ঈশ্বরদীর ঐক্যবদ্ধ বিএনপিতে দুই নেতার ফের বিরোধ, এক নেতার সংবাদ সম্মেলন
Published: 19th, June 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদীতে সাবেক শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ডসহ ৪৭ নেতাকর্মী ৫ বছর কারাভোগের পর মুক্ত হয়ে ঈশ্বরদীতে ফেরেন গত ১১ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন গণসংবর্ধনায় শীর্ষ ৩ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, মকলেছুর রহমান বাবলু ও জাকারিয়া পিন্টু একমঞ্চে আগের সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সেই ঘোষণার চার মাসের মাথায় দুই নেতা পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হলে ঈশ্বরদীর তৃণমূল নেতাকর্মীরা আবারও দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন।
এদিকে এই অনৈক্য দূর করে আবারও একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিন নেতার একজন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাবলুর আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দীর্ঘ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘অতি সম্প্রতি অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ড বা আচরণ ঈশ্বরদীর মানুষকে ভাবিত করেছে, হতাশ করেছে, যা এখনই পরিসমাপ্তি জরুরি। আশা করি, আমাদের ধৈর্য ও সহনশীল আচরণের মাধ্যমে গত ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখের গণসংবর্ধনায় দেওয়া আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা পাবে। ঈশ্বরদীর রাজনৈতিক পরিকল্পনাগুলোকে সর্বজনীন করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা তিনজন (হাবিব-বাবলু-পিন্টু) কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে কাজ করে যাবো।’
বাবলু আরও বলেন, ‘সেদিন আমরা ঈশ্বরদীবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম, অতীতের ভুলভ্রান্তি শুধরে নিয়ে ঈশ্বরদীর উন্নয়ন এবং ঈশ্বরদীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকবো। সেদিন আমরা তিনজন হাতে হাত ধরে যে ঐক্যের ঘোষণা দিয়েছিলাম; তখন ঈশ্বরদীর মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন, কিন্তু সম্প্রতি অপ্রত্যাশিতভাবে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ঈশ্বরদীর মানুষকে ভাবিত করেছে, হতাশ করেছে, যা এখনই অবসান হওয়া দরকার।’
তিনি বলেন, ‘আশা করি, আমাদের ধৈর্য ও সহনশীল আচরণের মাধ্যমে গত ১১ ফেব্রুয়ারির গণসংবর্ধনায় দেওয়া আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা পাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফাঁসির দণ্ড থেকে মুক্ত বিএনপি নেতা মাহ্বুবুর রহমান পলাশ, রেজাউল করিম ভিপি শাহীন, আজমল হোসেন ডাবলু, যুবদল নেতা মিজানুর রহমান, রুহুল আমিন, ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়নসহ দলীয় শতাধিক নেতাকর্মী।
প্রসঙ্গত, কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর গত ৪ মাস উল্লিখিত তিন নেতা একসাথে ঐক্যবদ্ধ থাকলেও পাবনায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় পিন্টুর উদ্দেশ্য হাবিব এবং গত রোববার রূপপুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে হাবিবুর রহমান হাবিবের উদ্দেশ্য জাকারিয়া পিন্টু নেতিবাচক বক্তব্য দিলে তৃণমূল পর্যায়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা।
এ সব বিষয়ে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘আমি কিছু বলতে চাই না। তবুও বলবো, ওরা আমার ছোট ভাই, ওরা কখন কি বলে তা নিয়ে মন্তব্য করা আমার উচিত হবে না।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু বলেন, আমরা ঈশ্বরদীর রাজনৈতিক পরিবেশ সুশৃঙ্খল রাখতে আগের সব মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী যেই হোক না কেন; তাকে বিজয়ী করে পাবনা-৪ আসনটি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উপহার দিতে চাই।
ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু মুঠোফোনে সমকালকে বলেন, হাবিবুর রহমান হাবিব ব্যক্তি পর্যায়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করায় তার প্রতিবাদে আমি প্রতিবাদ সমাবেশে তার বিরুদ্ধে আমার বক্তব্য দিয়েছি। তবে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই, আমিও চেষ্টা করছি ঐক্যবদ্ধ থাকার, সবার আগে সব নেতাকেই মন পরিষ্কার করতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প বন হ ব ব র রহম ন হ ব ব ব এনপ র স ন ত কর ম আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
জবি রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের প্রতিবাদে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) রেজিস্ট্রারের অসদাচরণ ও শিক্ষককে অপমান করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা, জগন্নাথে হবে না’, ‘এক দুই তিন চার, রেজিস্ট্রার গদি ছাড়’, ‘স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
২ দিনের মধ্যে চাকসুর তফসিল ঘোষণা না করলে চবি শাটডাউনের হুঁশিয়ারি
রাবির সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’র অভিযোগ
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আমরা কোনো যৌক্তিক প্রশ্ন বা সমস্যা নিয়ে রেজিস্ট্রার অফিসে গেলে সহানুভূতির পরিবর্তে তিনি অপমানজনক ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার এমন আচরণ পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমনকি আমাদের বিভাগের স্যারের সঙ্গেও একই রকম অসদাচরণ করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, জুলাই পরবর্তী সময়ে এ ধরনের স্বৈরাচারী আচরণ মেনে নেওয়া হবে না।”
একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা তিনি এখন ক্ষেপে যাওয়া বাছুরের মতো আচরণ করছেন। তিনি যদি ক্ষেপতেই চান, তাহলে মাঠে যাক। স্বৈরাচারের দোসরদের ঠিকানা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে না।”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষক ইউজিসি ফান্ডেড স্কলারশিপ পাওয়ার পর শর্ত অনুযায়ী একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তিপত্রে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর নিতে গেলে অপমানজনক আচরণের শিকার হন। স্বাক্ষর দিতে গড়িমসি, লাঞ্চের অজুহাত দেখিয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে যাওয়া এবং দ্রুত চাইলে আরো দেরি হবে বলে মন্তব্য করে শিক্ষককে বারবার হয়রানি করেন রেজিস্ট্রার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অপমান করা মানে পুরো শিক্ষার্থী সমাজকেই অসম্মান করা উল্লেখ করে তারা দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী