১০ হাজার শিক্ষক পাবেন উন্নত প্রশিক্ষণ, বাংলাদেশ–এডিবির মধ্যে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি
Published: 3rd, August 2025 GMT
বিশ্ববাজারে মর্যাদাপূর্ণ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ (টিভিইটি) খাতে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ সরকার ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আজ রোববার রাজধানীর ইআরডি ভবনে এ চুক্তি সই হয়। এই কর্মসূচির আওতায় অন্তত ১০ হাজার শিক্ষক উন্নত প্রশিক্ষণ পাবেন, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর ওপর। টিভিইটি খাতে একটি জাতীয় ধারাবাহিক পেশাদার উন্নয়ন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো.
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণের অগ্রাধিকার অনুযায়ী এই কর্মসূচি পাঁচটি প্রধান প্রযুক্তি ক্লাস্টারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে, সেগুলো হলো—যান্ত্রিক, ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিক্যাল, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, সিভিল, খাদ্য ও কৃষি খাত।
আরও পড়ুনফিনল্যান্ড কীভাবে গড়েছে বিশ্বসেরা শিক্ষাব্যবস্থা, সাফল্যের ৬ কারণ১০ ঘণ্টা আগেএডিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘টিভিইটি টিচার্স ফর দ্য ফিউচার প্রোগ্রাম’ শীর্ষক এই কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাকার বাইরে, বিশেষ করে অনুন্নত অঞ্চলে আধুনিক প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ানো হবে। যান্ত্রিক, ইলেকট্রনিকস, আইসিটি, সিভিল, খাদ্য ও কৃষি প্রযুক্তি খাতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এডিবির বর্তমান সদস্য ৬৯, যার মধ্যে ৫০টি দেশ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের পরিবর্তে উচ্চশিক্ষায় ভারতীয়রা কেন ঝুঁকছেন বাংলাদেশ–সিঙ্গাপুর–উজবেকিস্তান–রাশিয়ার দিকে০২ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এড ব র
এছাড়াও পড়ুন:
তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী চীন পাঠাচ্ছে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল
চীনের সহায়তায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য দেশটির কাছে ঋণও চেয়েছে ঢাকা। এ প্রকল্পে বেইজিংয়েরও আগ্রহ আছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সরেজমিনে তিস্তা প্রকল্প যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশে আসছে চীনের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল।
আজ সোমবার সকালে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে আলোচনায় এ তথ্য জানান ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীনের কাছে প্রায় ৫৫ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। আর এ ঋণের বিষয়ে ইতিবাচক দেশটি। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ প্রকল্পের বিষয়ে চীন যে তীব্র আগ্রহী, তা আসাদ আলম সিয়ামকে জানিয়েছেন ইয়াও ওয়েন। বাংলাদেশও বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়েছে।
চীনের রাস্ট্রদূত জানান, তিস্তা প্রকল্পের বিষয়টিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে তারা কাজ করছেন।
এ ছাড়া বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে হাসপাতাল নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্পের বিষয়েও আলোচনা হয়।
# পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে চীন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক # কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে চীনএ ছাড়া চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের নেওয়া বৈশ্বিক সুশাসন উদ্যোগে (জিজিআই) যোগ দিতে বাংলাদেশকে আগেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিল চীন। পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে বৈঠকে জিজিআইয়ের বিস্তারিত এবং এ উদ্যোগ নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্টের আগ্রহের কথা জানানো হয়। আর জুলাই গণ–অভুত্থ্যানের পর বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ প্রায় ৮০ কোটি ডলারের ওপর এসেছে, যা সবচেয়ে বেশি বলেও জানিয়েছেন ইয়াও ওয়েন।
গত মার্চে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের পর তিস্তা প্রকল্প এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করে অন্তর্বর্তী সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা কমিশনে মে মাসে একটি চিঠি দেয়। তাতে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের ঋণ নেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়। পরে গত জুলাইয়ে চীনা দূতাবাসে চিঠি পাঠায় ইআরডি। চিঠিতে ‘কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন অব তিস্তা রিভার প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নে চীনের কাছে ৫৫ কোটি ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা চলতি বছরের মধ্যেই এ প্রকল্পের আর্থিক চুক্তি সই করতে চায়। এ লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অতীতে আগ্রহ দেখিয়েছিল চীন ও ভারত। ২০২৪ সালের মে মাসের শুরুতে বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়েত্রা তিস্তা প্রকল্পে ভারতের বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারও চেয়েছিল, প্রকল্পটিতে যেন ভারত অর্থায়ন করে।
চীন সফর নিয়ে ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘চীন তো রেডি, কিন্তু আমি চাচ্ছি যে এটা ইন্ডিয়া করে দিক, এই প্রজেক্টটা করলে এই প্রজেক্টটার জন্য যা দরকার, ইন্ডিয়া দিতেই থাকবে। ঠিক আছে? যা সাফ সাফ কথা, রাখঢাক নাই।’
তিস্তা প্রকল্পের প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে চীন থেকে ঋণ চাওয়া হয়েছে ৫৫ কোটি ডলার। বাকিটা করা হবে সরকারি অর্থায়নে। ২০২৬ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করে ২০২৯ সালে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।