জমিয়ত নেতা মুশতাক হত্যা: হাফিজ ৩ দিন রিমান্ডে
Published: 10th, September 2025 GMT
সুনামগঞ্জে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর (৫২) হত্যা মামলায় জমিয়তের অপর পক্ষের নেতা এম আব্দুল হাফিজকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার ( ১০ সেপ্টেম্বর ) দুপুরে দিরাই আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল আদালতে তাকে হাজির করা হলে বিচারক এফ এম সাফায়েত সালাম এই রায় মঞ্জুর করেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে ৩৫ কাঠুরিয়া হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন
আদালতের দোতলা থেকে লাফ দিয়ে আসামির পালানোর চেষ্টা
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেরে নূর আলী রাইজিংবিডি-কে রিমান্ডের তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের প্রিয় ব্যক্তি গাজীনগরী হুজুরের জন্য আজ শতাধিক আইনজীবী আদালতে দাঁড়িয়েছিলাম; আমরা আশা করি, এই হত্যার আসল রহস্য উদঘাটন হবে। আদালত আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’’
আব্দুল হাফিজ শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপুর গ্রামের আলিফ পাঠানের ছেলে। তিনি উপজেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক এবং সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনে জমিয়তের একাংশের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী সৈয়দ তালহা আলমের রাজনৈতিক উপদেষ্টা।
এদিকে, আলোচিত মুশতাক হত্যার এজাহারভুক্ত আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর রায়ের পর খুনিদের ফাঁসির দাবিতে আদালত চত্বরে শত শত তৌহিদী জনতা বিক্ষোভ করেন। পরে সেখান থেকে জমিয়তের বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা একটি মিছিল করে ট্রাফিক পয়েন্টে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জমিয়তের সুনামগঞ্জ জেলা সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তৈয়্যিবুর রহমান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে জমিয়ত মনোনীত প্রার্থী মাওলানা হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী, জেলা জমিয়তের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা রফিক আহমদ উলাশনগরী, মাওলানা আরশাদ নোমান, যুবনেতা ত্বোহা হোসাইন প্রমুখ।
মাওলানা মুশতাক আহমদ গাজীনগরীর হত্যা মামলায় সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোরে সিলেট থেকে অভিযুক্ত এম আব্দুল হাফিজকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ওইদিন বিকেলে দিরাই আদালতের বিচারক সাফায়েত সালামের আদালতে তাকে সোপর্দ করা হলে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গ্রেপ্তার আসামিকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়।
জমিয়ত দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাওলানা মুশতাক ফোন করে তার স্ত্রী রুবি বেগমকে জানিয়েছিলেন, এক ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু তিনি বাড়িতে ফিরে না আসায় আত্মীয়-স্বজনেরা তার খোঁজ করতে থাকেন। তার খোঁজ না পাওয়ায় পরের দিন শান্তিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন স্ত্রী রুবি বেগম। নিখোঁজের তিন দিন পর শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে দিরাই উপজেলার শরিফপুর ইটভাটা এলাকার নদীতে মাওলানা মুশতাকের ভাসমান লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে।
ঢাকা/মনোয়ার/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য স প ট ম বর স ন মগঞ জ গ জ নগর জ র কর ম শত ক
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।
ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।