টেলিকম খাতকে আরও গ্রাহকবান্ধব করে তুলতে দরকার প্রতিযোগিতা-নীতির বাস্তবায়ন
Published: 22nd, July 2025 GMT
একসময় মোবাইল ফোন ছিল কেবল একটি বিলাসী অনুষঙ্গের নাম। মাত্র দুই দশক আগেও সবার হাতে হাতে মোবাইল থাকার দৃশ্য কল্পনা করাটা দুঃসাধ্য ছিল। কিন্তু সময় বদলেছে। এখন এই ছোট ডিভাইসটিই হয়ে উঠেছে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ। কাজের প্রয়োজনে হোক কিংবা ব্যক্তিজীবনের যোগাযোগ—বর্তমানে সবখানেই মোবাইল ফোন অপরিহার্য।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য বলছে, দেশে চারটি অপারেটরের মোট গ্রাহকের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ১৮ কোটি ৬৬ লাখ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবনযাপন ও যোগাযোগ—সবকিছুর সঙ্গে সম্পৃক্ত এই খাত। সামাজিক অগ্রগতি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও এর সমান প্রভাব রয়েছে। বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ সেবা খাত যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা দেশজুড়ে বিভিন্ন সূচকে প্রতিফলিতও হয়েছে।
যদিও এই খাত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, তারপরও কাঙ্ক্ষিত গতিতে এগিয়ে যেতে পারছে না। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বা সবার জন্য সমান প্রতিযোগিতার সুযোগের অভাব।
এই খাতের সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বাজারে যদি কোনো একক অপারেটরের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে তা গ্রাহকদের বিকল্প সেবা গ্রহণের সুযোগ সীমিত করে। এর ফলে উদ্ভাবনের গতি হ্রাস পায়, ছোট অপারেটরদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে ওঠে এবং বাজারে প্রতিযোগিতার স্বাভাবিক ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ফলে ধীরে ধীরে এই খাতের ছোট অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতার মূলধারা থেকে ছিটকে পড়ে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসের প্রথম আলোকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘২০১৮ সালে প্রবর্তন করা হয় গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট পাওয়ার বা তাৎপর্যপূর্ণ বাজার ক্ষমতা (এসএমপি) নীতিমালা। এ নীতিমালা ছিল বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য একটি মাইলফলক। তবে এই নীতি এখন পর্যন্ত কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এসএমপি নীতিমালার ২০টি ধারার মধ্যে মাত্র তিনটি বাস্তবায়িত হয়েছে, যা বাজারে সুস্থ ও সুন্দর প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে যথেষ্ট নয়। ভোক্তার অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই নীতিমালার বাস্তবায়ন প্রয়োজন।’
প্রতিযোগিতা-নীতিমালা বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকবে, সে বাজারেই সেবার মান বেড়ে যাবে। আগে আমাদের দেশে ছয়টি অপারেটর ছিল। এখন এটি কমতে কমতে চারটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটা-দুটো বাদে কোনোটিই লাভজনক অবস্থানে নেই। যদি প্রতিযোগিতা-নীতি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা যেত, তাহলে সব অপারেটরের জন্য সমান ও ন্যায্য পরিবেশ তৈরি হতো। এতে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে পারত না। গ্রাহকেরাও পেতেন সেবা বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা, আর অপারেটররাও বাধ্য হতো নিজেদের সেবা উন্নত করতে।’
বাংলাদেশের বর্তমান টেলিযোগাযোগ খাতের প্রেক্ষাপটে এখন প্রতিযোগিতা-নীতি বা গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট পাওয়ার নীতি বাস্তবায়ন করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।
বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা বা এসএমপি নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে কেবল বড় অপারেটরদের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে না বরং ছোট অপারেটরদেরও নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করার সুযোগ তৈরি হবে। ফলে গ্রাহকেরা আরও বেশি উপকৃত হবেন এবং নিজের পছন্দ অনুযায়ী অপারেটর বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা পাবেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এসএমপি নীতিমালা সফলভাবে বাস্তবায়িত করার মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে তাদের টেলিযোগাযোগ খাত আরও গ্রাহকবান্ধব হচ্ছে এবং বাজার উদ্ভাবনমুখী হয়ে উঠছে। আমাদের দেশেও এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই খ ত
এছাড়াও পড়ুন:
কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব
বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি
২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।
তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।
আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।
কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন