বিদেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণসহ ৯ বিষয়ে সুপারিশের জন্য ১১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রোববার ‘বাংলাদেশিদের বিদেশে নিয়োগ–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। একই প্রজ্ঞাপনে ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল জারি হওয়া প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটিতে ১১ জন উপদেষ্টা রয়েছেন। তাঁরা হলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। আগের সরকারের একই কমিটি ছিল ১৩ সদস্যের।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, অর্থসচিবসহ ১৬ জন সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হচ্ছেন কমিটির সহায়তাদানকারী কর্মকর্তা। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। কমিটি প্রয়োজন অনুযায়ী বৈঠক করবে এবং চাইলে নতুন সদস্য যুক্ত করতে পারবে।

কমিটির কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে বিদেশে জনশক্তি নিয়োগসংক্রান্ত কাজের সমন্বয়, শ্রমবাজার সম্প্রসারণ ও নতুন শ্রমবাজার অন্বেষণের দিকনির্দেশনা, বৈদেশিক কর্মসংস্থানসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, অভিবাসী কর্মীদের সামগ্রিক কল্যাণ, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দক্ষতা উন্নয়ন, বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানো ইত্যাদি ৯ ধরনের বিষয়ে সুপারিশ তৈরি করা। ২০২৪ সালের কার্য পরিধি যা ছিল, গতকালের কার্যপরিধিও একই। দুই কার্যপরিধিতে দাঁড়ি, কমা ও সেমিকোলনের কোনো পরিবর্তন নেই।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বিদেশে তিন লাখ কর্মীর কর্মসংস্থান কমে গেছে। কারণ, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান—এ তিন শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে। বড়দের মধ্যে টিকে আছে শুধু সৌদি আরবের শ্রমবাজার।

বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, করোনা চলাকালীন ২০২১ সালে বিভিন্ন দেশে কাজ করতে গেছেন ৬ লাখ ১৭ হাজার কর্মী। ২০২২ সালে গেছেন ১১ লাখের বেশি। ২০২৩ সালে গেছেন আরও বেশি অর্থাৎ ১৩ লাখ। তবে ২০২৪ সালে ৩ লাখ কমে ১০ লাখে দাঁড়ায়। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই গেছেন ৫ দেশে। এগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

জানা গেছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ ২০২৪ সালের জুন থেকে। ওমানে ২০২৩ সালে গিয়েছিলেন যেখানে সোয়া লাখের বেশি, ২০২৪ সালে গিয়েছেন মোটে ৩৫৮ জন। একই অবস্থা সংযুক্ত আমিরাতেও। এ দেশে ২০২৩ সালে কর্মী গিয়েছিলেন প্রায় ১ লাখ, আর ২০২৪ সালে গেছেন অর্ধেকের কম অর্থাৎ ৪৭ হাজার। তবে সৌদি আরবে ২০২৩ সালে প্রায় ৫ লাখ কর্মী গেলেও ২০২৪ সালে গেছেন সোয়া ৬ লাখ।

সূত্রগুলো জানায়, সরকারিভাবে ১৬৮টি দেশে কর্মী পাঠানোর দাবি করা হলেও ২০২৪ সালে ১৩৫টি দেশে কর্মী গেছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ দেশে কর্মী গেছেন নামমাত্র। যেমন ১৪টি দেশে কর্মী গেছেন একজন করে। ১৪টি দেশে গেছেন দুজন করে। ১০ হাজার কর্মী গেছেন, এমন দেশ ৮টি। আর লাখের বেশি কর্মী পাঠানো দেশ শুধু সৌদি আরব।

কমিটির নাম ‘বাংলাদেশিদের বিদেশে নিয়োগসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’ রাখা হলো কেন এবং ‘নিয়োগ’ শব্দটিই রাখার উদ্দেশ্য কী—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা জানান, নিয়োগের বদলে এটা হওয়া উচিত ‘কর্মসংস্থানের সুযোগ’। কিন্তু মন্ত্রীদের বদলে উপদেষ্টাদের নাম বসানো ছাড়া আগের প্রজ্ঞাপন থেকে হুবহু সব নেওয়ার কারণে ঘটনাটি এমন হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন উপদ ষ ট র উপদ ষ ট শ রমব জ র ২০২৪ স ল ২০২৩ স ল র কর ম মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা

অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।

সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কলকাতায় বাংলাদেশি অভিনেত্রী গ্রেপ্তার , দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমের
  • কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী
  • ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে ভারত, একাদশে চার পরিবর্তন
  • কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পাঁচ প্রকৌশলী ও এক স্থপতি বরখাস্ত
  • গণপূর্ত অধিদপ্তরের ৫ প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের স্থপতি বরখাস্
  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
  • দলবদলের বাজারে চেলসিই রাজা, শীর্ষ দশে আর কারা
  • গাজায় হামলার নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের সঙ্গে কেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এসব দেশ
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়ালো
  • সরকারি পলিটেকনিকে ভর্তি: ২০২৩, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে এসএসসি উত্তীর্ণদের সুযোগ