আগামী মাসে পরবর্তী প্রজন্মের ল্যঙ্গুয়েজ মডেল ‘জিপিটি ফাইভ’ উন্মোচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। বিষয়টি স্বীকার করে সম্প্রতি এক পডকাস্টে ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান বলেন, ‘আমরা শিগগিরই জিপিটি-ফাইভ প্রকাশ করতে যাচ্ছি।’ মডেলটির নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কিছু না জানালেও তিনি উল্লেখ করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর নতুন ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলটি আগের যেকোনো মডেলের তুলনায় অনেক বেশি যুক্তিশীল ও দক্ষ হবে।

ওপেনএআইয়ের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নতুন মডেলটি হবে আগের জিপিটি এবং ও-সিরিজ মডেলের সমন্বিত রূপ। এর ফলে আলাদা করে মডেল বাছাই না করেও ব্যবহারকারীরা যেকোনো প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে পারবেন। জিপিটি-ফাইভের তিনটি সংস্করণ উন্মুক্ত করা হবে। মূল, মিনি এবং ন্যানো নামে আসতে যাওয়া তিনটি সংস্করণেই ওপেনএআইয়ের এপিআই ব্যবহার করা যাবে।

জানা গেছে, জিপিটি ফাইভ মডেলটিতে আগের ও-থ্রি মডেল থেকে নেওয়া উন্নত যুক্তি বিশ্লেষণ ক্ষমতা যুক্ত করা হবে। এর ফলে মডেলটি আরও দক্ষভাবে মানুষের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হবে। জিপিটি-ফাইভ প্রকাশের আগেই ওপেন সোর্সনির্ভর আরও একটি এআই মডেল উন্মুক্ত করতে পারে ওপেনএআই।

ওপেন সোর্সনির্ভর এআই মডেলটি হবে মূলত ও-থ্রি মিনি মডেলের কাছাকাছি একটি সংস্করণ, যেখানে যুক্তি বিশ্লেষণের ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশি হবে। ফলে গবেষক, ডেভেলপার ও উদ্ভাবকেরা এআই মডেলটিকে উন্মুক্ত গবেষণা-সহায়ক মডেল হিসেবে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যবহার করতে পারবেন।

ওপেনএআই সর্বশেষ ওপেন সোর্স মডেল প্রকাশ করেছিল ২০১৯ সালে, যার নাম ছিল জিপিটি-টু।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাটজিপিটিকে যে কাজে ব্যবহার করলে তথ্যের গোপনীয়তা না–ও থাকতে পারে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ওপর মানুষের বাড়তে থাকা নির্ভরতার বিষয়ে সতর্ক করেছেন চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যান। তাঁর মতে, চ্যাটজিপিটিকে অনেকেই মানসিক সহায়তার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করলেও, এতে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার আইনগত কোনো নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পডকাস্ট ‘দিস পাস্ট উইকেন্ড’–এ এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

স্যাম অল্টম্যান বলেন, ‘চ্যাটজিপিটিতে মানুষ তাঁদের জীবনের অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। তরুণেরা চ্যাটজিপিটিকে থেরাপিস্ট, লাইফ কোচের মতো পরামর্শদাতা বা সম্পর্কের জটিলতা নিরসনের সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু বাস্তবে এই আলাপচারিতা কোনো আইনি গোপনীয়তার আওতায় পড়ে না। আপনি যদি কোনো চিকিৎসক, আইনজীবী বা থেরাপিস্টের সঙ্গে এসব বিষয় আলোচনা করেন, তাহলে তা আইনগতভাবে গোপন রাখার বাধ্যবাধকতা থাকে। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এমন আলাপের ক্ষেত্রে এখনো সে রকম কোনো কাঠামো তৈরি হয়নি। আমি মনে করি, এটি একটি গুরুতর সমস্যা। একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথোপকথনের মতোই এআইয়ের সঙ্গে আলাপের ক্ষেত্রে গোপনীয়তার অধিকার থাকা উচিত। এক বছর আগেও কেউ এসব নিয়ে ভাবেননি।’

আরও পড়ুনএআইয়ের দেওয়া সব তথ্য বিশ্বাস করা ঝুঁকিপূর্ণ, সতর্ক করলেন স্বয়ং স্যাম অল্টম্যান২৮ জুন ২০২৫

চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের চ্যাট সংরক্ষণ ও তথ্য উন্মুক্ত করার বিষয়ে ইতিমধ্যে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ওপেনএআই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে চলমান এক মামলায় আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের চ্যাট সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। তবে এই আদেশের আওতায় নেই ওপেনএআইয়ের এন্টারপ্রাইজ গ্রাহকেরা। প্রতিষ্ঠানটি এই আদেশকে ‘অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে আপিল করেছে। ওপেনএআই জানিয়েছে, আদালতের এই নির্দেশ কার্যকর হলে ভবিষ্যতে আরও ব্যাপকভাবে তথ্য উন্মুক্ত করার দাবি উঠতে পারে, যা ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

সাক্ষাৎকারে অল্টম্যান পডকাস্ট উপস্থাপক থিও ভনের চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা জানতে চান। ভন জানান, গোপনীয়তা নিয়ে সন্দেহ থাকায় তিনি এটি খুব কম ব্যবহার করেন। জবাবে অল্টম্যান বলেন, আইনি ও গোপনীয়তার বিষয়গুলো পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার না করাটা পুরোপুরি যৌক্তিক।

সূত্র: টেকক্রাঞ্চ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চ্যাটজিপিটিকে যে কাজে ব্যবহার করলে তথ্যের গোপনীয়তা না–ও থাকতে পারে