ঝিনাইদহে নিজের বন্দুকের গুলিতে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
Published: 5th, September 2025 GMT
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নজরুল ইসলাম নজু (৭২) নামের এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নিজের লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কোটচাঁদপুর উপজেলার সলেমনাপুর গ্রামের উত্তর পাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নজরুল ইসলাম নজু ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিম বিশ্বাসের ছেলে। তিনি কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরে দীর্ঘদিন ধরে কাপড়ের ব্যবসা করছিলেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সলেমানপুর উত্তর পাড়ায় দোতলা বাড়িতে স্ত্রী এবং ছেলে ও পুত্রবধূকে নিয়ে বাস করতেন নজু। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার দিকে দোতলা থেকে নিচতলার একটি কক্ষে চলে আসেন তিনি। এ সময় দোতলার প্রধান ফটকে সিটকিনি লাগিয়ে দেন। ভোররাতে নিজের লাইসেন্স করা বন্দুক দিয়ে মাথায় গুলি করেন নজু। পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশে খবর দেন। শুক্রবার সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন মাতব্বর বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে নজরুল ইসলাম নজুর পরিবারে ঝামেলা চলছিল। এছাড়া, ব্যাংকের ঋণ ছিল তার। আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি।
ঢাকা/সোহাগ/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’
আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।
আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।
ঢাকা/সৈকত/রাজীব