পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী হচ্ছে অন্য কৃষকরাও
Published: 19th, January 2025 GMT
পুঁইশাক চাষে ভাগ্য বদলেছে ত্রিশোর্ধ গৃহবধূ সুফিয়া বেগমের। গত ১০ বছর ধরে সুফিয়া গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চুপাইর গ্রামে পুঁইশাক চাষ করছেন। তাকে দেখে এখন আগ্রহী হচ্ছেন ওই গ্রামের আশপাশের কৃষকরাও। সুফিয়ার পুঁইশাক চাষ দেখতে ও তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে দূর দূরান্ত থেকে আসছেন কৃষকেরা।   
পুঁইশাক চাষি সুফিয়া বেগম জানান, স্বামী মোমেন দেওয়ান, দুই ছেলে ও তাকে নিয়ে ৪ সদস্যের সংসার। পরিবার পুরোপুরি কৃষি নির্ভর। স্বামী ট্রাকটর দিয়ে নিজের জমি চাষ করার পর ভাড়ায় অন্যের জমি চাষ করে আয় করে থাকেন। পাশাপাশি স্বামীকে সহযোগীতার মানসিকতা নিয়ে তিনি পুঁইশাক চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
পর পর বেশ কয়েক বছর এই পুঁইশাক চাষে লাভবান হওয়ায় আরো বড় পরিসরে চাষ শুরু করেন। তাকে দেখে গ্রামের ও অন্যান্য এলাকার কৃষকরাও এই পুঁইশাক চাষে আগ্রহী হচ্ছে বলেও জানায় চাষি সুফিয়া।
সুফিয়া বেগম বলেন, “আমার প্রায় ৪০ শতাংশ জমি আছে, সেখানে আমি গত ১০ বছর ধরে এই পুঁইশাকের চাষ করে আসছি। যেখান থেকে আমি প্রতি বছর ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করে থাকি।”
চুপাইর গ্রামের চল্লিশোর্ধ কৃষক মঞ্জুর হোসেন বলেন, “সুফিয়া বেগম পুঁইশাকের চাষ করেছেন। প্রতি বছরই তিনি করে থাকেন এই পুঁইশাকের চাষ। এবারো তার খেতে খুব সুন্দর হয়েছে পুঁইশাক। তিনি এই পুঁইশাক বিক্রি করে খুব লাভবান হয়েছেন। আমার ইচ্ছা আছে আগামী বছর আমিও পুঁইশাকের চাষ করবো।”
ওই গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ আরেক কৃষক মো.                
      
				
কালীগঞ্জ উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান বলেন, “এ উপজেলার কৃষকরা পুঁইশাকের চাষটা ব্যাপকভাবে আয়ত্ত করতে পেরেছে। এই পুঁইশাকের চাষাবাদটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই পুঁইশাক চাষিরা স্থানীয় বাজারগুলোর চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানি করতে পারছে। প্রতিদিন স্থানীয় দোলান বাজার এলাকা থেকে ট্রাক-পিকআপ ভর্তি করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম বলেন, “একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ২০০ গ্রাম শাক-সবজি খাওয়া প্রয়োজন। এর মধ্যে ১০০ গ্রাম শাক ও ১০০ গ্রাম সবজি খেতে হয়। পুঁইশাক একটি জনপ্রিয় শাক। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই শাক-সবজির চাষ হয়ে থাকে। তবে এর মধ্যে জামালপুর ইউনিয়নের কিছু কিছু গ্রাম আছে সেখানে পুঁইশাকের চাষ একটু বেশি হয়।”
তিনি আরো বলেন, “পুঁইশাকের চাষ খুব সহজেই কৃষক করতে পারে। কৃষকদের কেউ কেউ জমিতে বিছিয়ে পুঁইশাকের চাষ করে আবার কেউ মাচা করেও এই শাকের চাষ করে থাকে। পুঁই যেহেতু শাক জাতীয় সবজি, তাই এটা থেকে আমরা বেশি পুষ্টি পাই। তবে এই পুঁইশাক চাষে রোগবালাইয়ের কিছু আক্রমণ হয়ে থাকে। বিশেষ করে পাতায় দাগ রোগটা পুঁইশাকের বেশি দেখা যায়। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে এর জন্য সব সময় পরামর্শ দিয়ে থাকি।”
ঢাকা/রফিক/ইমন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক র চ ষ কর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে মানব পাচারকারী আটক, উদ্ধার ২৫
কক্সবাজারের টেকনাফে গহীন পাহাড়ে যৌথ অভিযান চালিয়ে মানব পাচারের শিকার নারী ও শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনী। এসময় দুইজন মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্য ও পূর্বে আটককৃত পাচারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া সংলগ্ন গহীন পাহাড়ি এলাকায় নারী ও শিশুসহ কয়েকজনকে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে আটকে রাখা হয়েছে।
এই খবরে সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীর একটি যৌথ দল সেখানে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে পাচারের উদ্দেশ্যে বন্দি থাকা ২৫ জন ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও দুইজন পাচারকারীকে আটক করা হয়।
তিনি আরো জানান, উদ্ধারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র বিদেশে উন্নত জীবনযাপন, উচ্চ বেতনের চাকরি এবং অল্প খরচে বিদেশ যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়া পাঠানোর পরিকল্পনা করছিল। তারা মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন উপকূল থেকে নৌযানে করে ভুক্তভোগীদের পাচারের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা জানান, পাচারকারীরা তাদের আটকে রেখে নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করছিল।
উদ্ধারকৃত ব্যক্তি ও আটককৃত পাচারকারীদের বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক।
ঢাকা/তারেকুর/এস