯০ সালে নির্মিত হলেও এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। ভবনের ছাদের অবস্থা এতটাই খারপা যে, প্লাস্টার খসে পড়ছে এবং বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকছে। ছাদের বিমের রডও বেরিয়ে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করতে হচ্ছে ডাকঘরটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। 

ডাকঘরের পোস্টমাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, “ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে, ছাদ থেকে পানি পড়ছে, দ্বিতীয় তলার অবস্থা আরো ভয়াবহ। ভবনটিকে গণপূর্ত বিভাগ ‘ব্যবহারের অনুপোযোগী’ ঘোষণা করলেও এখনও ঝুঁকি নিয়েই কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।” 

পোস্ট অফিস সূত্র জানায়, ভবনটির চারপাশে কোনো প্রাচীর না থাকায় এটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। ভবনের ভেতরে ও বাইরে শেওলা পড়েছে। পুরো ভবনটি বর্ষাকালে ভুতুড়ে পরিবেশ ধারণ করে। কম্পিউটার, স্ক্যানার, ফ্র্যাঙ্কিং মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পানিতে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পোস্ট অফিসটিতে বর্তমানে মাত্র চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে একজন পোস্টম্যান প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত থাকায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পর্যাপ্ত আসবাবপত্র না থাকায় এবং জনবল সংকটের কারণে সেবার মানে অবনতি ঘটেছে।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধসের শঙ্কা

বিপৎসীমার ওপরে পটুয়াখালীর নদ-নদীর পানি, ৬ গ্রাম প্লাবিত

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাকঘরের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে তারা অনেকেই ভেতরে প্রবেশ করতে ভয় পান। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এটি ধ্বংসপ্রায় ভবনে পরিণত হয়েছে। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পোস্ট বক্সটিও। রাজাপুরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় প্রধান ডাকঘরটির এমন অবস্থা মেনে নিতে পারছেন না তারা। জরুরি ভিত্তিতে ভবনটির সংস্কার ও জনবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঝালকাঠির পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবুল ফয়েজ বলেন, “উপজেলার প্রধান ডাকঘরের দুরবস্থার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জনবল সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য আমরা আবেদন করেছি।” 

বরিশাল অঞ্চলের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মন্জুরুল আলম বলেন, “শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া এ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। ভবনের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শিগগিরি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম