‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা’ নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ শনিবার মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে। বৃত্তি পরীক্ষা নিয়ে ‘বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ঐক্য পরিষদ’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে এ বিবৃতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

শিক্ষাসংশ্লিষ্ট আরও কেউ কেউ এ উদ্যোগে আপত্তি করেছেন। তাঁদের মতে, নির্ধারিতসংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে আয়োজিত এ পরীক্ষা বাস্তবে শিশুদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং এটি শিশুদের বিকাশেরও পরিপন্থী। এতে মেধাবী ও অমেধাবী, এমন একটি বিভাজনও তৈরির আশঙ্কা আছে।

এ বছর থেকে আবারও প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। যদিও প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত পরামর্শক কমিটির প্রধান ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদের মতে, এ পরীক্ষা নেওয়া হলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। তাঁর মতে, এ পরীক্ষা নেওয়ার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই; বরং সামগ্রিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষায় সমতা ও গুণগত মান উন্নত করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

শিক্ষাসংশ্লিষ্ট আরও কেউ কেউ এ উদ্যোগে আপত্তি করেছেন। তাঁদের মতে, নির্ধারিতসংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে আয়োজিত এ পরীক্ষা বাস্তবে শিশুদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং এটি শিশুদের বিকাশেরও পরিপন্থী। এতে মেধাবী ও অমেধাবী, এমন একটি বিভাজনও তৈরির আশঙ্কা আছে।

এদিকে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীদেরও এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন কিন্ডারগার্টেনগুলোর উদ্যোক্তারা।

এ রকম অবস্থায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে।

আরও পড়ুনআবারও বৃত্তি পরীক্ষা, আপত্তি শিক্ষাবিদদের০৯ মে ২০২৫

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই একটি, শুধু পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা’। শিক্ষা জরিপগুলোতে দেখা যায়, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত পরিবারের। পক্ষান্তরে, কিন্ডারগার্টেনের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী তুলনামূলকভাবে সচ্ছল পরিবারের। বৃত্তি পরীক্ষা এই নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে একটি আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কিন্ডারগার্টেনগুলো তাদের অ্যাসোসিয়েশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শুধু কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ‘কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশন বৃত্তি পরীক্ষা’ চালু রেখেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা সে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে না। এ জন্য এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করার দাবি উত্থাপিত হয়।

এ পরীক্ষা নেওয়া হলে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। তাঁর মতে, এ পরীক্ষা নেওয়ার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই; বরং সামগ্রিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষায় সমতা ও গুণগত মান উন্নত করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।মনজুর আহমদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত পরামর্শক কমিটির প্রধান

মন্ত্রণালয় বলছে, দেশের সংবিধান ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা আইন অনুযায়ী দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী সব শিশুর অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ নীতি কার্যকর নেই। যাঁরা নিজেদের সন্তানদের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়ান, তাঁরা স্বেচ্ছায় তা করেন। এসব বিবেচনায় ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষা’ বৈষম্যমূলক, এমন অভিযোগ সঠিক নয়। কারণ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী সব শিশুর জন্যই উন্মুক্ত।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের আগে পৃথকভাবে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো। পঞ্চম শ্রেণির বাছাই করা শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পেত। কিন্তু সেটি বাদ দিয়ে ২০০৯ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য শুরু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা। এতে বৃত্তি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারত সব শিক্ষার্থীই।

শিক্ষা জরিপগুলোতে দেখা যায়, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত পরিবারের। পক্ষান্তরে, কিন্ডারগার্টেনের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী তুলনামূলকভাবে সচ্ছল পরিবারের। বৃত্তি পরীক্ষা এই নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানদের শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে একটি আর্থিক প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে।

যদিও পিইসি পরীক্ষা নিয়েও ব্যাপক সমালোচনা ছিল। কারণ, এ পরীক্ষার নামে একধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কোচিং-প্রাইভেটের প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, ছোটদের এ পরীক্ষাতেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। যদিও করোনা পরিস্থিতি ও এরপর নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা বিবেচনায় পিইসি পরীক্ষা আর হয়নি।

কিন্তু ২০২২ সালে বছরের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে আকস্মিকভাবে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তখনো বিশেষজ্ঞরা সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই বৃত্তি পরীক্ষার ফল নিয়ে ব্যাপক ভুলভ্রান্তির ঘটনা ঘটে।

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ২০২৩ সালেও বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও শেষমেশ তা আর হয়নি। এখন আবার বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।

আরও পড়ুনঅষ্টম শ্রেণিতে আবারও বৃত্তি পরীক্ষা ফিরছে, আছে প্রশ্নও২৮ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ন ড রগ র ট ন এ পর ক ষ ক জ করব র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে ‘তড়কা’ রোগ, প্রতিরোধে যা করবেন

অ্যানথ্রাক্স রোগটি‘তড়কা’ নামেই বহুল পরিচিত। গ্রীক শব্দ ‘অ্যানথ্রাকিস’ বা কয়লা থেকে উদ্ভূত এই নামটি হয়তো অনেকেই জানেন না। তবে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ ঠিকই অবগত।

অ্যানথ্রাক্স নামের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগটি শুধু বন্য বা গৃহপালিত পশুকে নয়, বরং মানুষের জীবনকেও ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে বারবার।

আরো পড়ুন:

১৬ দিন ধরে অচলাবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ বাকৃবি ছাত্রশিবিরের

দ্রুত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, দেশের অ্যানথ্রাক্স পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। সাধারণত গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়াকে আক্রান্ত করে এই ব্যাকটেরিয়া। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই রোগে মারা গেছে অন্তত ১ হাজার গবাদিপশু। আর আক্রান্ত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

সম্প্রতি রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্তের রিপোর্ট করেছেন অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ। এরইমধ্যে এ রোগের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন দুইজন, যা নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০টিরও বেশি মানব অ্যানথ্রাক্স কেস রেকর্ড করা হয়েছে, যার সবগুলোই ছিল ত্বকের অ্যানথ্রাক্স। তবে ১৯৮০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৬ হাজার ৩৫৪টি পশুর অ্যানথ্রাক্স কেস রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে ৯৯৮টি পশুর মৃত্যু হয়েছে। সে হিসাবে মোট মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১৫.৭ শতাংশে।

গবেষণার তথ্য মতে, বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্সের প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা যায় ১৯৮০ সালে। এরপর থেকে এটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বারবার ফিরে এসেছে। বিশেষ করে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও মেহেরপুর জেলাকে ‘অ্যানথ্রাক্স বেল্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে এ রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।

বিশেষজ্ঞরা ময়মনসিংহ, পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলাকে যথাক্রমে উচ্চ, মাঝারি ও নিম্ন-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে, বিশেষত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।

অ্যানথ্রাক্সের মূল কারণ হলো- ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস নামের একটি ব্যাকটেরিয়া, যা সাধারণত মৃত পশুর দেহে পাওয়া যায়। এটি এতই শক্তিশালী যে, জৈবিক অস্ত্র হিসেবেও এর ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। এই ব্যাকটেরিয়া বাতাসে উড়ন্ত স্পোর তৈরি করতে পারে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। 

অ্যানথ্রাক্স নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের স্নাতক রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট অর্ণব সাহা। 

তিনি বলেন, “মানুষ তিনভাবে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে— ত্বকের মাধ্যমে, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এবং খাদ্যগ্রহণের মাধ্যমে। এর মধ্যে ত্বকের অ্যানথ্রাক্স সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এবং এর সুপ্তিকাল সাধারণত দুই থেকে ছয়দিন।”

অন্যদিকে, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সংক্রমিত অ্যানথ্রাক্সের সুপ্তিকাল গড়ে চারদিন, যা ১০-১১ দিন পর্যন্তও হতে পারে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, মোট আক্রান্তের ৯১.৩ শতাংশ মানুষই ত্বকের অ্যানথ্রাক্সে ভুগেছে, যেখানে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল এবং উভয় ধরনের সংক্রমণ ছিল যথাক্রমে ৬.৫২ শতাংশ ও ২.৬৬ শতাংশ।

ত্বকীয় অ্যানথ্রাক্সের ক্ষেত্রে চামড়ায় প্রথমে একটি চুলকানিযুক্ত লাল ফোঁড়া দেখা যায়, যা পরবর্তীতে কালো কেন্দ্রযুক্ত ব্যথাহীন ঘা হিসেবে প্রকাশ পায়। উলের কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যাওয়ায় এটি ‘উল-সর্টার্স ডিজিজ’ নামেও পরিচিত।

সবচেয়ে মারাত্মক ধরণ হচ্ছে শ্বাস-প্রশ্বাসের অ্যানথ্রাক্স। ব্যাকটেরিয়ার স্পোর শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করলে ঠান্ডা, জ্বর ও কাশির মতো উপসর্গ দেখা যায়, যা দ্রুত শ্বাসকষ্ট, শক এবং উচ্চ মৃত্যুহারের দিকে নিয়ে যায়।

অর্ণব বলেন, “প্রাণীদের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স হলে হঠাৎ মৃত্যু সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ। মৃত পশুর নাক, মুখ ও মলদ্বার থেকে কালচে, জমাট না বাঁধা রক্ত বের হয় এবং পেট ফুলে যায়।”

রোগটির প্রতিকার ও প্রতিরোধের বিষয়ে বাকৃবি মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন বলেন, “বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণ ছড়ানোর অন্যতম কারণ হলো জনসচেতনতার অভাব। অসুস্থ পশু জবাই করে তার মাংস কম দামে বিক্রি করার একটি প্রবণতা আমাদের সমাজে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। অনেক বিক্রেতা ও সাধারণ মানুষ জানেনই না যে, এই মাংস থেকে মানুষের শরীরেও রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

“পাশাপাশি, মৃত পশুর দেহ সঠিক উপায়ে অপসারণ না করে খোলা মাঠে, নদী, খাল বা বন্যার পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। এর ফলে এই জীবাণু পরিবেশ ও পশুপালনের জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে, যা নতুন করে সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি করে,” যুক্ত করেন ড. গোলজার।

তিনি বলেন, “অ্যানথ্রাক্সের বিস্তার রোধে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ এই রোগের বিস্তার রোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম- জনসচেতনতা বৃদ্ধি। পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধে জনশিক্ষা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো গবাদি পশুর মধ্যে নিয়মিত এবং ব্যাপক হারে টিকাদান নিশ্চিত করা। সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত টিকাদান কর্মসূচিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে। আমদানি করা ও জবাই করা পশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইন করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।”

ড. গোলজার বলেন, “এছাড়া মৃত পশুর দেহ ও দূষিত পদার্থ সঠিকভাবে মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে হবে এবং অনুমোদিত মাংস বিক্রেতাদের মাধ্যমে এবং পশু চিকিৎসকের পরীক্ষা করা মাংস বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে ‘তড়কা’ রোগ, প্রতিরোধে যা করবেন