জার্মানির হ্রদে প্লাস্টিকখেকো ছত্রাকের সন্ধান
Published: 22nd, July 2025 GMT
সিনথেটিক প্লাস্টিক ভেঙে খাওয়া মিঠাপানির ছত্রাক শনাক্ত করেছেন জার্মানির লিবনিজ ইনস্টিটিউট অব ফ্রেশওয়াটার ইকোলজির বিজ্ঞানীরা। ছত্রাকটি সাধারণ প্লাস্টিক বিশেষ করে পলিউরেথেন খেয়ে বিকশিত হলেও শক্ত প্লাস্টিকের ক্ষেত্রে তাদের কিছুটা লড়াই করতে হয়। আর তাই বিশেষ ধরনের এই ছত্রাকের মাধ্যমে বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ ও প্লাস্টিক দূষণের সম্ভাব্য প্রাকৃতিক সমাধান করতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, জার্মানির লেক স্টেচলিন নামের একটি হ্রদে পাওয়া এই ছত্রাক শুধু নির্দিষ্ট ধরনের প্লাস্টিক খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে। অতিরিক্ত কোনো পুষ্টি ছাড়াই প্লাস্টিক হজম করার ক্ষমতা রয়েছে এই ছত্রাকের। গবেষণায় দেখা গেছে, মাইক্রোফাঙ্গির বেশ কয়েকটি প্রজাতি সম্পূর্ণরূপে সিনথেটিক পলিমারের ওপর জন্মাতে পারে। এই ছত্রাক কেবল টিকেই থাকে না, অন্য কোনো কার্বন উৎস ছাড়াই জৈব বস্তু তৈরি করতে পারে। জলজ পরিবেশে প্লাস্টিকের প্রাচুর্যের কারণে ছত্রাকেরা অভিযোজিত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী হ্যান্স-পিটার গ্রোসার্ট বলেন, এসব ছত্রাক কেবল কিছু সিনথেটিক পলিমারের ওপর বৃদ্ধি পায়। জৈব বস্তুও তৈরি করতে পারে।
গবেষণায় ১৮টি ছত্রাকের মধ্যে ৪টিতে পলিউরেথেন ভাঙার তীব্র প্রবণতা দেখা গেছে। পলিউরেথেন সাধারণ প্লাস্টিক, যা নির্মাণসামগ্রী ও ফোমে ব্যবহৃত হয়। পলিথিন ও টায়ারের মতো শক্ত প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে ছত্রাকটি কম কার্যকর। তবে মিঠাপানির এই ছত্রাক সরাসরি সমুদ্রে ব্যবহার করে প্লাস্টিক ধ্বংস করতে চান বিজ্ঞানীরা। যদিও প্লাস্টিক ক্ষয়কারী এনজাইম তাপমাত্রা ও পুষ্টির প্রাপ্যতার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে। খোলা সমুদ্রের তুলনায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে এই ছত্রাক বেশ দক্ষ বলা যায়।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মাত্র ৯ শতাংশ প্লাস্টিক পুনরায় ব্যবহৃত হয়। আর তাই প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরেই প্লাস্টিক-ক্ষয়কারী জীবের সন্ধান পেতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। বর্তমানে প্লাস্টিক খায় বা ধ্বংস করতে সক্ষম প্রায় ৪০০টির বেশি প্রজাতির ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কার করা হয়েছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।