পাবনার ঈশ্বরদীতে সাবেক শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ডসহ ৪৭ নেতাকর্মী ৫ বছর কারাভোগের পর মুক্ত হয়ে ঈশ্বরদীতে ফেরেন গত ১১ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন গণসংবর্ধনায় শীর্ষ ৩ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, মকলেছুর রহমান বাবলু ও জাকারিয়া পিন্টু একমঞ্চে আগের সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতি করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। 

সেই ঘোষণার চার মাসের মাথায় দুই নেতা পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব ও ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হলে ঈশ্বরদীর তৃণমূল নেতাকর্মীরা আবারও দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন।

এদিকে এই অনৈক্য দূর করে আবারও একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিন নেতার একজন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাবলুর আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি দীর্ঘ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘অতি সম্প্রতি অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ড বা আচরণ ঈশ্বরদীর মানুষকে ভাবিত করেছে, হতাশ করেছে, যা এখনই পরিসমাপ্তি জরুরি। আশা করি, আমাদের ধৈর্য ও সহনশীল আচরণের মাধ্যমে গত ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখের গণসংবর্ধনায় দেওয়া আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা পাবে। ঈশ্বরদীর রাজনৈতিক পরিকল্পনাগুলোকে সর্বজনীন করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা তিনজন (হাবিব-বাবলু-পিন্টু) কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসাথে কাজ করে যাবো।’

বাবলু আরও বলেন, ‘সেদিন আমরা ঈশ্বরদীবাসীর কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলাম, অতীতের ভুলভ্রান্তি শুধরে নিয়ে ঈশ্বরদীর উন্নয়ন এবং ঈশ্বরদীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকবো। সেদিন আমরা তিনজন হাতে হাত ধরে যে ঐক্যের ঘোষণা দিয়েছিলাম; তখন ঈশ্বরদীর মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন, কিন্তু সম্প্রতি অপ্রত্যাশিতভাবে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ঈশ্বরদীর মানুষকে ভাবিত করেছে, হতাশ করেছে, যা এখনই অবসান হওয়া দরকার।’ 

তিনি বলেন, ‘আশা করি, আমাদের ধৈর্য ও সহনশীল আচরণের মাধ্যমে গত ১১ ফেব্রুয়ারির গণসংবর্ধনায় দেওয়া আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা পাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফাঁসির দণ্ড থেকে মুক্ত বিএনপি নেতা মাহ্বুবুর রহমান পলাশ, রেজাউল করিম ভিপি শাহীন, আজমল হোসেন ডাবলু, যুবদল নেতা মিজানুর রহমান, রুহুল আমিন, ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়নসহ দলীয় শতাধিক নেতাকর্মী।

প্রসঙ্গত, কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর গত ৪ মাস উল্লিখিত তিন নেতা একসাথে ঐক্যবদ্ধ থাকলেও পাবনায় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় পিন্টুর উদ্দেশ্য হাবিব এবং গত রোববার রূপপুরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে হাবিবুর রহমান হাবিবের উদ্দেশ্য জাকারিয়া পিন্টু নেতিবাচক বক্তব্য দিলে তৃণমূল পর্যায়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েন নেতাকর্মীরা।

এ সব বিষয়ে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘আমি কিছু বলতে চাই না। তবুও বলবো, ওরা আমার ছোট ভাই, ওরা কখন কি বলে তা নিয়ে মন্তব্য করা আমার উচিত হবে না।’

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু বলেন, আমরা ঈশ্বরদীর রাজনৈতিক পরিবেশ সুশৃঙ্খল রাখতে আগের সব মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী যেই হোক না কেন; তাকে বিজয়ী করে পাবনা-৪ আসনটি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উপহার দিতে চাই।

ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু মুঠোফোনে সমকালকে বলেন, হাবিবুর রহমান হাবিব ব্যক্তি পর্যায়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করায় তার প্রতিবাদে আমি প্রতিবাদ সমাবেশে তার বিরুদ্ধে আমার বক্তব্য দিয়েছি। তবে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই, আমিও চেষ্টা করছি ঐক্যবদ্ধ থাকার, সবার আগে সব নেতাকেই মন পরিষ্কার করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন হ ব ব র রহম ন হ ব ব ব এনপ র স ন ত কর ম আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির

চট্টগ্রামের সাগরিকায় উপস্থিত থাকা দর্শকরা গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সাপোর্ট করেছে এমন কথা শুনলে অবাক হবেন নিশ্চিয়ই? অবাক হওয়ার কিছু নেই। সত্যিই এমন কিছুই হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে।
ধারাবাহিকভাবে ব‌্যর্থ বাংলাদেশ দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দর্শকরা আপাতদৃষ্টিতে এমনটাই মনে হয়েছে। লাল-সবুজের পতাকা গ‌্যালারিতে উড়তে দেখা যায়নি তেমনটা নয়। কিন্তু ম‌্যাচ যত গড়িয়েছে সেই পতাকা উড়ানোও তত কমেছে। টিকিটের মূল‌্য একেবারে হাতের নাগালে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন। তবুও ভরেনি গ‌্যালারি।

লিটন, জাকের, তাসকিন, শরিফুল, সাইফদের পারফরম‌্যান্স এমন গড়পড়তা যে সমর্থকরা প্রতিপক্ষের ব‌্যাটিং-বোলিং দেখেই বেশি আনন্দিত হচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের যে নিবেদন, যে চাহিদা তা রোস্টন চেজ, আকিম আগাস্তের ব‌্যাটে পাওয়া গেলে সমর্থকদের দোষ কোথায়? তাদের চার-ছক্কায় গ‌্যালারিতে তালির ঝড় উঠে। উল্লাস, উদ্দীপনায় মাততে দেখা যায়।
আর স্বাগতিক দলের জন‌্য উড়ে আসে দুয়ো ধ্বনি। ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান চললো পুরো ম‌্যাচ জুড়েই। বিশেষ করে সীমানায় থাকা ক্রিকেটাররা দর্শকদের রোষানলে পড়লেন বেশি। শুধু তা-ই নয়, স্টেডিয়ামের যাওয়া-আসার পথেও সেই সমর্থকরাই ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগানে এলোমেলা করে দেন ক্রিকেটারদের।

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে এসব স্লোগান একেবারেই পছন্দ হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ ড‌্যারেন স‌্যামির। ক্যারিয়ারে নানা সময় বাংলাদেশে আসায় কিছুটা বাংলা শব্দ তারও জানা। তবে ভুয়া অর্থটা জেনেছেন এবারই। তাইতো তার হৃদয়ে কিছুটা দহনও হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন‌্য, “তারা (দর্শকরা) ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছে, সেটা আমার ভালো লাগেনি। আমি শুনেছি তারা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলছে। এর অর্থও আমি জেনেছি। কিন্তু আমি মনে করি না, হোম টিমের দর্শক হিসেবে এমন করা উচিত। কারণ আপনারা তখন সমর্থক। প্রত্যেক ক্রিকেটারই মাঠে আসে তাদের সেরাটা দেওয়ার জন্য। তাই আপনাদের উচিত, তাদের সমর্থন করা।”

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইবার বিশ্বকাপ জেতানো স‌্যামি কঠিন সময়ে ক্রিকেটারদের পাশে থাকার কথা বললেন, ‘‘তবুও তারা (দর্শকরা) ভালো। তারা নিজেদের দলকে পারফর্ম করতে দেখতে চায়। তবে যত বেশি সমর্থন ও উৎসাহ দেবেন, তারা তত দূর যেতে পারবে। ক্রিকেটারদের অযথা চাপে ফেলবেন না। ফ্যানদের বলব, তাদের (ক্রিকেটারদের) সঙ্গে সুন্দর আচরণ করুন।”

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হবিগঞ্জে কনসার্টে বিশৃঙ্খলার পর নারীদের হেনস্তা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ
  • পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক
  • অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের
  • অনলাইনে ‘স্টাডি অ্যাব্রোড ফেয়ার’ শেষ হচ্ছে আজ, ‘ঘুরে আসুন’ এখনই
  • সিডনির হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও এখনই ভারতে ফিরতে পারছেন না আইয়ার
  • কুষ্টিয়ায় রেলসেতুর নিচে নারীর মরদেহ, ছেলের দাবি হত্যা
  • কেউ কটুক্তি করলে কী করবেন?
  • বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উদ্দেশ‌্যে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান পছন্দ হয়নি স‌্যামির
  • অবশেষে ক্যাম্প ন্যুতে ফিরছে বার্সেলোনা, তবে…