পাবনা সদর উপজেলার গাছপাড়া থেকে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। 

তবে রাস্তা ঠিকঠাকের জন্য কয়েক দফা টেন্ডার দিয়েও যোগ্য ঠিকাদার পাচ্ছে না পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ফলে থমকে আছে সড়ক মেরামত কাজ।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে মহাসড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, গাছপাড়া থেকে মজিদপুর পর্যন্ত সড়কটি ভাল থাকলেও টেবুনিয়া থেকে শুরু হয়েছে ভাঙাচোরা। আটমাইল, কালিকাপুর, সুগার মিলের সামনে, দাশুড়িয়া পাওয়ার আগে কয়েক জায়গায় মহাসড়কটির মাঝখানে ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত। মাঝেমধ্যে খোয়া, পিচ দিয়ে খানা খন্দ ভরাট করলেও টিকছে না বেশিদিন। সম্প্রতি প্রবল বর্ষণে আবারো শুরু হয়েছে ভাঙাচোরা আর গর্ত। অনেক জায়গায় আবার সড়ক দেবে এবড়ো থেবড়ো হয়ে গেছে।

টেবুনিয়া বাজারে কথা হয় অটোরিকশা চালক সাইফুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, ‌“এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। টেবুনিয়া বাজারের অবস্থা বেশি খারাপ। গাড়ি নিয়ে চলাচল করা কষ্ট। মাঝেমধ্যেই গাড়ি নষ্ট হয়। মহাসড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।”

টেবুনিয়া থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ঈশ্বরদী যাচ্ছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আসলাম উদ্দিন। তিনি বলেন, “এই মহাসড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক দিয়ে পাবনা থেকে ঢাকা, রাজশাহী, কুষ্টিয়াসহ উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙা আর গর্তের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে।”

পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য বলছে, গাছপাড়া থেকে দাশুড়িয়া পর্যন্ত মহাসগড়কটির দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। পাঁচ বছর আগে শেষবার মেরামত কাজ হয়েছে মহাসড়কটিতে। এরপর আর বড় ধরনের কোনো মেরামত কাজ হয়নি। মহাসড়ক হওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাবনা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সড়ক উপ-বিভাগ-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাদিকুর রহমান বলেন, “মহাসড়কটি মেরামতের জন্য ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দফা টেন্ডার দেওয়ার পরও যোগ্য ঠিকাদার পাওয়া যাচ্ছে না। সর্বশেষ ২০২৪ সালে টেন্ডার হয়েছিল। কিন্তু টেন্ডারের শর্ত মোতাবেক ঠিকাদারদের কাগজপত্র পাওয়া যায় না। আবার অনেকে কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদার বরে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক কারণে বড় বড় ঠিকাদাররা পালিয়ে গেছে। এমন নানা কারণে যোগ্য ঠিকাদার নির্ধারণে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এজন্য মহাসড়কটি মেরামত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সামনে আবারো টেন্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। যোগ্য ঠিকাদার পেলেই মেরামত কাজ শুরু হবে।’’

ঢাকা/শাহীন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র মত ক জ দ র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর

শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।

পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।

একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।

সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।

একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।

ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।

শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।

ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
  • নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে সড়ক সংস্কার, দুদকের অভিযান