ব্যাংক খাত পেলেও পুঁজিবাজার পায়নি সংস্কার সহায়তা
Published: 18th, January 2025 GMT
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যাংক খাত সংস্কারের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অনেক ধরনের সহায়তা প্যাকেজ আসছে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারের জন্য কোনো সহায়তা প্যাকেজ আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিজয়নগরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এ সময় সিএমজেএফ সভাপতি ও সারাবাংলা ডটনেটের বিশেষ প্রতিনিধি গোলাম সামদানী ভূইয়া এবং সিএমজেএফ সেক্রেটারি ও আমাদের সময়ের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আবু আলীসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মমিনুল ইসলাম বলেন, “বহুজাতিক সংস্থাগুলো, যেমন: আইএমএফ, এডিবির সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি, যাতে তাদের কাছ থেকে আমরা সাপোর্ট পেতে পারি। এতে আমাদের সংস্কার কাজগুলো একটু ত্বরান্বিত হবে। আমাদের দেশের ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য অনেক ধরনের সহায়তা প্যাকেজ আসছে। এখন পর্যন্ত ক্যাপিটাল মার্কেটের জন্য কোনো সহায়তা প্যাকেজ আসেনি। আমরা সরকারের কাছে সহায়তার দাবি জোড়ালোভাবে তুলে ধরতে চাই। আমাদের সহযোগী যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে, তারা যেন পুঁজিবাজারের দিকে একটু নজর দেন, যাতে আমাদের রিফর্মের কাজগুলো একটু সহজ হয় এবং আমরা যাতে আরো সক্ষম হতে পারি।”
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, “শেয়ারবাজারকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিয়ে যেতে কাজ করা হচ্ছে। তবে, আমাদের শেয়ারবাজারের সমস্যা অনেক গভীরে। তাই, সমাধানে সময় লাগবে। আমাদের শেয়ারবাজার অনেক সংকুচিত। গত ১৫ বছরে শেয়ারবাজার অনেক পিছিয়েছে। একই সময়ে অন্য দেশগুলোর শেয়ারবাজার এগিয়েছে। এ অবস্থায় বর্তমান সময়ে দেশের সব স্টেকহোল্ডার বাংলাদেশের শেয়ারবাজারকে এগিয়ে নিতে ইতিবাচকভাবে কাজ করছে। আমার এরইমধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কাজের ফল পেতে একটু সময় লাগবে। অনেকটা একটি ভবনের ভিত্তি নির্মাণ যেমন বাহিরে থেকে দেখা যায় না, সেরকম। তবে, ভবনের ওপরের নির্মাণকাজটা সবাই দেখতে পায়। কিন্তু, আসল কাজটা করা হয় ওই ভিত্তি নির্মাণের সময়।”
তিনি বলেন, “সবকিছুই বিফলে যাবে, যদি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে না পারি। এজন্য স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে চারটি কাজকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত কিছু ভালো কোম্পানি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। নেগেটিভ ইক্যুইটি সমস্যার সমাধান, ট্যাক্স সুবিধা দেওয়া ও ইনসাইডার ট্রেডিং বন্ধ করার চেষ্টা করছি। এই ট্রেডিংয়ের বিষয়ে আমাদের জিরো টলারেন্স।”
মমিনুল ইসলাম আরো বলেন, “বাংলাদেশে শেয়ারবাজারের যে ভূমিকা থাকার কথা ছিল, তা হয়নি। প্রত্যাশার লেভেল থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। স্টক এক্সচেঞ্জগুলোও অনেক সমস্যায় ছিল। এর মধ্যে অন্যতম নিয়ন্ত্রক সংস্থার অযাচিত হস্তক্ষেপ। এছাড়া, স্টক এক্সচেঞ্জে মানবসম্পদের অদক্ষতা ও প্রযুক্তিগত সমস্যা আছে। আর ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইনেও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।”
ঢাকা/এনটি/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।