বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম হারুন-অর-রশীদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ফুফাতো বোন চট্টগ্রাম মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. নাজিবুর নাহার।

সোমবার (৪ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউস থেকে এম হারুন অর রশিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ক্লাবের গেস্ট হাউসের একটি কক্ষে একা ছিলেন তিনি। আজ অনেক বেলা পর্যন্ত তিনি কক্ষ থেকে বের না হওয়ায় ক্লাবের লোকজন বিচলিত হন। দুপুর ১২টার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হলে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম দ্রুত উপস্থিত হন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে কক্ষের তালা খুলে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

ডা.

নাজিবুর নাহার জানান, হারুন-অর-রশীদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেছেন। খবর পেয়ে গেস্ট হাউসে এসে তাকে বিছানায় স্বাভাবিক ঘুমানোর মতো অবস্থায় দেখতে পেয়েছি। সর্বশেষ রবিবার (৩ আগস্ট) রাত ৮টায় পরিবারের সঙ্গে হারুন-অর রশিদের কথা হয়েছিল বলে ডা. নাজিবুর নাহার জানান।

আরো পড়ুন:

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত আদালত

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে উদ্ধারকালে অনভিপ্রেত ঘটনা, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে 

ডা. নাজিবুর নাহার উপস্থিত সাংবাদিকদের আরো জানান, সাবেক সেনা প্রধান হারুন-অর-রশীদ মৃত্যুর আগে তার চোখ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সন্ধানী’তে দান করার অঙ্গীকার করে গেছেন। সেভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

দুপুরের পর চট্টগ্রাম সেনানিবাস থেকে আসা সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্স যোগে হারুন-অর-রশীদের মরদেহ সিএমএইচ এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর তাকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় নিজ গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

হারুন অর রশীদ ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি ২০০০-২০০২ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
 

ঢাকা/রুবেল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে ঈদগাহ মাঠে ‘মেলা’ আয়োজন ঘিরে উত্তেজনা, সংঘর্ষের আশঙ্কা 

রূপগঞ্জে ঈদগাহ মাঠে বাণিজ্যিক বিনোদনমূলক মেলা আয়োজনকে কেন্দ্র করে ফুসে উঠেছে স্থানীয় মুসল্লি ও এলাকাবাসী। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, যেকোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা  মুসল্লিদের মানববন্ধন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি।

দীর্ঘদিনের ধর্মীয় পবিত্রতার প্রতীক দড়িকান্দি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে গান-বাজনা, আনন্দমেলা আর অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ায় ধর্মপ্রাণ মানুষদের মাঝে নেমে এসেছে চরম ক্ষোভ। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বলছেন এই পবিত্র স্থানে মেলা নয়, যেন চলছে ধর্মের উপর প্রকাশ্য আঘাত।

ঈদগাহের পবিত্রতা রক্ষায় অবিলম্বে মেলা বন্ধ ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে শুক্রবার (১ আগস্ট) জুমার নামাজের পর ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন সড়কে মানববন্ধন করেছে শতাধিক মুসল্লি ও স্থানীয় এলাকাবাসি। এসময় দ্রুত মেলা বন্ধের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান তারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃক্ষ মেলা নাম দিয়ে প্রচার চালানো হলেও পহেলা আগস্ট মাঠে শুরু হয় তথাকথিত “রূপগঞ্জ কৃষি ও কুটির শিল্প মেলা। অথচ ভিতরে প্রবেশ করলেই দেখা যায় এক ভিন্ন চিত্র না আছে কৃষি, না আছে কুটির শিল্প। চোখে পড়ে বাহারি সাজসজ্জা, বেপরোয়া গান-বাজনা, উচ্ছৃঙ্খল যুবক-যুবতী, প্রেমিক যুগলের অবাধ বিচরণ এবং দোকানপাটে চলছে বাণিজ্যিক বিনোদনের নামে নানা অপকর্ম।

স্থানীয়রা বলেন, এমন পরিবেশ শুধু ঈদগাহের পবিত্রতাকেই অপমান করছে না, বরং ইসলামি সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধকেও চরমভাবে ক্ষুণ্ন করছে।

মেলার প্রতিবাদে মানববন্ধনের আগে এক মুসল্লির জানাজা অনুষ্ঠিত হয় পাশের মাদ্রাসা মাঠে। ঈদগাহ দখল থাকায় মুসল্লিদের স্থান সংকট ও বিশৃঙ্খলার শিকার হতে হয়। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপস্থিত জনতা।

অভিযোগ রয়েছে, এই মেলার জন্য কোনো বৈধ অনুমতি নেই। তবুও একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় দিনের পর দিন চালিয়ে যাচ্ছে আয়োজকরা। মেলার পেছনে উপজেলার শ্রমিক দলের আহ্বায়ক কনক ও তার অনুসারীদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এলাকাবাসীর আশঙ্কা, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ না করা হলে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে উঠবে। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, অবিলম্বে মেলা বন্ধ করে মাঠের পবিত্রতা ফিরিয়ে আনতে হবে।

এই ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু বলেন, ঈদগাহে মেলার ব্যাপারে কনক নামে এক ব্যক্তি আমার কাছে এসেছিলো । কিন্তু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ঈদগাহ্ মাঠে মেলা হবে শুনে আমি কোন সমর্থন করিনি মেলার সাথে আমি এবং আমার দলের জড়িত না। কেউ যদি প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে করে থাকে তাহলে এই বিষয়ে আমার জানা নেই।

এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, মেলার অনুমতির জন্য আমার কাছে আবেদন নিয়ে আসছিল কনক নামে এক ব্যক্তি। 

আমি আবেদনটি জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে মেলা বন্ধের জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী ও মুসল্লীরা মানববন্ধন করেছে বলে আমি শুনেছি বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ