এই লেখক বলেন, ‘বাজেটের ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা দিয়ে দিচ্ছি সুদ এবং আমলাতন্ত্রকে পোষার জন্য। এই আমলাতন্ত্র উৎপাদনে, অর্থনীতিতে কোনো অবদান রাখে না, উল্টো বাধা দেয়। বাজারব্যবস্থার স্বতঃস্ফূর্ত গতিশীলতাকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ঢোকার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে আমলাতন্ত্র। সেই আমলাতন্ত্রের খরচের সঙ্গে সুদের পরিমাণ যোগ করলে বাজেটের প্রায় ৩৫ ভাগ টাকা দিয়ে দিতে হচ্ছে।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত বাজেট সংলাপ ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার এ কথাগুলো বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর কালোটাকা সাদা হয় কোন যুক্তিতে, প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, কালোটাকাকে সাদা করার সুযোগ বন্ধ করতে হবে। গণ–অভ্যুত্থানের পর এই সুযোগ রাখার কোনো যুক্তি নেই।

ফরহাদ মজহার বলেন, এই সরকার সেই অর্থে ক্ষমতাধর সরকার নয়। ফলে অনেক জিনিস চাইলেই তারা করতে পারবে না। তাই এই সরকারের কাছ থেকে বড় কোনো বাজেট প্রত্যাশা করা হয়নি। বেশি কিছু আশা করাও ঠিক হবে না।

সেনাবাহিনীর জন্য, জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য কীভাবে, কত টাকা খরচ করা হচ্ছে বাজেটে তার কোনো স্পষ্ট উল্লেখ নেই বলে জানান ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘আমাদের এদিকে মিয়ানমার, ওদিকে ভারত। তার মধ্যে যদি টিকে থাকতে চাই, তাহলে অবশ্যই আমাদের জাতীয় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আর তা করতে হলে এর জন্য খরচ আছে। এটি হলো ন্যায্য খরচ। সেই খরচ কীভাবে, কার কাছে থেকে তুলব, কে দিবে? সীমান্তে ভারত বা মিয়ানমার আক্রমণ করলে কী করে নিজেকে রক্ষা করব? কিন্তু বাজেটে বলা নেই, কী করে সেই নিরাপত্তা পাচ্ছি। এই যে খরচটা কোথায় কী জন্য করছি, সেটি লুকিয়ে রাখা হয়। এটি খারাপ লক্ষণ।’

অধ্যাপক ইউনূসের থ্রি জিরো তত্ত্ব নিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ড.

ইউনূস কিন্তু অর্থনীতিতে নোবেল পাননি, পেয়েছেন শান্তিতে। এই বাজেটে তারা বলছে থ্রি জিরো তত্ত্ব বাস্তবায়ন করবে। এটার জন্য তো আমরা গণ–অভ্যুত্থান করিনি। এটা যদি বাজেটে ঢোকান, তাহলে তিনি (অধ্যাপক ইউনূস) অসম্মানিত হবেন।’

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ফ্যাসিস্ট রেজিমের কাঠামোর ওপরে ঘষামাজা করেই অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। বাজেট প্রণয়নে অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত হলেও সেটি করা হয়নি। যৌক্তিক বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেই বাজেট চূড়ান্ত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন এই জামায়াত নেতা।

নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক সাদেক রহমানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন কলামিস্ট ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মিজানুর রহমান, প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেওয়ান মো. সাজ্জাদ, এফবিসিসিআই পরিচালক হাজী মো. এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিটিভি-বেতারের স্বায়ত্তশাসনে পাঁচ উপদেষ্টার সমন্বয়ে কমিটি গঠন

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরারের নেতৃত্বে পাঁচ উপদেষ্টার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।

এ কমিটি গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের পথরেখা তৈরিতে কাজ করবে। পাশাপাশি টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমের গত ১৫ বছরের নীতিমালা পর্যালোচনা ও ভবিষ্যতের নীতি প্রণয়নে কাজ করবে।

শিক্ষা উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান; সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

গত মার্চে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া হয়। এ কমিশনের প্রধান ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ।

প্রতিবেদনে বিটিভি, বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) একীভূত করে একটি প্রতিষ্ঠান করার সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। এ প্রতিষ্ঠানের নাম হতে পারে ‘বাংলাদেশ সম্প্রচার সংস্থা বা জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা’। এ প্রতিষ্ঠানের বার্তা বিভাগ হিসেবে বাসসকে একীভূত করতে বলেছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে এ প্রতিষ্ঠানে তিনটি বিভাগ থাকবে। এগুলো হলো টেলিভিশন, বেতার ও বার্তা বিভাগ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ