দেশের বাজারে জাপানের সিটিজেন ব্র্যান্ডের পস (পয়েন্ট অব সেল), বারকোড ও লেবেল প্রিন্টার এনেছে স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেড। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সিটিজেন সিটি–ডি১৫০ ও সিটিজেন সিএলই–৩২১ মডেলের দুটি প্রিন্টার বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সিটিজেন সিটি–ডি১৫০ মডেলের থার্মাল পস প্রিন্টারটি প্রতি সেকেন্ডে ২৫০ মিমি পর্যন্ত প্রিন্ট করতে পারে। ২০৩ ডিপিআই রেজল্যুশনে প্রিন্ট করায় স্পষ্ট রিসিট প্রিন্ট করা যায় প্রিন্টারটিতে। সহজ ড্রপ–ইন, পেপার লোডিং, ইউএসবি ও সিরিয়াল সংযোগ সুবিধার কারণে প্রিন্টারটি যেকোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁয় স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করা যায়। প্রিন্টারটির সামনে একটি এলইডি ইন্ডিকেটর থাকায় সহজেই প্রিন্টারে থাকা কাগজের পরিমাণ দেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা যায়।

সিটিজেন সিএলই–৩২১ মডেলের বারকোড লেবেল প্রিন্টারটি মূলত ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাসপাতাল, লজিস্টিক প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ড শপে ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। ২০৩ ডিপিআই রেজল্যুশনের প্রিন্টারটি প্রতি সেকেন্ডে ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত প্রিন্ট করতে পারে। প্রিন্টারটিতে অটো সুইচিং প্রযুক্তি থাকায় সহজেই বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়। মডেলভেদে প্রিন্টারগুলোর দাম ধরা হয়েছে যথাক্রমে ১৫ হাজার টাকা ও ৩০ হাজার টাকা।

অনুষ্ঠানে সিটিজেন সিস্টেমস জাপান লিমিটেডের প্রিন্টার সেলস বিভাগের কর্মকর্তা ইয়োহেই কোয়ামা ও কারিগরি সমর্থন বিভাগের কর্মকর্তা সাতোরু হিগুয়েছি, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেডের চ্যানেল সেলস বিভাগের পরিচালক মুজাহিদ আল বেরুনী, সিটিজেন পণ্য ব্যবস্থাপক আবু সোলায়মান ও মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান মাহফুজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র ন ট কর

এছাড়াও পড়ুন:

দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে

দেশে এমনিতেই বনভূমি কমছে, তার ওপর নতুন করে বিপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে বনের ভেতর অবৈধভাবে স্থাপন করা হাজার হাজার বিদ্যুতের খুঁটি। এসব অবৈধ বিদ্যুৎ–সংযোগ বনভূমি দখলের প্রক্রিয়াকে আরও বেশি ত্বরান্বিত করছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এসব অবৈধ সংযোগ ব্যবহার করে ফাঁদ পেতে বন্য হাতি হত্যা করা হচ্ছে। যেভাবেই হোক, এসব খুঁটি সরাতেই হবে।

বন অধিদপ্তরের এক জরিপে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও দিনাজপুর অঞ্চলের বনাঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি অবৈধ বিদ্যুতের খুঁটির সন্ধান পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগে—৫ হাজার ৭১৭টি। বন বিভাগ বারবার সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানালেও তার ফল মিলেছে সামান্যই। উল্টো পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পিডিবির পক্ষ থেকে আসছে পরস্পরবিরোধী ও দায়সারা বক্তব্য।

জনগণের বিদ্যুৎ প্রাপ্তির অধিকার আছে, কিন্তু তার জন্য বনভূমি দখল করে পরিবেশ ও বন্য প্রাণীর জীবন বিপন্ন করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এক সদস্যের ভাষ্য অনুযায়ী, জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেই একজন বিদ্যুৎ–সংযোগ পেতে পারেন, কিন্তু বন বিভাগের আপত্তির বিষয়ে তাঁদের তেমন কোনো ধারণা নেই। অথচ বন বিভাগ নিয়মিত চিঠি এবং আইনশৃঙ্খলা সভায় এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এই সমন্বয়হীনতা এবং দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা পুরো বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বনের ভেতর অবৈধ বসতিতে বিদ্যুৎ–সংযোগে বনের ভেতর অবৈধ দখল রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া মহাবিপন্ন প্রাণীর জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে। গত আট বছরে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে ২৬টি হাতি হত্যা করা হয়েছে।

এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রথমত, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টার উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে অবৈধ খুঁটি ও সংযোগগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। দ্বিতীয়ত, বন বিভাগ, বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা এবং স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে একটি কার্যকর সমন্বয় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তৃতীয়ত, বনের ভেতর যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ বা বিদ্যুৎ–সংযোগের ক্ষেত্রে বন বিভাগের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিগত এক–দেড় দশকে বনের ভেতরে সড়ক ও অবৈধ বিদ্যুতের সংযোগের কারণে টাঙ্গাইল, সিলেটসহ অনেক জায়গায় বনাঞ্চল হারিয়ে গেছে। দেরি হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও এখনই কঠোর, কার্যকর ও সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে। নীতিনির্ধারকদের এ ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ