জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করার বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব আহমেদ শিবলী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে সম্পন্ন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ এবং দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রণয়ন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অবশিষ্ট কার্যক্রম সম্পন্ন করার লক্ষ্যে চলমান প্রকল্পের পুনর্মূল্যায়ন ও আরডিপিপি প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।

২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আবাসিক হলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মাসব্যাপী আন্দোলনের মুখে কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের সিদ্ধান্ত জানায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।

অ্যাকাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, আবাসন ব্যবস্থা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ, চিকিৎসা কেন্দ্র, সুইমিংপুল, লেক নির্মাণসহ উন্নতমানের ক্যাম্পাস তৈরির মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে তেঘরিয়ার পশ্চিমদি মৌজায় ২০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের অনুমোদন দেওয়া হয়। 

২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর জমির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় ভূমি মন্ত্রণালয়। ৯ অক্টোবর নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের জন্য প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। এক হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের অক্টোবরের মধ্যে।

পরের বছর ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি মোট ২০০ একর জমির মধ্যে ১৮৮ দশমিক ৬০ একর জমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বুঝে পায়। কিন্তু এখনো অবশিষ্ট ১১ দশমিক ৪০ একর জমি বুঝে পায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গত অগাস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব সেনাবাহিনীর হাতে দেওয়াসহ তিন দাবিতে আন্দোলনে নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত ৫ নভেম্বর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর ১১ নভেম্বর ইউজিসি প্রস্তাবিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তিসহ ৫ দাবিতে সচিবালয় ‘ঘোরাও করেন’ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সেদিন শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে তারা সচিবালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। এরপর তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো.

নাহিদ ইসলামের তিনদিন সময় চাইলে সচিবালয়ের সামনের অবস্থান থেকে সরে যান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে পরদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরে সায় দেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এরপর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তিন দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় শিক্ষার্থীরা অনশন শুরু করেন, যার ফলে প্রায় ১৪ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বারবার অনুরোধের পরও অনশন ভাঙেনি শিক্ষার্থীরা। পরদিন সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ার আশ্বাসে টানা ৩৫ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

তবে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে না আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শাট ডাউন কর্মসূচি চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র অবশ ষ ট ক গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ

আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম ওরফে রিয়াদ। আজ বুধবার সন্ধ্যায় শহরের বকচর এলাকার কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ও সমিতির নেতা-কর্মীদের সামনে তিনি পদত্যাগ করেন।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহেদ মোহাম্মদ রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল সহকারে নেতা-কর্মীরা বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে জড়ো হন। এ সময় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে আরিফুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরিফুলকে অপসারণে সময়সীমা বেঁধে দেন তাঁরা। আজ পদত্যাগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে অবস্থান নেন তাঁরা। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে কার্যালয়ের ভেতর থেকে ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি সেখানে হামলার চেষ্টা করলে নেতা-কর্মীরা তা প্রতিহত করেন এবং একজনকে চাকুসহ আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় কয়েকজন পালিয়ে যান। এরপর নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে আরিফুল ইসলাম পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে সভাপতির কাছে জমা দেন। পরে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা সন্ধ্যায় আনন্দ মিছিল বের করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের মুখপাত্র ফাহিম আল-ফাত্তাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আরিফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর একজন দোসর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের চেয়ারে থাকতে পারে না। তাই শিক্ষার্থীরা তাকে পদত্যাগের কর্মসূচি নেয়। আমরা শুনেছি রিয়াদ পদত্যাগ করেছে।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘রিয়াদকে পদত্যাগ করানো আমাদের দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। তবে তিনি আওয়ামী লীগের দোসর। স্বৈরাচারী দোসররা ৫ আগস্টের পর কোনো দপ্তরের চেয়ারে থাকবে না, সেটা আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল।’

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত বলেন, মিনিবাস মালিক সমিতির কার্যালয়ে ছাত্ররা গিয়ে মব সৃষ্টি করে সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় এক যুবক চাকু নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। তখন ছাত্ররা তাঁকে ধরে পুলিশের কাছে তুলে দেন। এরপর সেই যুবককে অস্ত্র আইনের মামলায় বিকেলে আদালতে পাঠালে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হারিয়ে যাওয়া ভাষা সংরক্ষণের তাগিদ পার্বত্য উপদেষ্টার
  • কর অব্যাহতির রাস্তা সামনে কঠিন হবে
  • ৪৩তম বিসিএসে বাদ পড়া প্রার্থীরা গেজেটভুক্ত করার দাবিতে অনশনে
  • পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ
  • দেশের সব পলিটেকনিকে ইনস্টিটিউটে শাটডাউন কর্মসূচি
  • নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করল কারিগরি শিক্ষার্থীরা
  • চট্টগ্রামে হকারদের পুনর্বাসন ও ট্রেড লাইসেন্সের দাবি
  • ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ছাড়া সড়ক সংস্কার সম্ভব নয়’
  • প্রস্তাবিত রাজস্ব নীতি বিভাগে সচিব হিসেবে শুল্ক ও কর কর্মকর্তা পদায়নের দাবি