আগামী ৯ সেপ্টেম্বর আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে মোট আটটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একজন ভোটার ভোট প্রদানের জন্য ৮ মিনিট সময় পাবেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনস্থ চিফ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড.

মো. জসীম উদ্দিন।

আরো পড়ুন:

ডাকসুর ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর দাবি বিনির্মাণ পর্ষদের

ঢাবিতে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৬৫ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

তিনি বলেন, “সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট দেওয়া যাবে। ভোট কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী পর্যাপ্ত বুথ স্থাপন করা হবে। একজন ভোটার ভোট দিতে সময় পাবেন ৮ মিনিট।”

তিনি আরো বলেন, “ভোট কেন্দ্র বাড়ানোর জন্য শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। ছয়টি কেন্দ্র থেকে আটটি করা হয়েছে। আপাতত আমরা কেন্দ্র বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি না।”

এ কর্মকর্তা বলেন, “স্ক্যানিং মেশিন দিয়ে ভোট গণনা করা হবে। মেশিনের সক্ষমতা অনেক। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভোটের ফলাফল প্রদান করার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।”

ডাকসুর রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী বলেন, “ভোটের মাঠ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চেষ্টা কোনো কমতি নেই এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দিতে চাই আমরা।”

তিনি বলেন, “আমরা যখন যে অভিযোগ পাচ্ছি, সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একজন প্রার্থী গান-বাজনা করে ইশতেহার প্রকাশ করেছিল। তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এরপর আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সেনাবাহিনী মোতায়নের বিষয়ে গোলাম রাব্বানী বলেন, “আসন্ন ডাকসু নির্বাচন সুন্দর ও স্বচ্ছ করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার বিষয়টা আমাদের জানিয়েছেন এবং তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলেছি, নিরাপত্তার ইস্যুতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা সেনাবাহিনীকে সাহায্যের কথা জানাব।”

এর আগে, ডাকসুকে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তার কথা জানিয়েছিলো নির্বাচন কমিশন। যেখানে সেনাবাহিনী অংশ নেবে বলে জানানো হয়েছিল।

তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এসব নির্বাচনগুলোতে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো দায়িত্বে সম্পৃক্ত হবার সুযোগ নেই।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে