কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার একটি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে এপিবিএন পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে কুতুপালং ৩ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের এফ-৭৫ ব্লকের একটি শৌচাগার থেকে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন ওই আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দা ও মৃত রশিদ আহম্মদের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৫৫) ও তাঁর মেয়ে সুবাইদা বিবি (১৮)।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার বরাতে ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (এডিআইজি) মো.

সিরাজ আমিন জানান, আজ ভোরে নামাজ আদায়ের জন্য ঘুম থেকে জেগে ওঠেন মমতাজের দুই ছেলে নুরুল হক ও রবিউল আলম। পাশে মা ও বোনের কক্ষে বাতি জ্বালানো দেখে এগিয়ে গিয়ে দেখেন, তাঁরা কক্ষে নেই। পরে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে মমতাজ ও সুবাইদাকে একটি শৌচাগারের মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মা ও মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মমতাজ ও সুবাইদা বেশ কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়া, জ্বর ও গলার ব্যথায় ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন মমতাজের ছেলে নুরুল ও রবিউল। তবে মৃত্যুর যথাযথ কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসেন বলেন, মমতাজ বেগমের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে সুবাইদার কপালে লালচে দাগ, গলায় সামান্য দাগ ও কানের পেছনে সামান্য রক্ত দেখা গেছে। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি হত্যাকাণ্ড, তা জানতে তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল

ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি

বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। 

কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‍“বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”

বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ