জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর অনুবিভাগের রাজস্ব আহরণ ও অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। এ সভায় সাধারণত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরাসরি ও ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়ার সুযোগ আছে। গতকাল রোববার আয়োজিত সভায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমে যোগ দেওয়া আইডিগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ও স্টারলিংকের মালিক ইলন মাস্কের নামে কয়েকজনকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এছাড়াও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি, মায়ের দোয়া স্যানিটারিসহ বিভিন্ন নামে আইডি খুলেও অংশ নিয়েছেন কেউ কেউ। সভা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। 

এ বিষয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলেন, সম্প্রতি এনবিআর বিলুপ্ত করে দুই ভাগে বিভক্ত করে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ওই বিষয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান কোনো কথা বলেন কিনা তা জানতে ‘ভুয়া’ নামে অংশ নিয়েছেন কেউ কেউ। আবার কর্মকর্তাদের একটা অংশের ধারণা- আন্দোলনকারীরা এনবিআরের চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাই অনেকেই অংশ নেননি। সেজন্য সভায় বেশি অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেশি দেখাতে ভুয়া আইডি খোলা হতে পারে বলেও ধারণা কারও কারও।   

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ভেঙে আলাদা করে অধ্যাদেশ জারির পর থেকে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে আন্দোলনে নামেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত ১২ মে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয় ২৫ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অধ্যাদেশটি সংশোধনের আশ্বাস দেয়। এরপর আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে তাকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেয় ঐক্য পরিষদ। টানা ১০ দিন ঈদের ছুটির পর রোববার রাজস্ব সভা অনুষ্ঠিত হয়। মাসিক এই সভায় রাজস্ব আহরণের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। 

সভায় সশরীরে অংশ নেন এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান, কর বিভাগের সদস্য ও কমিশনাররা। বাকি র্কমকর্তারা ভার্চুয়ালি অংশ নেন। এতে কেউ নামে বা কেউ সংশ্লিষ্ট কমিশনারেটের নাম ব্যবহার করে যুক্ত হন। চার শতাধিক অংশগ্রহণকারীর অনেকে ভুয়া নাম ব্যবহার করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইলন মাস্ক, তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি, মায়ের দোয়া স্যানিটারি, স্যামসাং ও আইফোনের বিভিন্ন মডেলের নাম, বিভিন্ন সালের নাম ও নানা ধরনের সংখ্যা দিয়ে সভায় অংশ নেন অনেকে।

জানা গেছে, এই সভায় অংশ নিতে গত ৪ জুন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে এনবিআরের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদের দপ্তর থেকে। ওই চিঠিতে বলা হয়, আয়কর বিভাগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কর্মকৌশল বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং মে মাস পর্যন্ত রাজস্ব আহরণ পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সকাল সাড়ে ১০টায় এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে মাসিক রাজস্ব সভা অনুষ্ঠিত হবে। এনবিআরের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে আয়কর বিভাগের সব সদস্য, কর কমিশনার ও মহাপরিচালকরা উপস্থিত থাকবেন। সভায় আয়কর বিভাগের সব কর কমিশনার ও মহাপরিচালক সশরীরে এবং সব রেঞ্জ কর্মকর্তা ও সার্কেল কর্মকর্তারা ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমে অংশ নেবেন।

আন্দোলনে যুক্ত আছেন এনবিআরের এমন কিছু কর্মকর্তার অভিযোগ, অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে এখন তাকে অসহযোগিতা করছেন কর্মকর্তাদের একাংশ। তাই জুমে বেশি উপস্থিতি দেখাতেই এমনটা করা হতে পারে। 

এ বিষয়ে এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ সমকালকে বলেন, ‘সভায় অংশ নেওয়ার জন্য ট্রাম্প বা ইলন মাস্ক এমন কাউকে তো চিঠি দেওয়া হয়নি। এ ধরনের সভা প্রতি মাসে হয় এবং এভাবেই হয়। সভায় যাদের অংশ নেওয়ার কথা, তাদেরকেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে তো কারো কাছে এই চিঠি যাওয়ার কথা নয়। কারা এ ধরনের নাম ব্যবহার করেছেন কিংবা কেন করেছেন সেটি আপনারা খুঁজে বের করতে পারেন।’

জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান মো.

আবদুর রহমান খান সমকালকে বলেন, এটা কেন করা হয়েছে সেটি তার জানা নেই।

সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসের আয়কর খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের চিত্র তুলে ধরা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনব আর ইলন ম স ক কর মকর ত দ র র কর মকর ত কর ব ভ গ র ইলন ম স ক সদস য ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার যেভাবে হলে ভালো হয়

অন্তর্বর্তী সরকার গত ১২ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করে ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড’ (এনবিআর) এবং ‘অভ‍্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ’ (আইআরডি)-এর বিলুপ্তি ঘোষণা করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুটি নতুন বিভাগ– ‘রাজস্বনীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ গঠনের প্রস্তাব করেছে। তবে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিপুল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে সরকার গত ২২ মে পুরো সংস্কার প্রস্তাবটি  স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। সরকার অংশীজনের সঙ্গে আরও আলোচনা করে তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে।

দেশের মোট রাজস্বের ৯১ ভাগই কর-রাজস্ব, যার প্রায় পুরোটাই আদায় করে এনবিআর। সে কারণে এনবিআরের সংস্কার এত গুরুত্বপূর্ণ।
পৃথিবীর বহু দেশেই রাজস্বনীতি প্রণয়ন এবং রাজস্বনীতি বাস্তবায়ন বা ব‍্যবস্থাপনার দায়িত্ব পৃথক সংস্থার হাতে আছে; উভয়ের মধ‍্যে একটি বিভাজন বা ‘চেক অ্যান্ড ব‍্যালান্স’ থাকে।  রাজস্বসংক্রান্ত আইন যেমন– শুল্ক আইন, আয়কর আইন তেমনি অর্থ আইন সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান যেমন– আয়কর ও শুল্কবিধি, সময়ে সময়ে জারিকৃত স্ট‍্যাটিউটরি রেগুলেশনস অর্ডার (এসআরও) এবং বিভিন্ন ধরনের করের হার নির্ধারণ রাজস্বনীতির অন্তর্ভুক্ত। অন‍্যদিকে, এসব কর আইন ও বিধিবিধানের প্রয়োগ এবং রাজস্ব আদায় করা রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার অংশ। প্রায় সব দেশেই রাজস্বনীতি প্রণয়নের দায়িত্বটি থাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের হাতে এবং এই নীতি বাস্তবায়ন বা ব‍্যবস্থাপনার দায়িত্বটি পালন করে সেই মন্ত্রণালয়েরই অধীন কোনো কার্যনির্বাহী বিভাগ/অধিদপ্তর বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা (স্ট‍্যাটিউটরি বডি)। এটি লোক প্রশাসনের মৌলিক নীতি-ব‍্যবস্থাপনা বিভাজনের স্বীকৃত পন্থার ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং তা সব সেক্টরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ‍্য।

বাংলাদেশে কর বা রাজস্বনীতি প্রণয়নের দায়িত্ব (অন্তত তাত্ত্বিকভাবে) পালন করে আসছিল অর্থ মন্ত্রণালয়েরই একটি অংশ ‘অভ‍্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ’, যদিও বাস্তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তারাই খসড়া আইন, বিধিবিধান, এসআরও এবং কর প্রস্তাব তৈরি করে তা আইআরডিতে প্রেরণ করে থাকে। অন‍্যদিকে, রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনা অর্থাৎ রাজস্বনীতির প্রয়োগ এবং রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব সরাসরি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডই পালন করে আসছে। রাজস্বনীতি এবং রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার মধ‍্যে কোনো বিভাজন বা ‘চেক অ্যান্ড ব‍্যালান্স’ নেই– সেটি বলা যায় না।

এদিক থেকে করনীতি ও কর ব‍্যবস্থাপনার বিভাজন বাংলাদেশের জন্য নতুন কোনো সংস্কার বা অনন‍্য বিষয় নয়। নতুন প্রস্তাবে রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার দায়িত্ব বর্তমানের সংবিধিবদ্ধ সংস্থা ‘এনবিআর’-এর স্থলে প্রস্তাবিত ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’কে (যা অর্থ মন্ত্রণালয়েরই একটি অংশ) দেওয়া হয়েছে, যা কার্যত ‘সোনার পাথর বাটি’ বলে মনে হয়। কারণ মন্ত্রণালয়ের তো নীতিনির্ধারণের কাজই করার কথা। পৃথিবীর কোনো দেশেই রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্থ মন্ত্রণালয় বা অন‍্য কোনো মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকে না। এটি থাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন এক বা একাধিক কার্যনির্বাহী সংস্থা যেমন– সরকারি বিভাগ/অধিদপ্তর বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার হাতে। প্রস্তাবিত সংস্কার বাস্তবায়ন করা হলে রাজস্বনীতি এবং রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার মধ‍্যে যেমন সমন্বয় কঠিন হয়ে পড়বে (কারণ কেউ কারও অধীন মেনে নেবে না), তেমনি রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনা ও রাজস্ব আদায় আরও জটিল হয়ে পড়বে। কারণ এতে ব্যবস্থাপনার মধ্যে অতিরিক্ত আরও একটি স্তর বাড়বে, শীর্ষ ব‍্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এবং মাঠ পর্যায়ের ইউনিটগুলোর বর্তমান সহজ আন্তঃসংযোগ কঠিন হয়ে পড়বে এবং শীর্ষ ব‍্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে আমলাতান্ত্রিক ব‍্যবস্থা ও ভাবধারার উদ্ভব ঘটবে। তবে ‘রাজস্বনীতি প্রণয়ন ও রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনা’র সংস্কারগুলো নিম্নরূপ হতে পারে বলে আমি মনে করি:
এক. রাজস্ব ব‍্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটির স্থলে দুটি বোর্ড গঠন: বর্তমানের একটি রাজস্ব বোর্ডের স্থলে দুটি রাজস্ব বোর্ড বা সংস্থা গঠন করা যায়-(ক) একটি প্রত‍্যক্ষ করের (আয়কর) জন‍্য, (খ) অপরটি পরোক্ষ করের (শুল্ক, ভ‍্যাট ইত‍্যাদি) জন‍্য, ভারতে যেমন আছে। অনেকেই মনে করেন, দুটি বোর্ডের মধ‍্যে আয় বাড়ানোর জন‍্য প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে এবং কর ব‍্যবস্থাপনা অধিকতর লক্ষ‍্যভিত্তিক হবে। অন্যদিকে এনবিআরে আগে থেকেই উক্ত দুই দিকেই পর্যাপ্ত এবং সমসংখ‍্যক সদস‍্য থাকায় দুটি বোর্ড গঠিত হলে কোনো ব‍্যয় বাড়বে না। ভারতের মতো এই সংস্থা দুটির প্রধান হবেন যথাক্রমে বিসিএস আয়কর এবং বিসিএস শুল্ক ক‍্যাডারের জ‍্যেষ্ঠ‍তম কর্মকর্তা এবং তাদের সরকারের একজন সচিবের পদমর্যাদা দেওয়া যেতে পারে। বোর্ডের অন‍্য সদস‍্যরা জ‍্যেষ্ঠ‍তার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ক‍্যাডার হতে নিয়োগ পাবেন। 

দুই. এনবিআরে বেসরকারি খাত থেকে 
অ-নির্বাহী সদস‍্য নিয়োগ বা পরামর্শ কমিটি গঠন : এনবিআরের স্থলে যদি প্রত‍্যক্ষ ও পরোক্ষ করের জন‍্য দুটি পৃথক বোর্ড গঠন করা হয়, তবে কর্ম-সম্পাদনে সাফল‍্য, দক্ষতা, করদাতাদের সেবা প্রদান, কর্ম-কৌশল এবং ঝুঁকি ব‍্যবস্থাপনা ইত‍্যাদি বিষয়ে বোর্ডকে পরামর্শ দেওয়ার জন‍্য বোর্ডের অধীনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, পেশাজীবী এবং বেসরকারি খাতের নির্বাহীদের বোর্ডের অ-নির্বাহী সদস‍্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। বিকল্প হিসেবে তাদের নিয়ে বোর্ডের পরামর্শ কমিটি গঠন করা যেতে পারে। তবে করনীতি প্রণয়ন এবং কোনো ব‍্যক্তি-বিশেষ বা প্রতিষ্ঠানের কর নির্ধারণ বিষয়ে অ-নির্বাহী সদস‍্যদের অথবা পরামর্শ কমিটির সদস‍্যদের পরামর্শ দেওয়ার কোনো ক্ষমতা থাকবে না।

সিঙ্গাপুরের ‘ইনল‍্যান্ড রেভিনিউ অথরিটি অব সিঙ্গাপুর’-এর উপদেষ্টা বোর্ডে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রয়েছেন। ‘সিঙ্গাপুর কাস্টমস’-এর পরামর্শক কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ‍্যালয়ের শিক্ষক, পোর্ট অথরিটি, এয়ারলাইনস, লজিস্টিকস কোম্পানি এবং ফ্রেইট অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধিরা উপদেষ্টা পরিষদে অ-নির্বাহী সদস‍্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। যুক্তরাজ‍্যে এইচএমআরসি পরিচালনার জন‍্যও একটি বোর্ড রয়েছে এবং এতে বেসরকারি খাতের বেশ কয়েকজন পেশাজীবী অ-নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত আছেন। বোর্ডের অ-নির্বাহী পরিচালক পদে কর, অ‍্যাকাউন্ট্যান্সি, তথ‍্যপ্রযুক্তি, মানবসম্পদ ব‍্যবস্থাপনা, ইত‍্যাদি বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পেশাজীবী এবং বেসরকারি খাতের নির্বাহীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। বেসরকারি খাতের পরিচালকদের সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা এবং পেশাদার ব্যাকগ্রাউন্ড বোর্ডের পরামর্শের জন্য একটি বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসে এবং তাতে বোর্ডের কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও কর্ম-কৌশল নির্ধারণে গুণগত পরিবর্তন আশা করা যায়।
তিন. ‘রাজস্বনীতি বিভাগ’ কীভাবে গঠিত হওয়া উচিত: ‘রাজস্বনীতি বিভাগ’ মূলত কাস্টমস ও আয়কর এবং অর্থ ব‍্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন‍্য ক্যাডার সদস‍্যদের দ্বারা গঠিত হওয়া উচিত। কারণ, এটি একটি অত্যন্ত বিশেষায়িত কাজ, অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর মতো নয়। সাধারণ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পক্ষে রাজস্বনীতি কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনা করা সহজ হবে না, কারণ এটির জন্য প্রয়োজন বিশেষজ্ঞ জ্ঞান এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা। তবে সেই সঙ্গে বাজার থেকে অর্থনীতিবিদ ও অন্য পেশাজীবীদেরও ‘রাজস্বনীতি বিভাগে’ আনতে হবে। এই জনবল নীতির পাশাপাশি, ‘রাজস্বনীতি বিভাগ’কে পরিকল্পনা কমিশনের মতো একটি বিশেষ স্বাধীন সংস্থার আদলে পরিচালিত হতে হবে এবং এর গঠন কাঠামো ফ্ল্যাট বা সমতল হতে হবে, যেখানে একাধিক সদস্য সমান পদমর্যাদা ও অবস্থানে থাকবেন। এটি যেন সচিব, অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্ম সচিব ইত্যাদির মতো আমলাতান্ত্রিক ও পদসোপান-ভিত্তিক (হায়ারার্কিকেল) কাঠামোতে পরিণত না হয়।

ফিরোজ আহমেদ: সদস্য, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন; সাবেক কর্মকর্তা, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক
firozlxp@gmail.com

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনবিআরের সভায় ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প’,‘ইলন মাস্ক’, ‘মায়ের দোয়া স্যানিটারি’, ‘ডিম ব্যবসায়ী সমিতি’
  • দেশে ১৪ দিনে এল ১১৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স
  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার যেভাবে হলে ভালো হয়