নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর প্রথম দিন রবিবার (৩ আগস্ট) কাপ্তাই হ্রদ থেকে ১০৫ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়েছে। এ থেকে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি অঞ্চল রাজস্ব আয় করেছে প্রায় ২০ লাখ টাকা।

গত বছর নিষেধাজ্ঞার পর কাপ্তাই হ্রদ থেকে প্রথম দিন ৬৫ মেট্রিক টন মাছ আহরণ হয়। যার বিপরীতে বিএফডিসি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩ লাখ টাকা।

বিএফডিসি সূত্রে জানায়, রাঙামাটি জেলার চারটি অবতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করে বিএফডিসি। জেলা সদরের ঘাট ছাড়াও মারিশ্যা, কাপ্তাই ও মহালছড়ি অবতরণ উপ-কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করা হয়। এ বছর প্রথম দিনে রাঙামাটি ঘাটে ৬৫ মেট্রিক টন, মারিশ্যা ঘাটে ২ মেট্রিক টন, কাপ্তাই ঘাটে ৩০ মেট্রিক টন ও মহলছড়ি ঘাটে ৮ মেট্রিক টন মাছ সংগ্রহ হয়। যা থেকে রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। 

আরো পড়ুন:

সিগারেটের করকাঠামো সংস্কারের দাবি তরুণ চিকিৎসকদের

কুড়িগ্রামে খাজনা আদায়ে ভূমি অফিসে হালখাতা 

কাপ্তাই হ্রদ বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.

আব্দুর শুক্কুর বলেন, ‘‘মাছের কালেকশন ভালো, তবে সাইজে ছোট। মাছ আহরণ বন্ধের শুরু থেকে হ্রদে বৃষ্টি থাকায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পায়নি। একটু রোদ পড়লেই মাছ বড় হয়ে যাবে। আশা করছি, এবছর ভালো ব্যবসা হবে।’’

কাপ্তাই হ্রদ বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, ‘‘যা মাছ এসেছে, তার সব ছোট আকৃতির চাপিলা। এগুলো ঢাকাতে দাম পাই না। চাপিলাতে প্রতি কেজিতে রাজস্ব দিতে হয় ২১.৫০ টাকা। ঢাকা পৌঁছাতে আরো খরচ হয় কেজি প্রতি ৬০ টাকা। অর্থাৎ ঢাকা যখন পৌঁছায় তখন এর খরচ পড়ে ৮০ টাকা। এখন কত টাকা বিক্রি করব, আর জেলেদের কত টাকা দেব? সরকার যদি চাপিলাতে রাজস্ব কমিয়ে ১০ টাকা করে, তবে জেলেরা কিছু টাকা পেতো। প্রয়োজনে কাচকিতে ২ টাকা বাড়তি রাজস্ব নিক।’’

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেন, ‘‘গত বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে সাত হাজার মেট্রিক টন। আমরা ৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ আহরণ করেছি। এবার প্রথম দিনে যে পরিমাণ মাছ আহরণ হয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করছি, এভাবে মাছ আহরণ হলে গত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। মাছের সাইজ একটু ছোট হলেও আশা করছি, সময় গেলে সেই সমস্যা আর থাকবে না।’’

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ট র ক টন ম ছ র প রথম দ ন ম ছ আহরণ ব এফড স ব যবস মৎস য

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উড়োজাহাজে থাপ্পড়ের শিকার যাত্রীর খোঁজ মিলেছে, ঘটনার সময় ভয়ে কাঁপছিলেন তিনি
  • কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু
  • ৯৪ দিন পর চেনা রূপে কাপ্তাই হ্রদ
  • কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে