যে কোনো শিল্পীর জন্যই একক কনসার্ট গুরুত্বপূর্ণ: বাপ্পা মজুমদার
Published: 30th, June 2025 GMT
নন্দিত সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদারকে বিভিন্ন কনসার্টে নিয়মিত দেখা গেলেও একক শোয়ে তাঁকে পাওয়া যায় খুবই কম। সংগীত ক্যারিয়ারে হাতেগোনা একক কনসার্টে গেয়েছেন তিনি। আগামী ১২ জুলাই ইয়ামাহা মিউজিকের আয়োজনে ‘ওয়ান ট্রু সাউন্ড’ শিরোনামে একটি একক কনসার্টে গাইবেন বাপ্পা। সঙ্গে থাকবেন তাঁর ব্যান্ড দলছুটের সদস্যরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে এই শিল্পী বলেন, ‘প্রথমত, যে কোনো শিল্পীর জন্যই একক শো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি এই ধরনের একক শো আরও অনেক অনেক বেশি হওয়া উচিত। কারণ, বছরজুড়ে আমরা যে ধরনের প্রোগ্রাম করি, সেটা তো আমরা যাই, একটা আয়োজন হয়, গান গেয়ে চলে আসি। কিন্তু একক শো-তে যা হয় একজন শিল্পী তাঁর পুরো শৈল্পিক ইতিহাস ফুটিয়ে তুলতে পারেন এবং পুরো আয়োজনটিই হয় সেই শিল্পীকে ঘিরে।’
জানা যায়, শ্রোতাপ্রিয় বিভিন্ন গান এই আয়োজনে ভিন্ন আঙ্গিকে পরিবেশন করবেন বাপ্পা। ভেন্যু রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইয়ামাহা ফ্ল্যাগশিপ সেন্টার। ইতোমধ্যে গেটসেট রক ওয়েবসাইটে এই একক শোয়ের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। কনসার্ট শুরু হবে রাত ৮টায়।
তিন দশকের সংগীতজীবনে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান দর্শকদের উপহার দিয়েছেন বাপ্পা মজুমদার। শিগগিরই প্রকাশ পেতে যাচ্ছে তাঁর নতুন গান ‘আগামীকাল’। এ ছাড়াও রয়েছে আন্তর্জাতিক সফরের ব্যস্ততা। সব ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র মাতাবেন তিনি। নিউইয়র্ক, ফ্লোরিডা, ক্যালিফোর্নিয়া, শিকাগোসহ সেখানকার ১০টির বেশি শহরে পারফর্ম করবেন এই শিল্পী।
প্রসঙ্গত, বাপ্পা মজুমদার সর্বশেষ গত বছর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) মিলনায়তনে একক কনসার্টে অংশ নিয়েছিলেন। ‘বাপ্পা মজুমদার অডিসি’ শীর্ষক আয়োজনে তাঁর পরিবেশনা শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: একক কনস র ট একক শ
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন