আশুলিয়ায় পুড়িয়ে দেওয়া একজনের পরিচয় শনাক্ত, কবর থেকে তুলে পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ
Published: 16th, November 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় যে ছয়জনকে পোড়ানো হয়েছিল, ডিএনএ পরীক্ষায় তাঁদের মধ্যে একজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। কবর থেকে তাঁর মরদেহ তুলে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
ওই ব্যক্তির নাম আবুল হোসেন। আশুলিয়ার আমবাগান গোরস্তানে আবুল হোসেনের মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। আবুল হোসেনের নাম জুলাই শহীদদের তালিকায় অন্তর্ভুক্তির নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ আজ রোববার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো.
শহীদ আবুল হোসেনের স্ত্রীর নাম লাকি আক্তার। কুমিল্লার মুরাদনগর থানার ফুলঘর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন আবুল হোসেন।
আরও পড়ুনভ্যানে লাশের স্তূপ করছে পুলিশ, ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যা জানা গেল৩১ আগস্ট ২০২৪গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নির্বিচার গুলি চালালে বেশ কয়েকজন নিহত হন। আহত হন অনেকে। রাতে আশুলিয়া থানার অদূরে নবীনগর থেকে চন্দ্রাগামী মহাসড়কের এক পাশে ‘পুলিশ’ লেখা পিকআপের আগুনে ভস্মীভূত অন্তত দুটি মরদেহ দেখেন বলে জানান স্থানীয় লোকজন। এ ছাড়া থানার সামনে আগুনে পোড়া একটি মরদেহ ছিল। পদচারী-সেতুতে উল্টো করে ঝোলানো ছিল ক্ষতবিক্ষত দুই পুলিশ সদস্যের মরদেহ। তখন স্থানীয় লোকজন আগুনে ভস্মীভূত একাধিক মরদেহ পিকআপে থাকতে পারে বলে ধারণা করেছিলেন। ওই রাতে আশুলিয়া থানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় সে সময়।
আরও পড়ুনসজলকে ধরে রাখে রনি, পরে একটি গুলির শব্দ পাই০৫ নভেম্বর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদের যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এরশাদ হালিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর শ্যাওড়াপাড়ার নিজ বাসা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
পরে রাতেই ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় যৌন নিপীড়ন ও মারধরের অভিযোগ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আজ শুক্রবার ওই শিক্ষককে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
অধ্যাপক এরশাদ হালিমের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে গতকাল ফেসবুকে লিখতে থাকেন তাঁর বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে গতকাল রাতে টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতিতে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাঁরা অবিলম্বে এই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এর মধ্যে একজন শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে তার বিস্তারিত বিবরণ ফেসবুকে তুলে ধরেন। পরে রাতেই শিক্ষককে তাঁর বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
অধ্যাপক এরশাদ হালিমের বিচার দাবিতে সোচ্চার হওয়া শিক্ষার্থীদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ফজলুল হক মুসলিম হল সংসদের সহসভাপতি আবু নাঈম। তিনি আজ শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেছেন, এখন পর্যন্ত ১২ জন শিক্ষার্থী ওই শিক্ষকের যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা তাঁদেরকে জানিয়েছেন।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উনার নিপীড়নের শিকার হয়েছেন দাবি করে আবু নাঈদ বলেন, ‘নিপীড়নের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ঠিক কত তা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। বিষয়টি সামনে আসার পর অন্তত ১২ জন ছাত্র তথ্য–প্রমাণসহ তার এমন কার্যকলাপের বিষয়ে আমাদেরকে জানিয়েছেন। প্রতিদিনই নতুন কেউ না কেউ জানাচ্ছেন।’
শিক্ষকের নিপীড়নের শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ওই শিক্ষার্থী বলেছেন, তিনি পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি সমস্যায় পড়েছিলেন। সেটা ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে ওই শিক্ষক তাঁর শ্যাওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নেন। আলাপচারিতার এক পর্যায়ে ওই শিক্ষক তাঁকে যৌন নিপীড়ন করেন এবং বিষয়টি যাতে প্রকাশ না করেন সেজন্য ভয়–ভীতি দেখান। এরপরেও কয়েকবার ওই শিক্ষার্থীকে ভয়–ভীতি দেখিয়ে শ্যাওড়াপাড়ার বাসায় নিয়ে তিনি যৌন নিপীড়ন ও মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ আসার পর ওই শিক্ষককে সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আদালতে শিক্ষককে নির্দোষ দাবি
আজ বিকেলে অধ্যাপক এরশাদ হালিমকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মেহেদী হাসান। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী শ্যামল কুমার রায় তাঁর জামিন চান। শুনানিতে তিনি বলেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ। মূলত কয়েক মাস পর তাঁর বিভাগীয় প্রধান হওয়ার সুযোগ আসছে। সেজন্য
অন্য শিক্ষকেরা তাঁকে ফাঁসিয়েছে। তাঁর স্ত্রী ও অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া সন্তান আছে উল্লেখ করে তিনি কেন এসব করবেন, সেকথা বলা হয়।
শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এরশাদ হালিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ছাত্রদের যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এরশাদ হালিমের শাস্তি দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে