শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে মাদরাসা ছাত্র ইয়াসিন হত্যার বিচার চেয়েছে উপজেলা বিএনপি। তাদের দাবি, ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের দোসররা তাকে হত্যা করেছে।

সোমবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় ভেদরগঞ্জ উপজেলা চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানান উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান তালুকদার রতন। 

তিনি বলেন, “ইয়াসিন আহমেদ ফারদিন কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী ছিল না। সে মাদরাসার ছাত্র ছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে আওয়ামী লীগের দোসররা হত্যা করেছে। এটা ছিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও আধিপত্য বিস্তারের ধারাবাহিকতা।” 

আরো পড়ুন:

লঞ্চের ডেকে টাকা তুলছিলেন বিএনপির কর্মী, যাত্রীদের পিটুনি

‘দুর্বল যারা, তারাই পুলিশের ওপর সওয়ার হয়’

তিনি বলেন, “আমরা এই নির্মম হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, “হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের পরিচয় স্থানীয়রা জানেন। আওয়ামী লীগের দোসররা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। একটি পক্ষ এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতে বিএনপিকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছে। আমরা চাই, প্রশাসন তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুক।” 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল হাশেম ঢালী, মো.

আসলাম হোসেন মাঝী, বি.এম মোস্তাফিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হানিফ মাহমুদ ছৈয়াল, আখতার হোসেন রাড়ী, মো. দুলাল সরদার, আনিসুর রহমান স্বপন সরদার, ভেদরগঞ্জ পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সেকান্দার তালুকদার, মিন্টু বেপারি, আলম চৌকিদার, সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক বেপারি।

স্থানীয় সূত্রে জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ জুন (বৃহস্পতিবার) রাতে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায ইয়াসিনসহ অন্তত ১০ জন গুরুত্বর আহত হন। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ইয়াসিনকে প্রথমে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকার অরোরা স্পেলাইজড হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

রবিবার (১৫ জুন) সকালে জানাজা শেষে ইয়াসিনকে ভেদরগঞ্জ পৌরসভার গৈড্যায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ল গ র দ সরর ভ দরগঞ জ ব এনপ র র রহম ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়েছে। বিলীন হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ জমি। বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন নদীতে বিলীন হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার বিকেলে ভবনটির একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চরে অবস্থিত। ইউনিয়নটির একদিকে মুন্সিগঞ্জ ও আরেক দিকে চাঁদপুর জেলা। ওই এলাকাটির চার দিক দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মাথাভাঙা চরবানিয়াল গ্রামে ৪০০ পরিবারের বসবাস। ওই গ্রামের বাসিন্দারা নদীতে মাছ শিকার ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ কম। এ ছাড়া গ্রামটিতে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। ২০১৭ সালে ওই গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। পরের বছর ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়। একতলা একটি পাকা ভবনের চারটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। সোমবার বিকেলে বিদ্যালয় ভবনের একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে।

আরও পড়ুনযেকোনো সময় পদ্মায় বিলীন হতে পারে শরীয়তপুরের বিদ্যালয়টি১৯ ঘণ্টা আগে

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা জানান, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। এ বছরের জুন মাসে সেই বালুর বস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবনটি রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনের কবল থেকে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের মুখে পড়লে ৪ সেপ্টেম্বরের থেকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোববার বিদ্যালয়ের আসবাব ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে উত্তর মাথঅভাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে