যেসব যন্ত্র রান্নার কাজকে সহজ করে, কমায় স্বাস্থ্যঝুঁকি
Published: 12th, June 2025 GMT
অধিকাংশ বাঙালি নারীই এখনো বঁটিতে কাটাকুটির কাজ করেন। মসলা পেষার মূল সহায় এখনো শিলপাটা। মাটির চুলাতে হয় রান্না। জ্বালানির উৎস ঘুঁটে, কাঠ আর খড়ি। পরম মমতায় পরিবারের সবার জন্য এভাবেই খাবার তৈরি করেন এ দেশের নারীরা। দেশের বহু এলাকায় এখনো এমন চিত্র দেখা যায়। বছরের পর বছর ধরে এভাবে যাঁরা কাজগুলো করেন, তাঁদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথাটা আমরা অনেকেই ভাবি না। ঝুঁকে বসে কাজ করতে করতে তাঁরা ঘাড় কিংবা কোমরব্যথায় ভোগেন। অথচ মেরুদণ্ড সোজা রেখে দাঁড়িয়ে কাজগুলো করা গেলে এমন সমস্যা এড়ানো সম্ভব। তাই এমন যন্ত্র সবারই প্রয়োজন, মেরুদণ্ড সোজা রেখেই যা ব্যবহার করা যায়। এগুলো বিলাসিতা না। ধোঁয়াতেও বাড়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি। তাই বিকল্প চুলার ব্যবস্থা করাও প্রয়োজন।
এমন কিছু যন্ত্র এবং অনুষঙ্গের কথা জেনে নেওয়া যাক, যেগুলো রান্নার কাজকে সহজ করে, কমায় স্বাস্থ্যঝুঁকি।
ইনডাকশন চুলা
মাটির চুলার চেয়ে গ্যাসের চুলায় ধোঁয়া কম হয়। তবে অনেক এলাকাতেই গ্যাসের চাপ কম থাকে বলে ঠিকঠাক রান্না করা যায় না। বিকল্প হিসেবে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহারও সব ক্ষেত্রে খুব একটা ভালো সমাধান না। কারণ, সরবরাহকৃত গ্যাসে রান্নার চুলা আর সিলিন্ডার গ্যাসে রান্নার চুলা আলাদা। এ ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে ইনডাকশন চুলা। এই চুলায় তুলনামূলক কম ঝক্কিতেই রান্না সারা যায়। তবে এই চুলায় রান্নার জন্য অবশ্যই নির্দিষ্ট ধরনের পাত্র ব্যবহার করতে হবে।
আরও যত কুকার
রান্নার জন্য বিভিন্ন ধরনের কুকার কাজে লাগাতে পারেন। প্রেশার কুকারের সাহায্যে চুলাতেই কম সময়ে রান্না করা সম্ভব। খাবার সেদ্ধ করার কাজটা বেশ সহজেই হয়ে যায়। নরম তুলতুলে কেকও তৈরি করা যায়। রাইস কুকার ও কারি কুকারে রান্না হয়ে ওঠে নিতান্তই সহজ এক কাজ। রাইস কুকারে যে কেবল ভাতই রান্না করা যায়, তা নয়। এতে তরিতরকারিও রান্না করা যায়। আবার কারি কুকারেও রান্না করা যায় ভাত। কিছু কুকারে ভাপে রান্নার ব্যবস্থাও থাকে। সহজে রান্নার জন্য বাজারে আরও আছে ডিজিটাল মাল্টিকুকার।
ওভেন
বৈদ্যুতিক ওভেন এবং মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম করা ছাড়াও নানান রকম পদ রান্না করা যায়। তবে নির্দিষ্ট ধরনের পাত্র ও প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট ধরনের ঢাকনা ব্যবহার করতে হবে। ওভেনের গরম জিনিস ধরার জন্য বিশেষ ধরনের গ্লাভসও ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়।
ওভেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র জন য ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।