পাবনা-দাশুড়িয়া মহাসড়কে খানাখন্দ; যোগ্য ঠিকাদার পাচ্ছে না সওজ
Published: 27th, August 2025 GMT
পাবনা সদর উপজেলার গাছপাড়া থেকে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চালক ও যাত্রীদের। ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
তবে রাস্তা ঠিকঠাকের জন্য কয়েক দফা টেন্ডার দিয়েও যোগ্য ঠিকাদার পাচ্ছে না পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ফলে থমকে আছে সড়ক মেরামত কাজ।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে মহাসড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, গাছপাড়া থেকে মজিদপুর পর্যন্ত সড়কটি ভাল থাকলেও টেবুনিয়া থেকে শুরু হয়েছে ভাঙাচোরা। আটমাইল, কালিকাপুর, সুগার মিলের সামনে, দাশুড়িয়া পাওয়ার আগে কয়েক জায়গায় মহাসড়কটির মাঝখানে ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট বড় গর্ত। মাঝেমধ্যে খোয়া, পিচ দিয়ে খানা খন্দ ভরাট করলেও টিকছে না বেশিদিন। সম্প্রতি প্রবল বর্ষণে আবারো শুরু হয়েছে ভাঙাচোরা আর গর্ত। অনেক জায়গায় আবার সড়ক দেবে এবড়ো থেবড়ো হয়ে গেছে।
টেবুনিয়া বাজারে কথা হয় অটোরিকশা চালক সাইফুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, “এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। টেবুনিয়া বাজারের অবস্থা বেশি খারাপ। গাড়ি নিয়ে চলাচল করা কষ্ট। মাঝেমধ্যেই গাড়ি নষ্ট হয়। মহাসড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।”
টেবুনিয়া থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় ঈশ্বরদী যাচ্ছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আসলাম উদ্দিন। তিনি বলেন, “এই মহাসড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক দিয়ে পাবনা থেকে ঢাকা, রাজশাহী, কুষ্টিয়াসহ উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙা আর গর্তের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে আমাদের চলাচল করতে হচ্ছে।”
পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্য বলছে, গাছপাড়া থেকে দাশুড়িয়া পর্যন্ত মহাসগড়কটির দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। পাঁচ বছর আগে শেষবার মেরামত কাজ হয়েছে মহাসড়কটিতে। এরপর আর বড় ধরনের কোনো মেরামত কাজ হয়নি। মহাসড়ক হওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাবনা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সড়ক উপ-বিভাগ-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাদিকুর রহমান বলেন, “মহাসড়কটি মেরামতের জন্য ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। কয়েক দফা টেন্ডার দেওয়ার পরও যোগ্য ঠিকাদার পাওয়া যাচ্ছে না। সর্বশেষ ২০২৪ সালে টেন্ডার হয়েছিল। কিন্তু টেন্ডারের শর্ত মোতাবেক ঠিকাদারদের কাগজপত্র পাওয়া যায় না। আবার অনেকে কালো তালিকাভুক্ত ঠিকাদার বরে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক কারণে বড় বড় ঠিকাদাররা পালিয়ে গেছে। এমন নানা কারণে যোগ্য ঠিকাদার নির্ধারণে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এজন্য মহাসড়কটি মেরামত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সামনে আবারো টেন্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। যোগ্য ঠিকাদার পেলেই মেরামত কাজ শুরু হবে।’’
ঢাকা/শাহীন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র মত ক জ দ র ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।
বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।
এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস