বাস ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থী-শ্রমিক দ্বন্দ্বের জেরে সুনামগঞ্জে দূরপাল্লাসহ সব রুটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বিশেষ করে দূরপাল্লায় যাতায়াতকারী মানুষদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে বেশি।

রবিবার(৩ জুলাই) রাতে ধর্মঘটের ঘোষণা দেন সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নূরুল হক।

সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট-ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন সড়কে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে স্থানীয়দের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়েছেন পর্যটকরাও। 

জানা গেছে, রবিবার সকালে বাস ভাড়া নিয়ে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় লোকাল একটি বাসের হেলপার ও চালকের। এ নিয়ে এক পর্যায়ে বাস শ্রমিক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটে। পরে এ ঘটনার জেরে ধরেই বিকেলে সুনামগঞ্জ বাসস্টেশনে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকরা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তারা অবরোধ তুলে নিলেও সন্ধ্যার পর অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘটের ডাক দেন। এরপর থেকে সুনামগঞ্জের সঙ্গে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

সোমবার (৪ জুলাই) সকাল থেকে এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জ থেকে কোনো বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায় নি।

জেলার তাহিরপুর থেকে সকাল ৯টায় সিলেটে যাওয়ার উদ্দেশ্য বের হয়েছিলেন ব্যবসায়ী হারুন রশিদ। কিন্তু পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘট ডাকার জন্যে তিনি তাহিরপুর থেকে সুনামগঞ্জ বাস স্টেশনে এস বিপাকে পড়েছেন।

তিনি বলেন, “গতকাল দুপুরে আমি সিলেটে থেকে সুনামগঞ্জে এসেছি বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিলো, আজ যে ধর্মঘট কারো কাছে শুনিনি। আজ আবার সিলেটে যাওয়ার জন্যে এসেছি, এখন দেখি সব বন্ধ, তারা নাকি রাতেই নাকি ধর্মঘট ডাক দিয়েছে। যেকোনো মূল্যে আজ আমার সিলেট যাওয়া লাগবে।”

সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, “মোটর শ্রমিকদের আচরণ সম্পর্কে তো দেশের সবাই। গতকাল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে এক বাসের হেলপার খারাপ আচরণ করেছে। তাদেরকে মারধর করেছে। এনিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। আমরা চাই, মোটর শ্রমিকদের একটা নিয়মকানুনের মধ্যে আসুক।” 

সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো.

নূরুল হক বলেন, “আমাদের শ্রমিকরা বার বার হেনস্তার শিকার হয়েছে। পরে বিচার দাবি করলে সেটাও পাওয়া যায় না। গতকাল যারা আমাদের হেলপারকে মারধর করেছে, গাড়ি ভাঙচুর করেছে তাদের গ্রেপ্তার, কারান্তরীণ গাড়িচালক দেলোয়ারকে মুক্তি ও সিএনজি পরিবহন শ্রমিক নেতা আনোয়ারের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরা অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট শুরু করেছি। আমাদের দাবি পূরণ না হলে আরো কঠোরভাবে আন্দোলন গড়ে তুলবো।” 

ঢাকা/মনোয়ার/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন মগঞ জ ব পর বহন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

জবি রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের প্রতিবাদে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) রেজিস্ট্রারের অসদাচরণ ও শিক্ষককে অপমান করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা, জগন্নাথে হবে না’, ‘এক দুই তিন চার, রেজিস্ট্রার গদি ছাড়’, ‘স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

আরো পড়ুন:

২ দিনের মধ্যে চাকসুর তফসিল ঘোষণা না করলে চবি শাটডাউনের হুঁশিয়ারি

রাবির সাবেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’র অভিযোগ

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, আমরা কোনো যৌক্তিক প্রশ্ন বা সমস্যা নিয়ে রেজিস্ট্রার অফিসে গেলে সহানুভূতির পরিবর্তে তিনি অপমানজনক ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানান। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার এমন আচরণ পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমনকি আমাদের বিভাগের স্যারের সঙ্গেও একই রকম অসদাচরণ করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, জুলাই পরবর্তী সময়ে এ ধরনের স্বৈরাচারী আচরণ মেনে নেওয়া হবে না।”

একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তা তিনি এখন ক্ষেপে যাওয়া বাছুরের মতো আচরণ করছেন। তিনি যদি ক্ষেপতেই চান, তাহলে মাঠে যাক। স্বৈরাচারের দোসরদের ঠিকানা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে না।”

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষক ইউজিসি ফান্ডেড স্কলারশিপ পাওয়ার পর শর্ত অনুযায়ী একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তিপত্রে রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর নিতে গেলে অপমানজনক আচরণের শিকার হন। স্বাক্ষর দিতে গড়িমসি, লাঞ্চের অজুহাত দেখিয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে যাওয়া এবং দ্রুত চাইলে আরো দেরি হবে বলে মন্তব্য করে শিক্ষককে বারবার হয়রানি করেন রেজিস্ট্রার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে অপমান করা মানে পুরো শিক্ষার্থী সমাজকেই অসম্মান করা উল্লেখ করে তারা দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আল-আকসায় ঢুকে প্রার্থনা করলেন ইসরায়েলি মন্ত্রী
  • জবি রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের প্রতিবাদে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা
  • দুর্ঘটনা-দুর্যোগের পর শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কী করা উচিত
  • ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আবার নতুন দিকে মোড় নিচ্ছে
  • ইসরায়েলি কূটনীতিকদের আরব আমিরাত ছাড়ার নির্দেশ