মায়ের কথা ভুলিয়ে রাখতে যমজ ছেলেদের নিয়ে খেলনার দোকানে বাবা
Published: 30th, July 2025 GMT
‘জানো বাবা, আমাদের মামমাম নাকি স্বপ্নের দেশে চলে গেছে। মা ঘুম পাড়ানোর সময় গল্প বলতেন, সেখানে গেলে নাকি আর ফিরে আসা যায় না। আমাদের দুই ভাইকে রেখে মামমাম কেন একা সুন্দর দেশে বেড়াতে গেল? তুমিও কি আমাদের ছেড়ে চলে যাবে বাবা?’
সদ্য মা হারানো ছেলে আরিয়ানের মুখে এসব প্রশ্নের জবাবে কিছুই বলতে পারেন না তাঁদের বাবা মিজানুর রহমান। যমজ ছেলেদেরই বুকে টেনে বলেন, ‘আমি তোদের ছেড়ে কোথায় যাব না রে বাবা, তোদের কোথাও যেতে দেব না।’
আজ বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শহরের বড় বাজার এলাকায় একটি খেলনার দোকানে এসব কথা জানান মিজানুর রহমান। তিনি আরও জানান, মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই এমন নানা প্রশ্ন করছে দুই ছেলে। মায়ের কথা ভুলিয়ে রাখতেই ছেলেদের নিয়ে খেলনার দোকানে এসেছেন তিনি। মাঝেমধ্যে ঘুরতেও বের হন। কিন্তু কোনোভাবেই মায়ের কথা ভুলতে পারছে না আট বছর বয়সী এই দুই শিশু।
ফারিয়া তাসনিম ওরফে জ্যোতির মরদেহ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুরের টঙ্গীর শালিকচূড়া বিল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মালেগাঁওয়ে কবরস্থানে বিস্ফোরণ মামলায় বিজেপি নেত্রী প্রজ্ঞাসহ সবাই খালাস
ভারতের মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে ১৭ বছর আগে বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্ত সাতজনকেই বেকসুর খালাস দিলেন এনআইএর বিশেষ আদালত। ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে লোকসভায় নির্বাচিত বিজেপি নেত্রী সাধ্বী প্রজ্ঞা।
আজ বৃহস্পতিবার এনআইএর বিশেষ আদালতের বিচারক এ কে লাহোটি তাঁর রায়ে বলেন, শুধু সন্দেহের বশে মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে, তা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বাইকটিও যে সাবেক সংসদ সদস্যের, তা প্রমাণ করা যায়নি।
এ মামলায় মোট ৩২৩ জন সাক্ষীর বয়ান খতিয়ে দেখে বিচারপতি লাহোটি বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনাটি ভয়াবহ, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু নিতান্তই সন্দেহের বশে ও নৈতিকতার যুক্তিতে কাউকে দোষী ঠাওর করা যায় না।
মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিক জেলার মালেগাঁও শহরে ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে এক বিস্ফোরণে সাতজনের মৃত্যু হয়, আহত হয়েছিলেন শতাধিক। শহরের মসজিদ লাগোয়া এক কবরস্থানে এক বাইকে দুটি বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল। তাতেই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
অভিযোগ উঠেছিল, পূর্ববর্তী সন্ত্রাসী হামলার পাল্টা হিসেবে মুসলিম–অধ্যুষিত এলাকায় ওই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। ব্যবহৃত বাইকটির মালিক ছিলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস দমন সংস্থার তদন্তে জানা যায়, এক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ওই দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িত।
ওই মামলার তদন্তের সময় সাধ্বী প্রজ্ঞা ও এক সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল প্রসাদ শ্রীকান্ত পুরোহিতকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা দুজনেই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছিলেন। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান।
তদন্তে জানা গিয়েছিল, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত বাইকটি প্রজ্ঞার নামে নিবন্ধন করা ছিল। কিন্তু ফরেনসিক তদন্তে তা প্রমাণ করা যায়নি। তা ছাড়া আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল, প্রজ্ঞা ওই ঘটনার দুই বছর আগেই সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। এরপর তদন্তের ভার এনআইএ গ্রহণ করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগ করা হয়েছিল। অস্ত্র আইনে মামলাও রুজু হয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি লোহাটি জানান, এই মামলায় ইউএপিএ প্রযোজ্য হবে না।
মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনে সাধ্বী প্রজ্ঞাকে ভোপাল থেকে বিজেপি প্রার্থী করে। তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। ভোটে প্রজ্ঞা জিতে যান। ২০২৪ সালের ভোটে অবশ্য বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করেনি।
বেকসুর খালাস পাওয়ার পর ৫৫ বছর বয়সী সাধ্বী প্রজ্ঞা গণমাধ্যমকে বলেন, গ্রেপ্তারের পর তাঁর ওপর অত্যাচার হয়েছিল। তাঁর জীবন শেষ হয়ে গিয়েছে। বেঁচে রয়েছেন সন্ন্যাসী হয়েছেন বলে। তিনি দাবি করেন, মামলাটি ছিল গেরুয়া অবমাননার। তবে গেরুয়ারই জয় হয়েছে। হিন্দুত্বের জয় হয়েছে।