বাজেটের প্রায় ৩৫ ভাগ চলে যাবে সুদ এবং আমলাতন্ত্র পুষতে: ফরহাদ মজহার
Published: 19th, June 2025 GMT
এই লেখক বলেন, ‘বাজেটের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা দিয়ে দিচ্ছি সুদ এবং আমলাতন্ত্রকে পোষার জন্য। এই আমলাতন্ত্র উৎপাদনে, অর্থনীতিতে কোনো অবদান রাখে না, উল্টো বাধা দেয়। বাজারব্যবস্থার স্বতঃস্ফূর্ত গতিশীলতাকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ঢোকার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে আমলাতন্ত্র। সেই আমলাতন্ত্রের খরচের সঙ্গে সুদের পরিমাণ যোগ করলে বাজেটের প্রায় ৩৫ ভাগ টাকা দিয়ে দিতে হচ্ছে।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত বাজেট সংলাপ ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার এ কথাগুলো বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর কালোটাকা সাদা হয় কোন যুক্তিতে, প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, কালোটাকাকে সাদা করার সুযোগ বন্ধ করতে হবে। গণ–অভ্যুত্থানের পর এই সুযোগ রাখার কোনো যুক্তি নেই।
ফরহাদ মজহার বলেন, এই সরকার সেই অর্থে ক্ষমতাধর সরকার নয়। ফলে অনেক জিনিস চাইলেই তারা করতে পারবে না। তাই এই সরকারের কাছ থেকে বড় কোনো বাজেট প্রত্যাশা করা হয়নি। বেশি কিছু আশা করাও ঠিক হবে না।
সেনাবাহিনীর জন্য, জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য কীভাবে, কত টাকা খরচ করা হচ্ছে বাজেটে তার কোনো স্পষ্ট উল্লেখ নেই বলে জানান ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘আমাদের এদিকে মিয়ানমার, ওদিকে ভারত। তার মধ্যে যদি টিকে থাকতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদের জাতীয় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আর তা করতে হলে এর জন্য খরচ আছে। এটি হলো ন্যায্য খরচ। সেই খরচ কীভাবে, কার কাছে থেকে তুলব, কে দিবে? সীমান্তে ভারত বা মিয়ানমার আক্রমণ করলে কী করে নিজেকে রক্ষা করব? কিন্তু বাজেটে বলা নেই, কী করে সেই নিরাপত্তা পাচ্ছি। এই যে খরচটা কোথায় কী জন্য করছি, সেটি লুকিয়ে রাখা হয়। এটি খারাপ লক্ষণ।’
অধ্যাপক ইউনূসের থ্রি জিরো তত্ত্ব নিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ড.
অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ফ্যাসিস্ট রেজিমের কাঠামোর ওপরে ঘষামাজা করেই অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। বাজেট প্রণয়নে অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত হলেও সেটি করা হয়নি। যৌক্তিক বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেই বাজেট চূড়ান্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এই জামায়াত নেতা।
নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক সাদেক রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন কলামিস্ট ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মিজানুর রহমান, প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেওয়ান মো. সাজ্জাদ, এফবিসিসিআই পরিচালক হাজী মো. এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ব্র্যাক ব্যাংক এসএমই গ্রাহকদের ১৩.৭৫ শতাংশ হারে জামানতবিহীন ঋণসুবিধা দেবে
দুই যুগের যাত্রায় ব্র্যাক ব্যাংক অর্জন করেছে ২০ লাখ এসএমই গ্রাহককে সেবা প্রদানের অনন্য মাইলফলক। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ব্র্যাক ব্যাংক চালু করেছে ‘এসএমই মানেই ব্র্যাক ব্যাংক’ ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় ব্র্যাক ব্যাংক এসএমই গ্রাহকদের ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে জামানতবিহীন ঋণসুবিধা দেবে, যা দেশের সিএমএসএমই খাতে বর্তমানে সর্বনিম্ন রেট। সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়নের সুযোগ আরও সহজ করার লক্ষ্যে ১ আগস্ট থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত এই রেট প্রযোজ্য থাকবে।
প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের বাস্তব চাহিদার কথা বিবেচনা করে ক্যাম্পেইনের আওতায় ব্র্যাক ব্যাংক নতুন দুটি প্রোডাক্ট সল্যুশনও নিয়ে এসেছে। এগুলো হলো ‘প্রবর্তন’ ও ‘বিজপে’। ‘প্রবর্তন’ আনসিকিউর্ড লোন ডিজাইন করা হয়েছে দেশের ই-কমার্স এবং এফ-কমার্সের মতো অনলাইন উদ্যোক্তাদের জন্য। পর্যাপ্ত আর্থিক সুবিধার বাইরে থাকা এসব উদ্যোক্তার ব্যবসার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এই ঋণসুবিধা। অন্যদিকে ‘বিজপে’ হলো এসএমই ট্রানজ্যাকশন ব্যাংকিংয়ের এমন একটি প্রযুক্তিনির্ভর প্ল্যাটফর্ম, যা সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের একসঙ্গে অনেক এবং বড় আকারের লেনদেন করার সুবিধা দেবে।
এই উদ্যোগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংকের অবস্থান আরও শক্তিশালী করেছে। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে ব্র্যাক ব্যাংক সেসব সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে পছন্দের ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে, যাঁরা ব্যবসা শুরু কিংবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ঋণসুবিধা নিতে গিয়ে বেশির ভাগ সময়ই প্রয়োজনীয় জামানত রাখতে পারেন না।
অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করার লক্ষ্যে এটি ব্র্যাক ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পাশাপাশি দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও উদ্যোক্তা বিকাশে সহায়তা করতে ব্যাংকটি উদ্ভাবনী সিএমএসএমই প্রোডাক্টের উন্নয়নও অব্যাহত রেখেছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্যই হলো দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোকে বিকশিত হতে সহায়তা করা। দুই যুগের পথচলায় আমরা ২০ লাখ এসএমই গ্রাহকের ক্ষমতায়ন করেছি। আমরা নতুন উদ্যোক্তাদের পথপ্রদর্শক হয়েছি এবং দুই কোটি মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছি। আমাদের ক্যাম্পেইন “এসএমই মানেই ব্র্যাক ব্যাংক” এই অঙ্গীকারেরই প্রতিফলন।’