সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার দুই আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ সোমবার সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হারুন-অর-রশীদ এ বিষয়ে আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা মো.

তাজউদ্দিন। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বাগত দাস (পার্থ) ও শান্ত তারা (আদনান)।

মো. তাজউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শেষে আদালতের বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে সকাল পৌনে ১০টায় আসামিদের আদালতের হাজির করা হয়। বেলা ১১টায় রিমান্ডের শুনানি চলাকালে আদালত চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তাঁরা আদালতের এজলাস কক্ষের বারান্দায় অবস্থান নেন। পরে পুলিশ তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আসামি দুজনকে আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নেওয়া হয়।

গত ২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মেসে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ওই দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। মামলা করার পর ওই দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্কাউটিংয়ের অভিজ্ঞতায় ভবিষ্যতের পৃথিবী রচনায় এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান

স্কাউটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ভবিষ্যতের পৃথিবী রচনায় এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (২৩ জুন) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বাংলাদেশ স্কাউটস এর দেশব্যাপী আয়োজিত কাব কার্ণিভালের উদ্বোধন ও শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আজকে স্কাউটিং ইতিহাসে একটা বিশেষ দিন। শুধু বাংলাদেশের স্কাউটিংয়ের ক্ষেত্রে না, পুরো বিশ্বের স্কাউটিংয়ের ক্ষেত্রে আজকের দিনটা বিশেষ গৌরবের। যে আটজন স্কাউট আত্মাহুতি দিল দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করার জন্য সেটা দিয়েই এই ইতিহাসের সৃষ্টি। স্কাউটিংয়ের ইতিহাসে এরকম নজির আর কোথাও নাই। বাংলাদেশের স্কাউটরা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বলে আমরা সারা বিশ্বের পক্ষ থেকে তাদেরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।”

আরো পড়ুন:

বিবিসিকে অধ্যাপক ইউনূস
আওয়ামী লীগ ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা 

উন্নয়ন প্রকল্প যেন প্রকৃতির ক্ষতি না করে: প্রধান উপদেষ্টা

পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা পুরস্কার পেলে এবং যারা আজ উপস্থিত আছ, তোমাদের সবার দায়িত্ব হলো দরজা খোলা। দরজা বন্ধ বলে আক্ষেপের দিকে থেকে গেলে হবে না। দরজা তোমাকেই খুলতে হবে। যেহেতু তুমি অনেক দূর এগিয়ে এসছো, এগিয়ে এসছো বলেই তুমি স্কাউট হয়েছ। তোমার স্কুলের বাকিরা হয় নাই। কাজেই তোমার দায়িত্ব হলো অন্যদের জন্যও দরজা খুলে দেওয়া। তুমি যদি না খোলো এ দরজা বন্ধ থেকেই যাবে।”

তিনি নিজেও একজন স্কাউট পরিবারের গর্বিত সদস্য উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা তার ছাত্রজীবনের স্মৃতিচারণ করেন। ১৯৫৫ সালে ১৫ বছর বয়সে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বয় স্কাউট দলের সঙ্গে কানাডায় অনুষ্ঠিত দশম বিশ্ব বয় স্কাউট জাম্বুরিতে অংশ নেন। সে সময় তিনি ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, “এ এক মস্ত বড় সুযোগ; পৃথিবীকে আবিষ্কার করার, তার চাইতে বড় নিজেকে আবিষ্কার করার। নাহলে গৎবাঁধা জীবনে নিজের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আর কোনো সুযোগ নাই। তোমরা যাতে স্কাউটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ভবিষ্যতের পৃথিবী রচনা করতে পারো সে কথাটা মনে রাখতে হবে।”

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বাংলাদেশ স্কাউটস প্রোগ্রাম বিভাগের পরিচালনায় বাংলাদেশের সব উপজেলা ও বাংলাদেশ স্কাউটসের বিশেষ জেলায় একযোগে কাব কার্নিভাল বাস্তবায়ন হচ্ছে।

সারা দেশে ৪৯৫টি উপজেলা, ৫টি মেট্রোপলিটন, ৫টি উপএলাকা ও ২২টি বিশেষ স্কাউট জেলা মিলিয়ে মোট ৫২৭টি স্থানে একযোগে কাব কার্নিভাল উদ্বোধন ও শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠান হচ্ছে।

সোমবার প্রধান উপদেষ্টা কাব স্কাউটদের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ‘শাপলা কাব অ্যাওয়ার্ড’ এবং জুলাই আন্দোলনে শহীদ আট জন স্কাউটের সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে বাংলাদেশ স্কাউটস এর ‘গ্যালান্ট্রি অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেন।

স্কাউটার মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, রোভার রোহান আহমেদ খান, রোভার তাঞ্জির খান মুন্না, স্কাউট শরিফ উদ্দিন আহমেদ আহনাফ, স্কাউট মাহবুব আলম, স্কাউট গোলাম নাফিজ, স্কাউট তাহির জামান প্রিয়, স্কাউট আরিফুল ইসলাম সাদ-এর পরিবারের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার হাত থেকে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ