পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫-২০ টাকা, ডিমের দাম আগের মতো বাড়তি
Published: 5th, August 2025 GMT
আজ ছুটির দিনে রাজধানীর বাজারে ক্রেতার ভিড় চোখে পড়ার মতো। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, আজ বাজারে ক্রেতাসমাগম ও বিক্রি দুটিই ভালো। তবে বাজারে পেঁয়াজ ও আদার ঝাঁজ বেড়েছে। ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতো ডজনপ্রতি সব ধরনের ডিমে এখনো ১০ টাকা বাড়তি। দাম কমেনি ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির।
গত দুই থেকে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। পাশাপাশি বাজারে এখনো চড়া আছে সবজি ও কাঁচা মরিচের দাম। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও কারওয়ান বাজারে এই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঢাকায় আজ কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে ছিল যা ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ, রসুন ও আদার পাইকারি ব্যবসায়ী বশির শেখ বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। আগে এক পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি করতাম ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। এখন বিক্রি করছি ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়। এখনো বাজারে কৃষকের সংরক্ষিত পুরোনো পেঁয়াজ আসছে। তাই সরবরাহ কিছুটা কম। সে জন্য দামও কিছুটা বাড়তি। পরের মৌসুমে নতুন পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম কমে যাবে।’
বাজারে ডিমের দাম উঠেছে ডজনপ্রতি ১৩০-১৪০ টাকা। গত সপ্তাহ থেকে ডজনপ্রতি এই দামেই বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারে পাইকারি দামে সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা ডজন ও লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। এর সঙ্গে ঢাকায় আজ প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিন সপ্তাহ আগে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। সপ্তাহ দুয়েক আগে এই মুরগির কেজি ছিল ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। সেই হিসাবে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা ও সোনালি মুরগি কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে।
খুচরা বিক্রেতা জানান, গতকালও মুরগির দাম কমেছিল। ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। তবে বিক্রি ভালো ছিল না। আজ ছুটির দিন হওয়ায় বাজারে ক্রেতার ভিড় বেশি থাকবে বলে পাইকারি বাজারে মুরগির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে পাইকাররা। এ কারণে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে গত দুই থেকে তিন সপ্তাহ মৌসুমি বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বেড়েছে। আজ রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে। তবে মৌসুমি বৃষ্টি শুরুর আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ কেনা যেত ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। বিক্রেতারা জানান, বাজারে এখন দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের সরবরাহ কিছুটা কম। এই সুযোগে সরবরাহ বেড়েছে ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচা মরিচের। এটিও মরিচের দাম বেড়ে যাওয়ার একটি কারণ।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির দামও আগের তুলনায় বেশি। করলা, কাঁকরোল, বেগুন, বরবটিসহ অধিকাংশ সবজির কেজি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকার আশপাশে। দেশি টমেটো এখন পাওয়া যায় না বললেই চলে। এ কারণে আমদানি করা টমেটোর দাম বেশি, প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। তবে বেড়েছে বেগুনের দাম। গোল ও লম্বা আকৃতির বেগুনের দাম প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আনিস বলেন, সব ধরনের সবজির দাম বৃষ্টির কারণে কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি সবজিভেদে ৫-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে সরবরাহ ভালো। বৃষ্টি থামলে শাকসবজির দাম হয়তো কিছুটা কমবে।
মাস দেড়েক আগে বাজারে মিনিকেট চালের দাম বেড়েছিল। এখনো সে দামেই বাজারে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে ডায়মন্ড, সাগর, মঞ্জুর প্রভৃতি ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল ৮০ টাকা ও মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট ৮৫-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক রওয় ন ব জ র সবজ র দ ম সরবর হ ২০ ট ক ম রগ র ৮০ ট ক
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।
ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।
কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’
ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টশুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।
জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং