কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণসহ সীমান্তের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ডেকে বাংলাদেশের উদ্বেগ জানানোর পরদিন আজ সোমবার ভারতও নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার নুরাল ইসলামকে তলব করেছে।

আজ সোমবার দুপুরে সাউথ ব্লকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব বি শ্যামের সঙ্গে দেখা করতে যান ডেপুটি হাইকমিশনার নুরাল ইসলাম ও ফার্স্ট সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল) আলমগীর হোসেন।

গতকাল রোরবার ঢাকায় প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো.

জসীম উদ্দিন। সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেই বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা তাঁকে জানানো হয়। প্রণয়কে বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়, এমন কোনো কাজ সীমান্তে করা ঠিক হবে না।

সেই বৈঠকের পর প্রণয় ভার্মা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সীমান্ত অপরাধমুক্ত করার বিষয়ে ভারতের তাগিদ নিয়ে তাঁদের কথা হয়েছে। চোরাচালান, মানব পাচার ও অপরাধীদের আসা–যাওয়া বন্ধ করে সীমান্ত অপরাধশূন্য করতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সে কথা বাংলাদেশকে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব বৈঠকের পর জানিয়েছিলেন, বর্তমান সীমান্ত পরিস্থিতি অনাকাঙ্ক্ষিত। সীমান্তে এখনো নাগরিক হত্যা চলছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগের কথা তাঁকে জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্রসচিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘সীমান্তে এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। সম্প্রতি সীমান্তে বাংলাদেশের একজন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে আমরা সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি।’

বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ভারতের তরফ থেকে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেই কারণে বিভিন্ন উন্মুক্ত সীমান্তাঞ্চলে, যেখানে কাঁটাতারের বেড়া নেই, সেখানে বেড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সূত্রের খবর, আজ সোমবার বাংলাদেশকে সে কথাই জানানো হয়। বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারকে বলা হয়েছে, ভারত যা কিছু করছে, তা নিজের ভূখণ্ডে। নিয়ম মেনে। দুই দেশের সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফোনে খালেদা জিয়া বললেন, ‘ভাই, জিয়াকে ড্রয়িংরুমে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’

৭৫-এর উত্তপ্ত নভেম্বর

শেখ মুজিব হত্যার পর বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী ছিল দ্বিধাগ্রস্ত এবং দেশ প্রতিদিন অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। এদিকে খন্দকার মোশতাক ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা সর্বজনাব নজরুল ইসলাম তাজউদ্দীন আহমেদ, মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও আবদুস সামাদ আজাদকে আটক করেন এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করে রাখেন। বাতাসে প্রতিনিয়ত নানা গুজব উড়ছিল ও সাধারণ নাগরিকগণ ভয়ভীতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। সেনানিবাসেও অস্থিরতা বিরাজ করছিল এবং ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল যে, নিজেদের মধ্যে যে-কোনো সময়ে সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে আর্মিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি ছিল।

পদাতিক বাহিনীর মধ্যে, বিশেষ করে ঢাকা ব্রিগেডের ১ম, ২য় ও ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের অফিসারগণ মেজর ফারুক, রশিদ ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠছিল এবং আর্মির চেইন অফ কমান্ড পুনঃস্থাপনের জন্য তৎকালীন ব্রিগেড অধিনায়ক কর্নেল শাফায়াত জামিলও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন। কারণ তাঁর অধীনস্থ অফিসার ও সৈন্যগণই তাঁর সার্বিক কর্তৃত্ব উপেক্ষা করে শেখ মুজিব হত্যায় জড়িত ছিল। এ পরিস্থিতিতে সেনাসদরে ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফও সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসারদের অনিয়ম ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা বলে উত্তেজিত করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন।

মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব.) বীরবিক্রম

সম্পর্কিত নিবন্ধ