জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার ৭৭তম আসর বসেছে। এবারের মেলায় শতাধিক দেশের প্রকাশক ও গণমাধ্যম বিষয়ক ব্যবসায়ীরা উপস্থিত থাকবেন। মেলায় এবারের অতিথি দেশ ফিলিপাইন। দেশটি বইমেলায় তাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি উপস্থাপন করবে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জার্মানির সংস্কৃতি ও গণমাধ্যম বিষয়ক প্রতিনিধি উলফ্রাম ভাইমার। আজ বুধবার থেকে মেলা প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হবে। মেলা চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।

ফ্রাঙ্কফুর্ট কংগ্রেস সেন্টারে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উলফ্রাম ভাইমার বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সাহিত্য ও বইয়ের জগতকে তছনছ করে দেবে। এই ডেটা-মাইনিং প্রযুক্তি অসংখ্য মানুষের সৃজনশীল শক্তিকে হ্রাস করছে। তিনি বলেন, ‘আমি এটাকে মানসিক ভ্যাম্পিরিজম বলি। সিলিকন ভ্যালি থেকে শেনজেন পর্যন্ত ডেটা সেন্টারগুলোতে যা ঘটছে, তা এক প্রকার দস্যুতা।’

জার্মানির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিনিধি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রযুক্তি-জায়ান্টরা বিশ্বজুড়ে সংস্কৃতিগুলোকে তাদের প্রোগ্রামের কাঁচামালে পরিণত করছে। তিনি বলেন, ‘আমি বলবো এটা ডিজিটাল ঔপনিবেশিকতা, যা আমরা আর মেনে নিতে পারি না। এসব কোম্পানিকে করের আওতায় এবং আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।’

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার পরিচালক ইউরগেন বোস বলেন, এই এআই বিতর্কই ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলা থেকে শুরু হয়েছে। যেখান থেকে প্রকাশনা জগৎ সমাবেতভাবে ভবিষ্যতের চিন্তা ও কৌশল নির্ধারণ করে।

ইউরগেন বোস আরও বলেন, জার্মান বইশিল্প বর্তমানে কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থায় টিকে আছে। শুধু জার্মান ভাষাভাষী অঞ্চলেই নয় বিশ্বজুড়েই বইশিল্পে আর্থিক সংযমের বিষয় কাজ করছে।

এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হাঙ্গেরির লেখক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। কিন্তু স্বাস্থ্যগত কারণে উদ্বোধনী সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি।

লাসলো ক্রাসনাহোরকাই জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিসের বার্লিন আর্টিস্ট-ইন-রেসিডেন্স প্রোগ্রামের আমন্ত্রণে ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তৎকালীন রাজধানী পশ্চিম বার্লিনে বসবাস এবং গবেষণা কাজ করেছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে সাহিত্যিক বক্তা হিসেবে ছিলেন জার্মান লেখিকা নোরা হাদ্দাদা।

জার্মানিসহ বিশ্বের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে ১৯৪৯ সালে প্রথম এ মেলার আয়োজন করা হয়। চলমান ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে মধ্য জার্মানির অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্য শহর ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যেই জমায়েত হতে শুরু করেছে বই ও মিডিয়া সংশ্লিষ্টরা।

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা মূলত বই শিল্প, প্রযুক্তি খাত এবং চলচ্চিত্র এবং গেমসের মতো সংশ্লিষ্ট সৃজনশীল শিল্পের বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। মেলায় প্রদর্শকেরা তাদের সর্বশেষ সৃষ্টিশীল উদ্ভাবনী উপস্থাপন করেন এবং চুক্তি সম্পাদন করেন।

সাহিত্যিক এজেন্ট ও প্রকাশকেরা আগামীর সেরা বিক্রেতাদের সন্ধান করেন। বই ও মিডিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বই শিল্পের সর্বশেষ ক্রমবর্ধমান পরিবর্তন এবং বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

এ বছর প্রথমবারের মতো মেলার শেষ তিনদিন বই বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়ার মেলায় বই ও মিডিয়া জগতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন কর ন উপস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা শুরু, এআই–এর ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণের আহ্বান

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার ৭৭তম আসর বসেছে। এবারের মেলায় শতাধিক দেশের প্রকাশক ও গণমাধ্যম বিষয়ক ব্যবসায়ীরা উপস্থিত থাকবেন। মেলায় এবারের অতিথি দেশ ফিলিপাইন। দেশটি বইমেলায় তাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি উপস্থাপন করবে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জার্মানির সংস্কৃতি ও গণমাধ্যম বিষয়ক প্রতিনিধি উলফ্রাম ভাইমার। আজ বুধবার থেকে মেলা প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হবে। মেলা চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।

ফ্রাঙ্কফুর্ট কংগ্রেস সেন্টারে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উলফ্রাম ভাইমার বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সাহিত্য ও বইয়ের জগতকে তছনছ করে দেবে। এই ডেটা-মাইনিং প্রযুক্তি অসংখ্য মানুষের সৃজনশীল শক্তিকে হ্রাস করছে। তিনি বলেন, ‘আমি এটাকে মানসিক ভ্যাম্পিরিজম বলি। সিলিকন ভ্যালি থেকে শেনজেন পর্যন্ত ডেটা সেন্টারগুলোতে যা ঘটছে, তা এক প্রকার দস্যুতা।’

জার্মানির সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিনিধি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রযুক্তি-জায়ান্টরা বিশ্বজুড়ে সংস্কৃতিগুলোকে তাদের প্রোগ্রামের কাঁচামালে পরিণত করছে। তিনি বলেন, ‘আমি বলবো এটা ডিজিটাল ঔপনিবেশিকতা, যা আমরা আর মেনে নিতে পারি না। এসব কোম্পানিকে করের আওতায় এবং আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।’

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার পরিচালক ইউরগেন বোস বলেন, এই এআই বিতর্কই ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলা থেকে শুরু হয়েছে। যেখান থেকে প্রকাশনা জগৎ সমাবেতভাবে ভবিষ্যতের চিন্তা ও কৌশল নির্ধারণ করে।

ইউরগেন বোস আরও বলেন, জার্মান বইশিল্প বর্তমানে কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থায় টিকে আছে। শুধু জার্মান ভাষাভাষী অঞ্চলেই নয় বিশ্বজুড়েই বইশিল্পে আর্থিক সংযমের বিষয় কাজ করছে।

এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হাঙ্গেরির লেখক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই। কিন্তু স্বাস্থ্যগত কারণে উদ্বোধনী সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে পারেননি।

লাসলো ক্রাসনাহোরকাই জার্মান একাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিসের বার্লিন আর্টিস্ট-ইন-রেসিডেন্স প্রোগ্রামের আমন্ত্রণে ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তৎকালীন রাজধানী পশ্চিম বার্লিনে বসবাস এবং গবেষণা কাজ করেছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে সাহিত্যিক বক্তা হিসেবে ছিলেন জার্মান লেখিকা নোরা হাদ্দাদা।

জার্মানিসহ বিশ্বের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে ১৯৪৯ সালে প্রথম এ মেলার আয়োজন করা হয়। চলমান ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে মধ্য জার্মানির অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্য শহর ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যেই জমায়েত হতে শুরু করেছে বই ও মিডিয়া সংশ্লিষ্টরা।

ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা মূলত বই শিল্প, প্রযুক্তি খাত এবং চলচ্চিত্র এবং গেমসের মতো সংশ্লিষ্ট সৃজনশীল শিল্পের বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। মেলায় প্রদর্শকেরা তাদের সর্বশেষ সৃষ্টিশীল উদ্ভাবনী উপস্থাপন করেন এবং চুক্তি সম্পাদন করেন।

সাহিত্যিক এজেন্ট ও প্রকাশকেরা আগামীর সেরা বিক্রেতাদের সন্ধান করেন। বই ও মিডিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বই শিল্পের সর্বশেষ ক্রমবর্ধমান পরিবর্তন এবং বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।

এ বছর প্রথমবারের মতো মেলার শেষ তিনদিন বই বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়ার মেলায় বই ও মিডিয়া জগতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ