ফতুল্লা থানা বিএনপি এবং  অঙ্গসংগঠনের উদ্দ্যেগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া  ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে ফতুল্লা চৌধুরী বাড়ী পারিবারিক মিলনায়তনের মাঠে এই দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

ফতুল্লা থানা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সাগর সিদ্দিকীর সঞ্চলনায়  দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা  হিসেবে উপস্থিত থেকে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, এ দেশের মাটি মানুষের জন্য স্বাধীনতা ঘোষনা দিয়েছিলেন। উপস্থিত  নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা যারা ভাবছেন বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে তাদের জন্য তারেক রহমান বলেছেন, সামনে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আপনারা ভালো কাজ করুন যাতে নির্বাচনের সময় মানুষ ভোট দিয়ে বিএনপিকে জয়লাভ করায়।

 

তিনি আরো বলেন,সারা দেশের মধ্যে নারায়নগঞ্জ জেলা ব্যবসায়িক,রাজনৈতিক সহ নানা কারনে একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা । এই নারায়নগঞ্জ কে শামীম ওসমান ও তার দোসররা সারা বিশ্বে সন্ত্রাসের জেলা পরিচিত করেছেন। সেখান থেকে উত্তরনের জন্য আমাদের সাংগঠনিক ভাবে কাজ করতে হবে। ব্যক্তিগত নয় সমস্টিগত ভাবে সকলে একসাথে সাংগঠনিক ভাবে এগিয়ে যেতে হবে।

 

সভাপতির বক্তব্যে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষক। তিনি রনাঙ্গনে থেকে যুদ্ধ করেছেন। আজ তার ৮৯ তম জন্মদিন। তারেক রহমান ১০ হাজার মাইল দুরে থেকে ফ্যাসিস্ট সরকার পতনে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। তিনি বর্তমানে দেশের কল্যানে ৩১ দফার কর্মসূচী দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই আমরা তা নিয়ে কাজ করছেন। সাধারন মানুষ কে বুজাতে হবে ৩১ দফা বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ।  সে লক্ষে বিএনপির নেতাকর্মীদের কাজ করার আহবান জানান।

 

এছাড়া অন্যানদের মাঝে বক্তব্য রাখেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, ফতুল্লা থানা ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ সভাপতি হাজী মোঃ শহিদুল্লাহ, মোঃ হানিফ, এনায়েত নগর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী,বক্তাবলী ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নজরুল,ফতুল্লা থানা শ্রমিক দলের সভাপতি শাহ আলম পাটোয়ারি,সদস্য সচিব আল আমিন,নারায়নগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি জুয়েল আরমান।

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছা সেবক দলের আহবায়ক জাকির হোসেন রবিন,ফতুল্লা থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আব্দুল খালেক,টিপু, ফতুল্লা থানা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকি, ফতুল্লা থানা বিএনপির  বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মুসলিম, ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছা সেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক আমিনুল ইসলাম লিটন। 

 

 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র স ক জ কর রহম ন গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

২২ ক্যাডার নিয়ে চলতেন স্বেচ্ছাসেবক দলের জিতু

বগুড়ায় মেয়েকে উত্ত্যক্ত ও বাবাকে খুনে অভিযুক্ত জিতু ইসলাম দলীয় প্রভাবে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। কথায় কথায় যাকে-তাকে অহেতুক মারধর করতেন। চলতেন ২২ জনের ক্যাডার বাহিনী নিয়ে। তারা সবাই নানা অপকর্মে জড়িত এবং একাধিক মামলার আসামি। তাঁর আয় চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা থেকে। গতকাল রোববার এলাকায় গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা যায়, জিতু ফুলবাড়ী কারিগরপাড়ার মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে। ২০০৩ সালে এলাকায় বালু ব্যবসা নিয়ে প্রতিপক্ষ রবিউল ইসলামকে খুন করেন। সেই মামলায় তাঁর ১৪ বছর সাজা হয়। সাজা খেটে তিন বছর আগে বের হন। এর পর এলাকায় গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। তাঁর বাহিনীতে যে ২২ জন সদস্য, তারা কেউ রাজনৈতিক দলের পদ-পদবিতে নেই। হত্যা মামলা ছাড়াও জিতুর বিরুদ্ধে একটি মাদক ও একটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।

ফুলবাড়ীর এক মুদি দোকানি বলেন, জিতু মাঝেমধ্যে তাঁর দোকান থেকে বাকি নিতেন। দু’বছরে বাকির পরিমাণ প্রায় ৪৮ হাজার টাকা হয়। তখন একদিন টাকা চান। এ কারণে জিতু তাঁকে মারধর করে নাকে খত নেন।
বৃন্দাবন এলাকার আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মাঝেমধ্যে জিতু তাঁর বাহিনী নিয়ে হাজির হতেন। মোটা অঙ্কের চাঁদা চাইতেন। চাঁদার কমপক্ষে অর্ধেক দিয়ে তবে নিস্তার পাওয়া যেত। এ ছাড়া ঈদে সেলামির নামে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো তাঁকে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জানান, তাঁর কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা চান জিতু। না দেওয়ায় দোকানে ককটেল হামলা করেন। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় আগস্টের পর জিতু বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এলাকার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা নিয়ে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। ছোট ভাই মিতুলও তাঁর বাহিনীর সদস্য।

জিতু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ১০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির সহসাধারণ সম্পাদকের পদ পান। সন্ত্রাসী হয়ে দলের পদ পাওয়ায় এলাকায় তাঁকে নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পদ পেয়ে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

এলাকার এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘জিতুর কারণে আমরা মুখ খুলতে পারি না। সে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে এলাকা অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের পদ-পদবি পেয়ে ভয়ংকর হয়ে ওঠে। তার নির্যাতনের শিকার অর্ধশতের কম হবে না। তার বখাটেপনার কারণে কেউ মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি হতো না।’
এক বছর আগে থেকে ফুলবাড়ির পাশেই শহরের শিববাটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন জিতু। সেই এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক শাকিল হোসেন। শাকিলের মেয়ে স্থানীয় ভান্ডারী সিটি বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এক মাস আগে ৫২ বছর বয়সী জিতু বিয়ের প্রস্তাব দেন শাকিলের মেয়েকে। বিষয়টি শাকিল জেনে রাগ করেন। জিতুর ওপর চড়াও হন। কিছুতে রাজি না হলে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকেন জিতু। তাঁর মেয়েকেও উত্ত্যক্ত করতেন। এরই এক পর্যায়ে শনিবার বিকেলে শাকিলকে পিটিয়ে খুন করেন জিতু ও তাঁর বাহিনী।
এ হত্যার ঘটনায় জিতুকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে গতকাল রোববার বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা করেছেন শাকিলের স্ত্রী মালেকা খাতুন। পুলিশ শনিবার রাতেই জিতু ও তাঁর সহযোগী মতি এবং বিপ্লবকে আটক করে।

সন্ত্রাসীকে দলের পদ দেওয়ার বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল বলেন, ‘আমি জানতাম না, সে দলের নাম ভাঙিয়ে এসব অপকর্ম করছে। আমরা তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছি।’ শনিবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের সই করা বিবৃতিতে জিতু ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানানো হয়।

বগুড়া সদর থানার ওসি হাসান বাসির বলেন, ‘এ মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফুলবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জোবায়ের খান জানান, গতকাল জিতুসহ তিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম জেলা শাখা। গতকাল বিকেলে শহরের সাতমাথায় সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট দিলরুবা নূরী এতে সভাপতিত্ব করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ