ইরান থেকে ১০০ জনের মতো বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদেরকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিকল্প পররাষ্ট্র সচিব নজরুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ইরানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম  বলেন, “সেখানে ১০০ জনের মতো বাংলাদেশির একটি তালিকা আপডেটিং হচ্ছে, এখন তাদের কীভাবে কোন পথে ফেরানো যায়, সে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যখন একটি  নিরাপদ দেশে নেওয়া হবে, তখন সেখান থেকে বিমানযোগে দেশে ফেরানো হবে।”

আরো পড়ুন:

যুদ্ধ বাধলে ইরান-ইসরায়েলের অর্থনীতির কী হাল হবে?

ইরানে রেজিম চেঞ্জ: পশ্চিমা বিশ্বের ‘ভন্ডামির ইতিহাস’

তিনি বলেন, “ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বুধবার (১৮ জুন) পর্যন্ত কথা হয়েছে, দূতাবাসের সব কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার সেফ স্থানে চলে গেছেন। তারা ভালো আছেন, এখনো পর্যন্ত  আমাদের কোনো কর্মকর্তা সেখানে হতাহত হয়নি। আর প্রবাসী কর্মকর্তা যারা তেহরানে ছিলেন, তারাও নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন। দূতাবাসের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “তারা সুবিধাজনক জায়গায় চলে গেছেন, দূতাবাস তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তাদের তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তুরস্ক হতে পারে, পাকিস্তানও হতে পারে। যেখানে সব দিক থেকে সুবিধা হবে, সেখান থেকেই ব্যবস্থা আমরা করব।”

এক প্রশ্নের উত্তরে নজরুল ইসলাম বলেন, “তেহরানে ৪০০ জনের মতো বাংলাদশি ছিলেন। এ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে ১০০ জনের মতো যোগাযোগ করেছেন। আমরা যেহেতু হটলাইন চালু করেছি, সে কারণে হয়তো এ সংখ্যা আরো বাড়বে। বর্তমানে ইন্টারনেট বন্ধ আছে, তবে টেলিফোনে সম্ভবত যোগাযোগ চালু আছে। বাকিদের তথ্য আমাদের কাছে নেই।”

নজরুল ইসলাম আরো বলেন, “তবে যেহেতু হটলাইন চালু আছে, তারা চাইলেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন; সহায়তার দরকার হলে আমরা দেব। এমনকি তেহরানের বাইরে অন্যান্য শহরে যারা আছেন, তাদের বিশেষ করে বন্দর আব্বাসে বাংলাদেশি আছেন। যদিও সেখানে (বন্দর আব্বাস) তারা এখনো যুদ্ধাক্রান্ত হননি। তবে তারা যদি ভবিষ্যতে সহায়তা চান, তাহলেও দেওয়া হবে। তাদের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার।”

ইরানে টাকা পাঠাতে জটিলতা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ইরানে টাকা পাঠাতে জটিলতা আছে। আমাদের দূতাবাসে কিছু টাকা আছে, আর আমাদের একজন অফিসার ইরান যাচ্ছেন। তার মাধ্যমেও টাকা পাঠানো হচ্ছে। আমাদের কিছু বন্ধুপ্রতিম দেশের কাছ থেকেও সহায়তা নেব।”

গত ১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানে প্রতিদিনই হতাহত বাড়ছে। এদিকে ইসরায়েলে পাল্টা  হামলা করছে ইরান।

ঢাকা/হাসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নজর ল ইসল ম প রক র য় ইসর য় ল আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো, এ নিয়ে ৬ বার

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উত্থাপন করা ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এ নিয়ে ৬ বার গাজার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভোটো দিল।

সর্বশেষ প্রস্তাবটির খসড়ায় গাজায় অবিলম্বে নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছিল। সেই সঙ্গে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলকে সব ধরণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া এবং ত্রাণ সরবরাহ করতে দেওয়ার কথাও বলা ছিল। এর বিপরীতে খসড়া প্রস্তাবটিতে গাজায় জিম্মি অবস্থায় থাকা ইসরায়েলিদের অবিলম্বে সম্মানজনক মুক্তির শর্তও ছিল।

স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের নির্বাচিত ১০ সদস্যদেশ এ খসড়া প্রস্তাব তুলেছিল। স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়েছে। বাকি ১৪ সদস্য দেশ খসড়া প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে।

গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মধ্যে চলা সংঘাতের প্রায় ২ বছর হতে চলেছে। এ সময়ের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের শর্ত যুক্ত করে নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত ছয়টি প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে ভেটো দিয়েছে ওয়াশিংটন।

ওয়াশিংটনের এমন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে হামাস একে ‘গণহত্যার অপরাধের সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে জড়িত থাকা’ বলে চিহ্নিত করেছে।

ভোটাভুটির আগে জাতিসংঘে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিনা মার্কুস লাসেন নিরাপত্তা পরিষদে বলেন, ‘গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন নিশ্চিত একটি বিষয়। অনুমান নয়, ঘোষণা নয়— এটা এখন নিশ্চিত।’

ক্রিস্টিনা আরও বলেন, গাজা সিটিতে সামরিক অভিযান বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এতে বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। এ মানবিক বিপর্যয়, এ মানবিক ব্যর্থতা আমাদের আজকের এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।

আরও পড়ুন‘ফিলিস্তিন বলে কোনো রাষ্ট্র থাকবে না, এই ভূমি আমাদের’, বললেন নেতানিয়াহু১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গাজা সিটিতে কয়েক দিন ধরে সর্বাত্মক হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। এরই অংশ হিসেবে এ শহরে বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান চালাচ্ছে দেশটি। হামলার মুখে গাজা সিটি থেকে ফিলিস্তিনিরা দলে দলে হেঁটে আরও দক্ষিণ দিকে সরে যাচ্ছেন। অনেকে যানবাহন ও গাধায় টানা গাড়িতে গাজা সিটি ছাড়ছেন।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিয়েছে হামাস, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত ইসরায়েলের১৯ আগস্ট ২০২৫

ইসরায়েলের দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ফিলিস্তিনি গাজা সিটি ছেড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, শহরটিতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা শুরুর আগে কমবেশি ১০ লাখ ফিলিস্তিনি ছিলেন, যাঁদের অনেকে অন্যান্য জায়গা থেকে একাধিকবার স্থানচ্যুত হয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

বছর দুয়েক ধরে চলা নির্বিচার ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অন্তত ৬৫ হাজার ১৪১। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯২৫ জন। এ তথ্য হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

আরও পড়ুনগাজার সামরিক প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ারের নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করল হামাস৩১ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ