ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতির সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্ট সামনে আসার পর মার্কিন পররাষ্ট্র সদর দপ্তর পেন্টাগন একজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে পেন্টাগন।

অপসারিত এই সেনা কর্মকর্তা হলেন কর্নেল নাথান ম্যাক্করম্যাক। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের জে৫ স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং ডিরেক্টরটের লেভান্ত (ভূমধ্যসাগরের পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চল) ও মিসর শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

ম্যাক্করম্যাক নামের সঙ্গে আংশিক মিল থাকা একটি এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টের বিষয়ে মঙ্গলবার জিউইশ নিউজ সিন্ডিকেটের (জেএনএস) একটি খবর প্রকাশের পরপরই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ওই ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে অন্যান্য বক্তব্যের পাশাপাশি ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিত্র’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।

পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তা জেএনএস-কে বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় তিনি আর জয়েন্ট স্টাফ থাকবেন না। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রতিরক্ষা দপ্তর এসব পোস্টের বিষয়বস্তু এবং এর প্রভাবের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করছে।

জেএনএস প্রথম এক্সে দেওয়া এসব পোস্টের বিষয়ে খবর প্রকাশ করে। পরে মিডল ইস্ট আই পোস্টগুলোর বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করে। বর্তমানে আর্কাইভ করে রাখা এই পোস্টগুলোতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুরও সমালোচনা করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই পোস্টগুলো দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনইরানে হামলা নিয়ে ট্রাম্প শিবিরে বিভক্তি, যুক্তরাষ্ট্রও কি সংঘাতে জড়িয়ে পড়বে১৫ জুন ২০২৫

ম্যাক্করম্যাক এসব পোস্টে নেতানিয়াহু এবং তাঁর মিত্রদের ‘ইহুদি-শ্রেষ্ঠত্ববাদী ঘনিষ্ঠ সহযোগী গোষ্ঠী’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তাঁরা ‘ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করতে এবং “এরেৎজ ইসরায়েল” (ইসরায়েলি ভূখণ্ড) থেকে জাতিগত ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করতে চান’ বলেও অভিযোগ করেন।

মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, পোস্টগুলোতে ইসরায়েলের ‘খারাপ আচরণে’ মদদ দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমা দেশগুলো হলোকাস্টের অপরাধবোধ থেকে ইসরায়েলের সমালোচনা করা থেকে অনেক দূরে থাকে।’

ম্যাক্করম্যাক আরও লিখেছন, কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলের কার্যকলাপ জাতিগত নির্মূল এবং গণহত্যার অভিযোগের জন্ম দিয়েছে। এ ছাড়া গত বছরের জুনের পর থেকে ইসরায়েলকে ‘খুনোখুনি প্রিয় গোষ্ঠী’ বলে মন্তব্য করে আসছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনইরানে হামলা চালাতে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানে বড় পরিবর্তন আনল ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র১৫ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম য ক করম য ক য ক তর ষ ট র কর মকর ত এসব প ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভোট দিলাম সন্দ্বীপে, এমপি পেলাম মালদ্বীপে’ বনাম ‘যার যত ভোট, তার তত আসন’

গ্রামীণ একটি পরিবেশে তিন ব্যক্তি বসে আলাপ করছেন। একজন জিজ্ঞাসা করছেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনটা কেমন হয়?’ পাশেরজন উত্তর দিচ্ছেন, ‘ভোট দিলাম সন্দ্বীপে, এমপি পেলাম মালদ্বীপে।’ এরপর তিনজনই হেসে উঠলেন। ভিডিওর মানুষগুলো কোনো বাস্তব চরিত্র নন। তাদের তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে।

আরেক ভিডিওতে এক এআই চরিত্র বলছে, ‘আনুপাতিক মানে যার যত ভোট, তার তত আসন।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির পক্ষে-বিপক্ষে নানা প্রচারণা দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই প্রচারণার অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও। তথ্য যাচাইয়ের (ফ্যাক্ট চেক) উদ্যোগ ডিসমিসল্যাবের সম্প্রতি এসব ভিডিও নিয়ে এক গবেষণায় এ কথা জানিয়েছে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ১৩টি ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে ডিসমিসল্যাব। তাদের গবেষণা বলছে, ভিডিওগুলোর মধ্যে অনেকগুলো তৈরি করা হয়েছে গুগলের ভিডিও তৈরির টুল ‘ভিও’ দিয়ে। এসব ভিডিওর মধ্যে পিআর পদ্ধতির পক্ষে ৩টি এবং বিপক্ষে ১০টি ভিডিও রয়েছে।

পিআর পদ্ধতির পক্ষে যা বলা হচ্ছে

ডিসমিসল্যাব বলছে, একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক এআই চরিত্র পিআর পদ্ধতির পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে বলে, ‘আনুপাতিক মানে যার যত ভোট, তার তত আসন।’ উত্তরে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘ও, তাই নাকি? এইটা তো ইনসাফ।’ ৩০ জুনের আরেকটি ভিডিওতে এআই দিয়ে তৈরি এক তরুণ ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে আলাপচারিতা দেখা যায়। শুরুতে তরুণ বলে, ‘দাদা, আমি প্রত্যেকবার ভোট দিই, কিন্তু আমার ভোটটা নষ্ট হয়ে যায়।’ উত্তরে অপর ব্যক্তি বলেন, ‘কারণ, আমরা পিআর সিস্টেমে ভোট দিচ্ছি না। যদি পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হয়, প্রতিটি ভোটের হিসাব থাকে, প্রতিটি দল সংসদে অংশ পায়।’

বিপক্ষে যেসব যুক্তি

পিআর পদ্ধতির নির্বাচনী ব্যবস্থার বিপক্ষের ভিডিওগুলোর বেশির ভাগই ব্যঙ্গাত্মকভাবে তৈরি বলে জানিয়েছে ডিসমিসল্যাব। পিআর পদ্ধতির পক্ষে পোস্ট হওয়া ভিডিওগুলোর প্রতিটিতে একাধিক দৃশ্য দেখা গেলেও, এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে হওয়া ভিডিওগুলোতে একক দৃশ্য দেখা যায়।

১ জুলাইয়ের একটি ভিডিওতে ডিসমিসল্যাব দেখেছে সেখানে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘অযোগ্যরা করছে জোট, পিআর পদ্ধতিতে দিতে ভোট । ভোট দিব নোয়াখালী, এমপি হবে পটুয়াখালী।’ ভিডিওটির নিচে ডান কোণে ‘ভিও’র লোগো দেখা গেছে।

ডিসমিসল্যাব বলছে, এসব ভিডিওর মাধ্যমে এমন যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে একটি নির্দিষ্ট আসনের ভোটাররা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচন করতে পারবেন না। রাজনৈতিক দল তাদের মোট প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে এলাকার সংসদ সদস্য নির্বাচন করে দেবে।

২ জুলাইয়ের ভিডিও বিশ্লেষণ করে ডিসমিস্যল্যাব দেখেছে, সেখানে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে এইচএসসি পরীক্ষায় কোনো বিষয়ে ফেল করার পরও মোট নম্বরের ভিত্তিতে পাস হয়ে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করে ব্যঙ্গ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলো আসনভিত্তিক কোনো প্রার্থী থাকবেন না। ভোটাররা দলীয় প্রতীকে ভোট দেবেন। একটি দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সে অনুপাতে সংসদের আসন বণ্টন করা হবে।

আরও পড়ুনআলোচনায় আনুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন১৫ অক্টোবর ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে দুই প্রস্তাব
  • বৃষ্টির প্রেমে তিশা ও কিছু ছবি
  • ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুই কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি মাহমুদ খালিলের
  • কে এই সারা অর্জুন
  • একজন বিবাগি
  • চিড়া–বাদাম বেচেন কুদ্দুস, বাড়িতে হাজারো বই আর অডিও
  • জবিতে দুই শিক্ষক ও বাগছাসের নেতাদের উপর ছাত্রদলের হামলা
  • দাখিলে দেশসেরা ঝালকাঠির এনএস কামিল মাদ্রাসা
  • সিনেটে ট্রাম্পের পছন্দের ব্যক্তিকে নাকানি-চুবানি
  • ‘ভোট দিলাম সন্দ্বীপে, এমপি পেলাম মালদ্বীপে’ বনাম ‘যার যত ভোট, তার তত আসন’