নগর পত্তনের চিহ্ন থাকে নদীর কাছে। পূতি গন্ধময়, কালো পানির বুড়িগঙ্গার বাঁকে এমন এক ইতিহাসের গল্প হচ্ছে ‘ভাসমান বোর্ডিং’। বাংলাদেশে ভাসমান বোর্ডিং ব্যবসার বয়স এখন ৫৯ বছর। বারো মাস পানির ওপর ভেসে থাকা লঞ্চ আকৃতির এই বোর্ডিংয়ে ঠাঁই পান নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী, বিপদাপন্ন অথবা অভিমানে একা হওয়া মানুষেরা। জনপ্রতি দিনের খরচ ৫০ থেকে ১৫০ টাকা। রাজধানীর মিটফোর্ড ঘাটে বর্তমানে আছে এমন চারটি বোর্ডিং। আরেকটি পরিত্যক্ত হয়ে আটকে আছে বুড়িগঙ্গার শুকনো পাড়ে। এসব বোর্ডিংয়ে উঠতে হয় শহর রক্ষা বাঁধ থেকে অনেকটা ঢালুতে নেমে, বাঁশের সাঁকো ধরে।

বুড়িগঙ্গা বোর্ডিংয়ের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোস্তফা বললেন, ভাসমান বোর্ডিংয়ের বাসিন্দাদের জীবন চলে ঘাটে লঞ্চ ভেড়ার সময়সীমার সঙ্গে মিলিয়ে। অধিকাংশই ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা ও হকার। তবে দূর থেকে মিটফোর্ড হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা সংগতিহীন স্বজনেরাও আসেন থাকতে। গত শতকের ষাটের দশকে লালকুঠির শ্যামবাজার ঘাটে শুরু হওয়া এই ব্যবসা সময়ে সময়ে ঠাঁই পেয়েছে বুড়িগঙ্গার ভিন্ন ভিন্ন ঘাটে।

কারা থাকেন, কত খরচ

বাঁধের সরু জায়গায় দাঁড়িয়ে মনে হবে যেকোনো সময় হুইসেল বাজিয়ে লঞ্চ ছেড়ে দেবে। আদতে এটা স্থির কাঠামো। লঞ্চের মতো এ জায়গায় ভাড়াটে বাসিন্দারা দোতলার খোলা ছাদে দড়ি টাঙিয়ে জামাকাপড় শুকাতে দিয়েছেন। তবে বোর্ডিংয়ে উঠে ভেতরে পা বাড়ালেই চেপে ধরবে অন্ধকার। লম্বা সরুমতো একটা পথ যাতায়াতের। দুপাশ দিয়ে ছোট ছোট ঘরের দরজা। এসব ঘরই কেবিন, যার ভাড়া ১২০ থেকে ১৫০ টাকা করে।

মাথা নিচু করে সেসব দরজা দিয়ে প্রবেশ করতেই বিছানা শুরু। ঘরের সীমানাও শেষ তোশকের শেষ কোনায়। মাথার ওপর একটা বাল্ব জ্বলে যেন অন্ধকারকে আরও ডেকে আনছে। আছে মুঠোফোন চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা। সিলিং ফ্যানের ভাবনা দূরস্থান। তবে শীতকালে দরকারও হয় না। এখানে ঢালাই বিছানাতেও থাকার ব্যবস্থা আছে। সেখানে খরচ ৫০ টাকা করে। এত কম মূল্যে ঢাকা শহরের আর কোথাও থাকার ব্যবস্থা সম্ভবত নেই। প্রতিটি লঞ্চে ৫০ থেকে ৬০ জন করে থাকার ব্যবস্থা আছে।

এসব বোর্ডিংয়ে উঠতে হয় শহর রক্ষা বাঁধ থেকে অনেকটা ঢালুতে নেমে, বাঁশের সাঁকো ধরে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে

৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।

আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫

৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।

প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।

পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।

আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—

পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’

আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ